Advertisement
০৭ মে ২০২৪
Cyclone Amphan

সময় শেষে ভিড়, আবেদনে ‘জল’ও

ড্রপবক্সে উপচে পড়েছে আবেদন। সেই আবেদনে ‘জলে’র হদিস পাচ্ছেন ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধিরা।

n সমসীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও আমপানের ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার ভিড় গড়বেতা ১ ব্লক অফিসের সামনে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

n সমসীমা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও আমপানের ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্র জমা দেওয়ার ভিড় গড়বেতা ১ ব্লক অফিসের সামনে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গড়বেতা ও দাসপুর  শেষ আপডেট: ১১ অগস্ট ২০২০ ০১:২১
Share: Save:

আমপানের ক্ষতিপূরণের জন্য দ্বিতীয় দফায় আবেদনপত্র জমা নেওয়া শেষ হয়েছে গত সপ্তাহেই। দু'দিন ধরে জমা নেওয়ার শেষদিন ছিল শুক্রবার। তার পরেও সোমবার ক্ষতিপূরণ পেতে ব্লক অফিসে লাইন পড়ল ক্ষতিগ্রস্তদের। গড়বেতার তিনটি ব্লকেই এই ছবি দেখা গিয়েছে এদিন। গড়বেতা ১ ব্লক অফিসে ভিড় কাটাতে পুলিশকে হস্তক্ষেপ করতে হয়।

ড্রপবক্সে উপচে পড়েছে আবেদন। সেই আবেদনে ‘জলে’র হদিস পাচ্ছেন ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। জমা দেওয়া আবেদনপত্রগুলি এলাকায় এলাকায় গিয়ে যাচাইয়ের কাজ শুরু করেছেন ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধিরা। প্রশাসন সূত্রের খবর, দেখা যাচ্ছে কোথাও শাসকদলের পঞ্চায়েত প্রতিনিধি নিজে আবেদন করেছেন। আবার কোথাও আবেদনকারী পাকাবাড়ির মালিক! ঝড়ে সে বাড়ি ক্ষতি হয়নি এতটুকু। আবার একই বাড়ির প্রত্যেকেই আবেদন করার হদিসও মিলছে যাচাইয়ের কাজে।

সোমবার গড়বেতা ১ ব্লক অফিসের মূল প্রবেশপথ খোলার আগেই প্রচুর মানুষ ভিড় জমান। আমপানের ক্ষতিপূরণে আবেদনপত্র নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে পড়েন কয়েকশো মানুষ। নির্দিষ্ট দিন পেরিয়ে যাওয়ায় এমনিতেই ড্রপ বক্স ছিল না ব্লক অফিসে। ফলে আবেদনপত্র জমা দিতে না পেরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয় সেখানে। বিডিও সেখ ওয়াসিম রেজা, যুগ্ম বিডিও বিশ্বনাথ ধীবর প্রবেশপথের সামনে এসে তাঁদের বোঝান। পরে গড়বেতা থানা থেকে পুলিশ বাহিনী এলে উত্তেজনা বাড়ে। পুলিশের সঙ্গেই তর্কাতর্কিতে জড়িয়ে পড়েন অনেকে। যদিও পরে পুলিশই তাঁদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়।

বিডিও বলেন, ‘‘এদিন অনেকেই এসেছিলেন আবেদনপত্র জমা দিতে। কিন্তু নির্দিষ্ট দিন পেরিয়ে যাওয়ায় তাঁদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয়েছে।’’ সন্ধিপুরের দীপক মণ্ডল, ধাদিকার লক্ষ্মীরানি মণ্ডল আবেদনপত্র জমা দিতে না পেরে হতাশ। তাঁরা বলেন, ‘‘শনিবার লকডাউন ছিল, রবিবার ছুটি, তাই এদিন এসেছি আবেদনপত্র জমা করতে। কিন্তু জমা নেয়নি কেউ।’’ অনিল ঘোষ, বীরেন লোহাররা বলেন, ‘‘ঝড়ে ঘরের ক্ষতি সামান্য হয়েছিল, যদি টাকা পাই সেজন্য ভাবলাম দরখাস্ত একটা জমা দিয়ে আসি।’’ গোয়ালতোড় ও চন্দ্রকোনা রোড ব্লকেও এদিন বহু মানুষ এসে ব্লক অফিসে লাইন দেন। আবেদন জমা দিতে না পেরে ক্ষোভ দেখান অনেকে। দীর্ঘক্ষণ পরে তাঁদের বুঝিয়ে ফেরত পাঠানো হয় বলে দুটি ব্লক প্রশাসন সূত্রেই জানা গিয়েছে।

আমপানের ক্ষতিপূরণের আবেদনপত্রগুলি যাচাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। গড়বেতার তিনটি ব্লকের প্রতিনিধিরা পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে যাচাই করছেন সেগুলি। যাচাইয়েই মিলছে ‘জলে’র হদিস। গড়বেতা ১ ব্লকে একটি পঞ্চায়েতের সদস্য আবেদনপত্র ড্রপ বক্সে জমা দিয়েছিলেন। ব্লক প্রশাসনের প্রতিনিধিরা ওই পঞ্চায়েত সদস্যের বাড়িতে গিয়ে দেখেন ঝড়ে ক্ষতির চিহ্নমাত্র নেই। জিজ্ঞাসা করতেই প্রশাসনের প্রতিনিধিদের ওই পঞ্চায়েত সদস্য বলেন তিনি নাকি আবেদন করেননি। গোয়ালতোড়, চন্দ্রকোনা রোড ব্লকে একই পরিবারের প্রায় সবাই আবেদনপত্র জমা দিয়েছেন ড্রপ বক্সে। যাচাইয়ে গিয়ে প্রশাসনের প্রতিনিধিদের শুনতে হচ্ছে নানা অজুহাত। কেউ পাকাবাড়ির মালিক, তো কেউ ড্রপ বক্সেও জমা দিয়েছেন, আবার অনলাইনেও জমা দিয়েছেন। আবেদনপত্র পূরণেও অজস্র ভুল।

এ দিন দাসপুর ১ ব্লক অফিসেও আমপান ক্ষতিপূরণের আবেদন দেওয়ার ভিড় হয়। এক সময় শতাধিক নির্দিষ্ট দিন পেরিয়ে যাওয়ায় তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বিডিও বিকাশ নস্কর বলেন, “ব্লকে অনেকে এসেছিলেন। তবে নতুন করে কোনও আবেদন জমা নেওয়া হয়নি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyclone Amphan Compensation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE