Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Encroachment

জমি ‘দখল’, ঝুমুর শিল্পীকে হেনস্থার নালিশ 

জমি মাপতে বাধা দেন দখলদারেরা। বাধে বচসা। অভিযোগ, টানা হ্যাঁচড়া শুরু করেন জমি মাফিয়াদের লোকজন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

 এই জমিই জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র।

এই জমিই জবরদখলের অভিযোগ উঠেছে। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০২০ ০০:৫৫
Share: Save:

পারিবারিক জমির বেশিরভাগটাই বেদখল হয়ে গিয়েছে। অবশিষ্ট জমির মাপজোক করতে গিয়ে নিগৃহীত হলেন ঝাড়গ্রামের বিশিষ্ট ঝুমুরসঙ্গীত শিল্পী ইন্দ্রাণী মাহাতো।

গত সোমবার সকালে জমি মাফিয়াদের লোকজন ইন্দ্রাণী ও তাঁর মাকে হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ। ঝাড়গ্রাম শহরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের সত্যবানপল্লিতে ইন্দ্রাণীর মা শান্তিলতা মাহাতোর নামে ২১ ডেসিমেল রায়তি জমি ছিল। ওই জমির বেশিরভাগই জবরদখল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। অবশিষ্ট জমিতে সম্প্রতি কেউ বাড়ি তৈরি করছেন বলে খবর পান শান্তিলতা। আমিন নিয়ে সোমবার মাপজোক করতে যান তিনি। সঙ্গে ছিলেন ইন্দ্রাণী-সহ শান্তিলতার চার মেয়ে। জমি মাপতে বাধা দেন দখলদারেরা। বাধে বচসা। শান্তিলতার অভিযোগ, তাঁকে ও তাঁর বড় মেয়েকে টানা হ্যাঁচড়া শুরু করেন জমি মাফিয়াদের লোকজন। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সোমবার সন্ধ্যায় ঝাড়গ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেন শান্তিলতা। মঙ্গলবার গোটা ঘটনাটি জানিয়ে মহকুমাশাসককেও অভিযোগপত্র দিয়েছেন তিনি। ইন্দ্রাণী জানাচ্ছেন, ভূমি দফতরের রেকর্ডে ওই জমি তাঁর মায়ের নামে রয়েছে। কিন্তু প্রতি বছর একটু একটু করে জমি দখল হয়ে যাওয়ায় শান্তিলতা একাধিকবার পুরসভায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। কিন্তু জমি দখল ঠেকানো যায়নি। ঝাড়গ্রাম জেলা হওয়ার পরে জমির অর্ধেকের বেশি দখল হয়ে বাড়িঘর হয়ে গিয়েছে। শান্তিলতা বলেন, ‘‘জমি চক্রের লোকজনদের সঙ্গে তো পেরে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না। তাই যতটুকু জমি রয়েছে, সেটুকুর সীমা নির্ধারণ করে বিক্রি করে দেব ঠিক করেছি। সম্প্রতি খবর পাই, ওই অবশিষ্ট জমিতেও কেউ পাকা বাড়ির ভিত কেটে কলম তুলছে। তাই সোমবার আমিন নিয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু মহিলাদের সামনে এগিয়ে দিয়ে আমাদের চরম হেনস্থা করা হয়।’’ ইন্দ্রাণী বলছেন, ‘‘আমাদের হকের রায়তি জমি দখল হয়ে গেল। অথচ আমাদেরই উল্টে হেনস্থার মুখে পড়তে হচ্ছে।’’

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। আর জেলা পরিষদের ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মামনি মুর্মু বলেন, ‘‘ভূমি দফতরকে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে বলব।’’

ওই জমিতে বাড়ি করে যাঁরা বাস করছেন তাঁদের অন্যতম দীপালি মাহাতোর দাবি, জমিটি খাস বলেই তাঁরা জানেন। দীপালিদের নামে দলিলও নেই। তবে দীপালি বলেন, ‘‘আমি ৩৫ বছর বাস করছি। আমরা মোটেই জমি মাফিয়ার লোকজন নই। এখানে আমাদের মতো অনেকেই খাস জমিতে বাস করছেন। আমার আগে মাটির বাড়ি ছিল। এখন পাকা বাড়ি করছি। হঠাৎ করে শান্তিলতা ও তাঁর মেয়েরা এসে ঝামেলা শুরু করল।’’ দীপালির অভিযোগ, ‘‘ইন্দ্রাণীরাই আমাকে আর আমার দুই মেয়েকে মারধর করেছে। দীপালি অবশ্য থানায় লিখিত অভিযোগ করেননি।

ঝাড়গ্রাম জেলা হওয়ার পরে জমি মাফিয়ারা সক্রিয় হয়েছে বলে অভিযোগ। বেশ কিছু রায়তি ও সরকারি জমি বেদখল হয়ে গিয়েছে। একলব্য সরণীর পাশে বিস্তীর্ণ সরকারি জমিও দখল হয়ে সেখানে বাড়ি উঠেছে। অভিযোগ, জমি মাফিয়ারা টাকার বিনিময়ে রায়তি ও খাস জমিতে লোকজনকে বসিয়ে দিচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Encroachment Jhargram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE