Advertisement
০৭ মে ২০২৪

কেশপুরে বেহাত শাসকের কার্যালয়

কিন্তু কেন তৃণমূলের কার্যালয় দখল? সদুত্তর এড়িয়ে বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা এতদিন অনেক অত্যাচার করেছে। এ বার মানুষ তো ফোঁস করবেই!’’

তৃণমূল কার্যালয়ে বিজেপির পতাকা। কেশপুরে। নিজস্ব চিত্র

তৃণমূল কার্যালয়ে বিজেপির পতাকা। কেশপুরে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কেশপুর শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০১৯ ১০:০৫
Share: Save:

ভোটের ফলপ্রকাশের পরদিন ‘দখল’ হল তৃণমূল কার্যালয়। খাস শাসকের ‘গড়’ কেশপুরেই। পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্যত্রও কয়েকটি তৃণমূল কার্যালয় ‘দখল’ করে দলের পতাকা ঝুলিয়েছেন বিজেপির কর্মীরা। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অজিত মাইতি মানছেন, ‘‘সিপিএমের লোকেরা বিজেপিতে গিয়ে আমাদের কিছু কার্যালয়ে হাত দেওয়ার চেষ্টা করেছে। আমরা কিন্তু ছাড়ব না।’’

শুক্রবার কেশপুরে তৃণমূলের একাধিক কার্যালয় ‘দখল’ করেছে বিজেপির লোকেরা। সব দেখেও গুটিয়ে থেকেছে তৃণমূল- শিবির। তারা ‘প্রতিরোধের’ রাস্তায় যায়নি। অথচ, এই কেশপুরে ভোটের আগে বিজেপির কোনও কার্যালয়ই ছিল না। এমনকি, ছিল না কোনও পতাকাও। অথচ এ দিন দলের পতাকা তুলতে শুরু করেছেন বিজেপির কর্মীরা। ১৫টি অঞ্চলের মধ্যে ৯টি অঞ্চলে এদিনই বিজেপির পতাকা তোলা হয়েছে। এমনকি, দেবের দেশের বাড়ি যেখানে সেই মহিষদাতেও পতাকা তোলা হয়েছে। এই মহিষদা আগে বরাবরই ছিল সিপিএমের গড়।

কিন্তু কেন তৃণমূলের কার্যালয় দখল? সদুত্তর এড়িয়ে বিজেপির ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার সভানেত্রী অন্তরা ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘তৃণমূলের লোকেরা এতদিন অনেক অত্যাচার করেছে। এ বার মানুষ তো ফোঁস করবেই!’’ অন্তরার খোঁচা, ‘‘তৃণমূলের অনেক কার্যালয়ে তো বোমা- বন্দুক মজুত থাকে। তাই হয়তো মানুষ কিছু কার্যালয় বন্ধ করে দিয়েছেন। এলাকায় শান্তি বজায় রাখতেই!’’ এদিন সকালে কেশপুরের জগন্নাথপুরে তৃণমূলের অঞ্চল কার্যালয়ে গিয়ে দলের পতাকা ঝুলিয়ে দেন বিজেপির কিছু কর্মী। দিনভর বিজেপির পতাকা ঝুলেই ছিল। কেউ খোলেনি। স্থানীয় তৃণমূল নেতারাও কার্যালয়ের পথ মাড়াননি। কেশপুরের শীর্ষাতেও একাধিক তৃণমূল কার্যালয় ‘দখল’ করেছে বিজেপির লোকেরা।

তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি সঞ্জয় পানের স্বীকারোক্তি, ‘‘শীর্ষায় আমাদের দু’-তিনটে কার্যালয় বিজেপির লোকেরা দখল করেছে।’’ জগন্নাথপুরে অঞ্চল কার্যালয়ও তো ‘বেহাত’ হয়েছে? সঞ্জয় বলেন, ‘‘জগন্নাথপুরের খবরটা আমার কাছে নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি মানছেন, ‘‘কার্যালয় দখল হলেও আমরা এখনই প্রতিরোধের রাস্তায় যাচ্ছি না। পরিস্থিতির দিকে নজর রেখেছি। ঠিক সময়ে ঠিক ব্যবস্থাই নেওয়া হবে।’’ এ দিন মেদিনীপুর গ্রামীণেও গোবিন্দপুর, রামনগর সহ একাধিক এলাকায় তৃণমূলের কার্যালয় ‘দখল’ করেছে বিজেপির লোকেরা। মেদিনীপুর গ্রামীণের এই এলাকাগুলো খড়্গপুর (গ্রামীণ) বিধানসভার অন্তর্গত। মেদিনীপুর লোকসভার মধ্যে একমাত্র এই বিধানসভাতেই ‘এগিয়ে’ রয়েছে তৃণমূল। সেখানেও সঙ্কটে শাসক দল। খড়্গপুরের (গ্রামীণ) বিধায়ক তথা দলের জেলা চেয়ারম্যান দীনেন রায়ও বলেন, ‘‘এতদিন যারা সিপিএম করেছে, এখন তারাই বিজেপি হয়ে দলীয় কার্যালয়গুলো দখল করতে শুরু করেছে।’’

এ দিন কেশপুরের আনন্দপুরের তাতারপুরে তৃণমূলের স্থানীয় কার্যালয়েও তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে বিজেপির লোকেরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE