Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
সংক্রমিতদের অনেকে ঝুঁকিপূর্ণ
Coronavirus

পুজোর মুখে নয়া উদ্বেগ সিটি ভ্যালু 

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সিটি ভ্যালুর পরিমাপকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২০ ০৫:২৫
Share: Save:

পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্তদের অনেকেরই সিটি ভ্যালু কম। বিষয়টি নিয়ে চিন্তিত জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিকদের একাংশও। সিটি ভ্যালু ২০-র নীচে থাকলে আশঙ্কা থাকে। এই ধরনের রোগীদের থেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কাও বেশি। দেখা যাচ্ছে, জেলায় করোনা আক্রান্তদের মধ্যে গড়ে ২৮-৩০ শতাংশের সিটি ভ্যালু ২০-র কম।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘কোভিড পরীক্ষার রিপোর্টে উল্লেখিত সিটি ভ্যালুর দিকে নজর রাখা হচ্ছে। সব দিক নজরে রেখেই যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’ জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সৌম্যশঙ্কর সারেঙ্গীও বলেন, ‘‘অহেতুক উদ্বেগের কিছু নেই। সব দিকেই নজর রাখা হয়েছে।’’

সিটি ভ্যালু হল ‘সাইকেল থ্রেসহোল্ড ভ্যালু’। জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, এর মাধ্যমে করোনা আক্রান্তের শরীরের ভাইরাল লোড অর্থাৎ শরীরের ভাইরাসের উপস্থিতির মাত্রা পরিমাপ করা যায়। আরটিপিসিআর করোনার নিশ্চিত পরীক্ষা। এই পদ্ধতিতে পরীক্ষা হলে রিপোর্টে ওই পরিমাপের উল্লেখ থাকে। জানা যাচ্ছে, এতদিন এর উপর তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে দেওয়া হচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে সিটি ভ্যালু দেখেই সংক্রমিতকে হাসপাতালে ভর্তি নেওয়া হচ্ছে।

জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, সিটি ভ্যালুর পরিমাপকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। ২১ থেকে ৪০-এর মধ্যে থাকলে ঝুঁকি কম। ২০-র নীচে থাকলে ঝুঁকিপূর্ণ। ওই সূত্র জানাচ্ছে, ৬ থেকে ১০-এর মধ্যে সিটি ভ্যালু থাকলে তা সবচেয়ে খারাপ। সম্প্রতি জেলা সফরে এসে এ নিয়ে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। প্রশাসনিক বৈঠকে জেলাশাসক, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘সিটি ভ্যালু কি আপনারা লক্ষ্য রাখেন? সোয়াব টেস্ট করলে একটা প্যারামিটার আসে। সেই প্যারামিটারে কোন কেসটা রোগ বেশি ছড়াবে বা কার সমস্যা হতে পারে আর কোনটা সমস্যার নয় তা বোঝা যায়।’’

পর্যালোচনায় দেখা যাচ্ছে, পশ্চিম মেদিনীপুরে করোনা আক্রান্তদের মধ্যে ২৮-৩০ শতাংশ রোগীরই সিটি ভ্যালু ২০-র কম। বিষয়টি উদ্বেগের ঠেকছে অনেকের কাছে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, ১১ অক্টোবর আরটিপিসিআরে ১১৪ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এরমধ্যে ৩১ জনের সিটি ভ্যালু ২০- এর কম। অর্থাৎ, ২৭ শতাংশের সিটি ভ্যালু কম। ১২ অক্টোবর আরটিপিসিআরে ৯৫ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এর মধ্যে ২৩ জনের সিটি ভ্যালু ২০-এর কম। অর্থাৎ, ২৪ শতাংশের সিটি ভ্যালু কম। অন্যদিকে, ১৫ অক্টোবর আরটিপিসিআরে ১১৬ জনের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। এরমধ্যে ৩৮ জনের সিটি ভ্যালু ২০-এর কম। অর্থাৎ, ৩২ শতাংশের সিটি ভ্যালু কম।

দেখা যাচ্ছে, যাঁদের সিটি ভ্যালু ২০-র কম, তাঁদের অনেকে আবার হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। পশ্চিম মেদিনীপুরে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা এখন ১,২৯৯। এর মধ্যে করোনা হাসপাতাল এবং সেফ হোমে চিকিৎসাধীন ২৩৯ জন। অর্থাৎ, ১৮ শতাংশ রোগী হাসপাতাল এবং সেফ হোমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ঝুঁকিপূর্ণ বাকি প্রায় ১০ শতাংশ রোগী হোম আইসোলেশনে রয়েছেন। এঁদের থেকে রোগ ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘যাঁদের সিটি ভ্যালু ২০-র কম তাঁরা সকলেই সমান ঝুঁকিপূর্ণ নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE