হেনস্থা: পুলিশকে মার। খড়্গপুরে। নিজস্ব চিত্র
কোনও রাখঢাক নয়। সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভায় রাজনৈতিক নজরদারির কথা সরাসরি স্বীকার করে নিল তৃণমূল।
বিজেপি’র অভিযোগ, শুধু নজরদারি চালিয়েই ক্ষান্ত হয়নি শাসক দল। তৃণমূলের ‘চাপে’ পুলিশ দলীয় সমর্থক বোঝাই বাস আটকে দিয়েছে বলে অভিযোগ তুললেন রেল শহরের এক বিজেপির কাউন্সিলর। এই ঘটনায় আধিকারিক-সহ ১০ জন পুলিশকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকের বিরুদ্ধে।
রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছেন, সভা, সমাবেশে নজরদারির দস্তুর এ রাজ্যের রাজনীতিতে নতুন নয়। কিন্তু যা নতুন তা হল, নজরদারির কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করে নেওয়া। গত কয়েকদিন ধরেই সবংয়ে বিভিন্ন জায়গায় ২১ জুলাইয়ের প্রস্তুতিতে গিয়ে তৃণমূল সাংসদ মানস ভুঁইয়া নির্দেশ দিয়েছিলেন, কে কোথায় যাচ্ছেন তা নজর রাখুন। প্রয়োজনে ছবি তুলে রাখুন। এ দিন তৃণমূলের তরফে খড়্গপুরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে চলেছে নজরদারি। দেখা হয়েছে, কে মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন। খড়্গপুরে তৃণমূলের শহর সভাপতি রবিশঙ্কর পাণ্ডে বলেন, “আমরা প্রতিটি এলাকায় কাউন্সিলর ও দলের নেতৃত্বকে খোঁজখবর নিতে বলেছি যে, কারা বিজেপির সভায় যাচ্ছে। সেই অনুযায়ী সকলে নজর রাখছে। যে ওয়ার্ড থেকে বেশি সংখ্যক বিজেপি কর্মী যাবে সেখানে আমরা সংগঠনের শক্তিবৃদ্ধিতে নজর দেব।” তৃণমূলের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “এই শহরে আমাদের কর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ডে নজর রেখেছিল যে, কারা নরেন্দ্র মোদীর সভায় যাচ্ছে। কিন্তু দেখা গিয়েছে ওদের (বিজেপি) বাস ফাঁকা গিয়েছে।” তৃণমূলের অভিযোগ, কয়েকজনকে জোর করে সভায় নিয়ে গিয়েছিল বিজেপি।
বিজেপির অবশ্য দাবি, খড়্গপুর, কেশিয়াড়ি, সবংয়ের বিভিন্ন এলাকা থেকে বহু বিজেপি কর্মী-সমর্থক স্বেচ্ছায় প্রধানমন্ত্রীর সভায় যোগ দিয়েছিলেন। এমনকী, দলীয় সমর্থকদের বাস দুই শহরের সংযোগস্থল চৌরঙ্গিতে পুলিশ আটকে দিয়েছিল বলে অভিযোগ বিজেপির। কয়েক ঘণ্টা আটকে থাকার পরই শুরু হয় হাতাহাতি। পুলিশকর্মীদের রাস্তায় ফেলে বিজেপি কর্মীরা মারধর করে বলে অভিযোগ। ভাঙচুর হয় পুলিশের গাড়ি। পুলিশের দাবি, খড়্গপুর গ্রামীণ থানার ওসি বিশ্বরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ প্রায় ৮ জন পুলিশকর্মী জখম হয়। তাঁদের খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বিজেপি নেত্রী তথা খড়্গপুর পুরসভার কাউন্সিলর অনুশ্রী বেহেরা বলেন, “আমার এলাকা থেকে আসা সমর্থক বোঝাই দু’টি বাসকে চৌরঙ্গিতে পুলিশ ইচ্ছাকৃত আটকে দেয়।” পুলিশকর্মীদের মারধর প্রসঙ্গে অনুশ্রীর বক্তব্য, ‘‘আমি একজনের গাড়িতে কোনওরকমে মেদিনীপুরে এসেছি। চৌরঙ্গিতে পরে কী হয়েছে জানি না।” এ বিষয়ে বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তুষার মুখোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘পুলিশকে যদি কেউ মেরে থাকে নিশ্চয়ই কোনও কারণে মেরেছে। খোঁজ নিচ্ছি।’’ জেলার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া জানিয়েছেন, চৌরঙ্গির ঘটনায় মামলা রুজু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy