আইআইটিতে জমেছে আসর। —নিজস্ব চিত্র।
আইআইটি চত্বরে গোলাপি পোশাকে জড়ো হয়েছেন একদল যুবক-যুবতী। তাঁদেরই একজন হঠাৎ বাজিয়ে উঠলেন ঢোল। সেই বাদ্যির সঙ্গেই গান ধরলেন বাকিরা। গানে-কথায়-নাটকে তুলে ধরলেন যৌন নির্যাতনের যন্ত্রণা। ফুটে উঠল সামাজিক বঞ্চনাও।
যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় খড়্গপুর শহরে এই প্রচার চলল। দিল্লির একটি স্বেচ্ছাসেবী দলের ‘রাষ্ট্রীয় গরিমা যাত্রা’ পৌঁছেছে রেলশহরে। এই উদ্যোগ তারই অঙ্গ। দলে রয়েছেন ১১০ জন। তাঁদের ৬৫ জনই নির্যাতিতা। আইআইটি চত্বরের পরে ইন্দাতেও একই কর্মসূচি হয়।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্য মধ্যপ্রদেশের উজ্জ্বয়নীর এক মহিলা এ দিন বলেন, “চার বছর আগে রান্নার কাজের জন্য এক যুবক আমাকে তাঁর ফ্ল্যাটে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে আমাকে কয়েকদিন ধরে ধর্ষণ করেছিল। পরে বিক্রি করা দেওয়া হয়েছিল। ছ’মাস ধরে যৌন নির্যাতনের সিকার হওয়ার পরে পালিয়ে এসেছিলাম। লড়াই করে মামলা দায়ের করি। কিন্তু আমার পরিবার আর আমাকে গ্রহণ করেনি।” ওই মহিলা এ দিন যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া সমাজের শিশু, মহিলা, ও পুরুষকে লজ্জায় চুপ করে বসে না থেকে গর্জে ওঠার পরামর্শ দিলেন।
এ দিনের গরিমা যাত্রায় যোগ দিয়েছিলেন শহরের শিশু যৌন নিগ্রহ নিয়ে কাজ করা সমাজকর্মী শিক্ষক প্রসেনজিৎ দে। তিনি বলেন, “সত্যিই ভাল উদ্যোগ। যৌন হেনস্থার শিকার হওয়া মহিলারা লজ্জা কাটিয়ে বেরিয়ে এসে প্রতিবাদে সামিল হলে একদিন যৌন নির্যাতন নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে।”
খড়্গপুরের পরে দিল্লির ওই দলটি যাবে কলকাতায়। গত ২০ ডিসেম্বর মুম্বই থেকে শুরু হওয়া এই গরিমা যাত্রা গোয়া, তামিলনাডু, কর্নাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গানা, কেরল, ছত্তিসগঢ়, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা ঘুরেছে। দলের লক্ষ্য দেশের প্রতিটি রাজ্যে গিয়ে যৌন নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষকে সতর্ক করার পাশাপাশি জনমত গড়ে তোলা।
গরিমা যাত্রার আহ্বায়ক জয়পাল দেওরা বলেন, “সমাজে যৌন নির্যাতিতাদের দোষারোপ করা হয়। এতে যারা নির্যাতন করে, তারা প্রশ্রয় পায়। সমাজকে জাগ্রত করতেই এই যাত্রা শুরু হয়েছে। যাত্রার আগে আমাদের সঙ্গে ১০ হাজার নির্যাতিতা যুক্ত ছিলেন। ২২ জানুয়ারি দিল্লিতে যাত্রা শেষে ৫০ হাজার নির্যাতিতাকে আমাদের সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy