নিহত মায়ারানি পাল।
ফের ভোজালির কোপে খুন। ঘটনাস্থল সেই জিয়াগঞ্জ।
স্ত্রীকে ভোজালির কোপ মেরে খুনের অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। শুক্রবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে জিয়াগঞ্জের বাগডহর শিবির গ্রামে। মৃত মহিলার নাম মায়ারানি মণ্ডল (৪৬)। ঘটনার পরেই স্বামী তেনু মণ্ডল এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
এর আগে গত ৮ অক্টোবর দশমীর সকালে জিয়াগঞ্জের লেবুবাগানে একই পরিবারের তিন জন খুন হন—বন্ধুপ্রকাশ পাল ও তাঁর স্ত্রী বিউটি এবং তাঁদের ছ’বছরের ছেলে অঙ্গন। ওই ঘটনার সাত দিন পরে সাগরদিঘির সাহাপুরের উৎপল বেহেরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বর্তমানে বিচারাধীন বন্দি হিসেবে উৎপল লালবাগ কেন্দ্রীয় উপসংশোধনাগারে রয়েছে। ওই ঘটনা শুধু মুর্শিদাবাদে নয়, রাজ্যেও তোলপাড় হয়েছিল। সেই জিয়াগঞ্জে ফের ভোজালির কোপে স্ত্রীকে খুনের অভিযোগ ওঠায় জিয়াগঞ্জের এক প্রবীণ বলছেন, ‘‘একের পর এক ঘটনা যেন জিয়াগঞ্জের পিছু ছাড়ছে না।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২৫ বছর আগে নির্মলচরের মদনঘাটের বাসিন্দা মায়ারানি মণ্ডলের সঙ্গে পেশায় পাঁপড় ও ঝুরি ব্যবসায়ী জিয়াগঞ্জের তেনু মণ্ডলের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির তিন ছেলেমেয়ে রয়েছে। যার মধ্যে ২০ বছরের মেয়ের ছ’মাস আগে বিয়ে হয়ে গিয়েছে। দুই ছেলে আমাইপাড়া উদ্বাস্তু বিদ্যাপীঠের ছাত্র।
মায়ারানির বড় ছেলে গোপাল মণ্ডলের কথায়, ‘‘মদের নেশা করতে গিয়ে বাবা ব্যবসা ছেড়ে দেয়। সংসার চালাতে ব্যবসার হাল ধরে মা। এর পরে প্রতি দিন রাতে মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরে এসে মাকে মারধর করত। প্রতিবাদ জানালে বাড়িতে আরও বেশি করে অশান্তি করত বাবা।’’
এ দিন ঘটনার সময়ে গোপাল স্কুলে ছিল এবং তার ভাই রাজেশ গিয়েছিল নির্মলচরে মামার বাড়িতে। বাড়িতে কেউ না থাকায় এ দিন দুপুরে ফের মদ খেয়ে এসে মায়ারানিকে মারধর শুরু করেন তেনু।
দু’জনের মধ্যে অশান্তি চরমে উঠলে ঘর থেকে ভোজালি বের করে নিয়ে এসে মায়ারানির পেটে কোপ মারে তেনু। তার পরে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায় সে। পরে প্রতিবেশীরা বাড়ির উঠোনে মায়ারানিকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান।
খবর পেয়ে জিয়াগঞ্জ থানার পুলিশ এসে মায়ারনিকে উদ্ধার করে জিয়াগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাঁকে লালবাগ মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত পাঠানো হয়। লালবাগ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মায়ারানিকে মৃত বলে ঘোষনা করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy