Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
দিল্লি যোগে করোনা
Coronavirus in West Bengal

অসুস্থতার অজুহাতেই অ্যাম্বুল্যান্স

স্বাস্থ্য দফতরের খবর, আক্রান্তদের মধ্যে এক জনের ডায়াবেটিস রয়েছে। তাঁকে নিয়ম করে ইনসুলিন নিতে হয়।

সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ জঙ্গিপুরে। নিজস্ব চিত্র

সুপারকে ঘিরে বিক্ষোভ জঙ্গিপুরে। নিজস্ব চিত্র

বিমান হাজরা
সুতি শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২০ ০৫:০০
Share: Save:

সুতির খানাবাড়ি এলাকার করোনা আক্রান্ত তিন জনেরই দিল্লি-যোগের হদিশ পেল স্বাস্থ্য দফতর।

লকডাউন ঘোষণা হওয়ার আগেই বিড়ি শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ওই তিন জন দিল্লি গিয়েছিলেন। কিন্তু ফেরার রাস্তা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় গত দেড় মাস ধরে দিল্লির বিভিন্ন ঠিকানায় ছিলেন তাঁরা। শেষতক মরিয়া হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ার দোহাই দিয়ে ৮৬ হাজার টাকায় একটি বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করে বুধবার সুতিতে ফেরেন তাঁরা। স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘হয় দিল্লিতে কিংবা দিল্লির ওই অ্যাম্বুল্যান্স থেকেই তাঁদের করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঘটেছে বলে মনে হচ্ছে।’’

করোনার ছায়া ছড়িয়ে পড়তেই বিড়ি শিল্পতালুকের পথঘাট সোমবার সকাল থেকেই সুনসান হয়ে পড়ে। রাস্তা থেকে উবে যায় যানবাহন। করোনা আতঙ্কে দুয়ার দিয়ে ছিল সুতির শহরাঞ্চল কিংবা আশপাশের গাঁ-গঞ্জ। সকালেই বাঁশের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলে কনটেনমেন্ট এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করে সিল করে দেওয়া হয় খানাবাডির গলি পথ। প্রহরায় বসে পুলিশ। অরঙ্গাবাদের শিল্পাঞ্চল জুড়ে দিনভর ছিল পুলিশি টহল। বন্ধ হয়ে যায় দোকানপাটও। জঙ্গিপুরের এসডিপিও প্রসেনজিৎত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ দিল্লি থেকে ফিরে আক্রান্তেরা কোথায় গিয়েছিলেন, কারা তাঁদের সংস্পর্শে এসেছেন তার খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে।’’

স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে তিন জনের দেহে করোনার সংক্রমণ মিলেছে, তাঁদের দু’জন পিতা (৬৫) পুত্র (৩০)। তাঁদের রবিবারই বহরমপুরে আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। তাঁদের পরিবারের ৮ জনকে আপাতত হোম কোয়রান্টিনে রাখা হয়েছে। আক্রান্ত অন্য জন সুতির পড়শি গ্রাম মহেশাইল গ্রামের বাসিন্দা। বছর আটান্নর ওই ব্যক্তির পরিবার সাগরদিঘির গ্রামে গিয়েছে। খোঁজ শুরু হয়েছে তাঁদেরও।

পুলিশ জানায়, আক্রান্তেরা তিন জনই বিড়ির ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। অরঙ্গাবাদ ২ পঞ্চায়েত প্রধান এলিমা হোসেন বলেন, ‘‘ওঁরা দিল্লি থেকে ফেরা মাত্র তাঁদের পুলিশের সাহায্য নিয়ে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। না হলে হয়ত সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ত।’’

স্বাস্থ্য দফতরের খবর, আক্রান্তদের মধ্যে এক জনের ডায়াবেটিস রয়েছে। তাঁকে নিয়ম করে ইনসুলিন নিতে হয়। মোমিনপাড়ার এক গ্রামীণ চিকিৎসক জানান, দু’দিন আগেও তাঁকে ইনসুলিনের ই়্জেকশন দিতে গিয়েছিলেন তিনি। তখনও তাঁর করোনা-উপসর্গ ছিল না। তবে তার পর থেকেই ওই চিকিৎসকের চেম্বার বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আক্রান্তদের তৃতীয় জন মহেশাইল এলাকার বাসিন্দা। মহেশাইল ১ পঞ্চায়েত প্রধান ওয়াজেদ আলি বলছেন, “এ ভাবে সংক্রমণ ধরা পড়ায় ইদের আগে গোটা বিড়ি শিল্পাঞ্চল জুড়ে আতঙ্কের পাশাপাশি আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus in West Bengal Suti Health Delhi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE