Advertisement
০৭ মে ২০২৪
লকডাউনের হাসপাতাল
CORONA VIRUS

গৌরীপুরের স্বাস্থ্যকেন্দ্র তেমন ‘গৌরী’ নয়

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চার দশক পুরোনো একটা ভাঙাচোরা ভবনে কেবল আউটডোরে চিকিৎসা হয়। মাতৃসদনের ভবনটিকে কোয়রান্টাইন কেন্দ্র করার প্রস্তাবও পাঠিয়েছিলেন সাগরদিঘির বিডিও।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

বিমান হাজরা
সাগরদিঘি শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২০ ০১:১১
Share: Save:

করোনা ভাইরাস আতঙ্কেও কপাল ফেরেনি সাগরদিঘির প্রত্যন্ত গ্রামের সিংহেশ্বরী গৌরীপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশে মাতৃসদনের ঝাঁ চকচকে ভবন তালাবন্ধ। তার পাশে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চার দশক পুরোনো একটা ভাঙাচোরা ভবনে কেবল আউটডোরে চিকিৎসা হয়। মাতৃসদনের ভবনটিকে কোয়রান্টাইন কেন্দ্র করার প্রস্তাবও পাঠিয়েছিলেন সাগরদিঘির বিডিও। দাবি, তারও সদুত্তর মেলেনি স্বাস্থ্য দফতরের কাছ থেকে।

মাস খানেক হল স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসেছেন চিকিৎসক তৌসিফউদ্দিন। তিনি বলছেন, “বহির্বিভাগে রোগীর সংখ্যা অর্ধেকে নেমে এসেছে। যে ক’জন আসছেন, বেশিরভাগের জ্বর, কাশি। তেমন আশঙ্কার কিছু মেলেনি ঠিকই, কিন্তু এই এলাকায় ভিন্ রাজ্য থেকে ফিরে আসা শ্রমিকের সংখ্যা অত্যন্ত বেশি। তাঁদের ঘরে থাকার পরামর্শ দিলেও তা যে সব সময় মানা হচ্ছে তা তো নয়। তাই করোনা আতঙ্ক তো আছেই ।”

স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশেই থাকেন পাটকেলডাঙার উপপ্রধান তৃণমূলের আব্দুল আজিজ। বলছেন, “সাগরদিঘি থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার দূরে তিন তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েত রয়েছে এই এলাকায়। বারবার বলেও স্বাস্থ্যকেন্দ্র চালু করা যায়নি। বিডিও ও ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কাছে প্রস্তাব দিয়েছিলাম। গৌরীপুরে অন্তত সাময়িক ভাবে হলেও একটা চিকিৎসাকেন্দ্র চালু করা হোক। একটা কোয়রান্টাইন কেন্দ্র খোলা যেতেই পারত। লকডাউনের মধ্যেও শ্রমিকেরা আসছেন প্রতিদিন গ্রামে। তাঁদের পরীক্ষাগুলো হোক বলে দাবি জানালেও তা করা হয়নি।” তাই, ভিন্ রাজ্য থেকে আসা শ’য়ে শ’য়ে শ্রমিককে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ছুটতে হচ্ছে প্রায় ১২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে সাগরদিঘির সুপার
স্পেশালিটি হাসপাতালে।

এলাকারই বাসিন্দা মোদাশ্বর হোসেন বলছেন, “বহির্বিভাগটা আছে ঠিকই, তবে কখনও বন্ধ থাকে, কখনও চালু। বন্ধ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঘরেই বসেছিল এক সময় পুলিশ ক্যাম্প। এই বেহাল স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পাশেই গড়ে উঠেছে কোটি টাকা খরচ করে মাতৃসদন। ঝাঁ চকচকে ভবনে লাগানো হয়েছে বাতি, এসেছে দশটি শয্যা সহ যাবতীয় চিকিৎসা সামগ্রী। ৫ বছর ধরে নির্মাণ শেষ হয়ে তালা বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে সে ভবন।”

তাঁর কথায়, “সাগরদিঘি একমাত্র ব্লক যেখানে কোনও ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র নেই। ব্লকের ৪টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র, একটিতেও ইন্ডোর চালু নেই। অথচ ১১ ব্লকের সাগরদিঘিতে কম করে ৩০ হাজার শ্রমিক আছেন, যাঁরা ভিন্ রাজ্যের কাজে গিয়েছিলেন।’’
বিডিও শুভজিৎ কুণ্ডু বলছেন, “আমিও চেয়েছিলাম প্রত্যন্ত গৌরীপুরে একটা কোয়রান্টাইন কেন্দ্র হোক। আমার প্রস্তাব দেওয়া কাজ। মানা না মানার দায় তো স্বাস্থ্য দফতরের।”

এলাকার বাসিন্দাদের বক্তব্য, মাতৃসদনটি চালু না হওয়ায় প্রসূতিরাও খুব সমস্যায় পড়েছেন। এই পরিস্থিতিতে হাল ফেরানো হোক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Corona Virus LockDown Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE