প্রতীকী ছবি
জেলা জুড়ে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। তার মধ্যেও কিছুটা স্বস্তিতে ছিল করিমপুর। গত প্রায় দু’মাসে এলাকার কোয়রান্টিন সেন্টারগুলিতেই বেশির ভাগ কোভিড ১৯ আক্রান্ত রোগীর খোঁজ মিলছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহে করোনা আতঙ্ক কোয়রান্টিন সেন্টারের সীমানা পেরিয়ে শহরের আনাচে-কানাচে ছড়িয়েছে।
গত রবিবার করিমপুরের একজন শিশু চিকিৎসকের করোনা টেস্টের রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। সে দিন ওই চিকিৎসক আটজন শিশুর চিকিৎসা করেছিলেন। সে দিন চিকিৎসকের সংস্পর্শে আর কারা এসেছিলেন তা নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন সকলেই। প্রশাসন সকলকে চিহ্নিত করে তাঁদের হোম কোয়রান্টিনে থাকতে নির্দেশ দিয়েছে এবং সকলের লালারস পরীক্ষা করা হয়েছে।
এরপর বৃহস্পতিবার নতুন করে করিমপুরের রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা পেশায় এক ব্যাঙ্ক কর্মীর করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় নতুন করে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে করিমপুরের মানুষের কপালে। মার্চ-এপ্রিলে বেশ কিছু দিন টানা লকডাউন কাটানোর পর আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত সকলেই ধীরে ধীরে তাঁদের কর্মজীবনে আবার স্বাভাবিক হচ্ছিলেন। লকডাউনে ছাড় মেলায় আনাজ বিক্রেতা বা মাছ বিক্রেতাদের মতো ছোট ব্যবসায়ী, টোটো চালক, কয়েকজন গৃহশিক্ষক বা আরও অন্য পেশার মানুষেরা স্বস্তি পেয়েছিলেন। কিন্তু করিমপুরে পরপর দু’জনের করোনা ধরা পড়ার ঘটনার পর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
করিমপুরের এক গৃহশিক্ষক প্রবীর কুণ্ডু বলেন, “কিছু দিন আগে থেকে ছাত্রছাত্রীদের কথা ভেবে অল্প সংখ্যক ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি এবং দূরত্ববিধি মেনেই টিউশন পড়ানো শুরু করেছিলাম। কিন্তু এই ঘটনায় সবার নিরাপত্তার কথা ভেবেই আবার পড়ানো বন্ধ রেখেছি। আগে সব স্বাভাবিক হোক তারপর শুরু করব।”
সতর্কতার সুর অভিভাবকদের গলাতেও। করিমপুর রামকৃষ্ণপল্লির বাসিন্দা রীনা পালের কথায়, “ছেলে এবার মাধ্যমিক পাশ করল। তাই একাদশ শ্রেণির জন্য টিউশন নিতে শুরু করেছিল। কিন্তু আমাদের বাড়ির কাছেই সংক্রমণের খোঁজ মিলেছে বলে এখন ছেলেকে প্রাইভেট পড়তে পাঠাচ্ছি না। অনলাইনে যতটুকু সম্ভব পড়াশোনা চালিয়ে যাবে।”
করিমপুরের বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এত দিন সংক্রমণ সাধারণ মানুষের মধ্যে অর্থাৎ বাজারে বা লোকালয়ে প্রবেশ করেনি। কিন্তু এবার আক্রান্ত দু’জন এলাকার বহু সাধারণ মানুষের প্রত্যক্ষ সংস্পর্শে এসেছেন। ফলে সংক্রমণের একটা সম্ভাবনা থাকছে। যে কারণে এলাকায় কয়েকদিনের জন্য প্রশাসনের একটু কড়া পদক্ষেপ করা উচিত। যদিও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আক্রান্ত চিকিৎসকের সংস্পর্শে আসা সবাইকে চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ব্যাঙ্ক কর্মীর পাড়া কন্টেনমেন্ট জ়োন করে ঘিরে দেওয়া হয়েছে। ওই ব্যক্তির সংস্পর্শে আসা মানুষদের হোম আইসোলেশনে রাখার ও লালারস পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy