গুদামে মজুত করা হচ্ছে চাল। লালগোলায়। নিজস্ব চিত্র
আন্দোলনের আবহে হঠাৎই ছেঁকা মূল্যবৃদ্ধির। লালগোলা এবং ভগবানগোলা এলাকায় নয়া নাগরিকত্ব আইন বিরোধী আন্দোলনের জেরে ট্রেন-ট্রেকার-বাস রাস্তা থেকে উধাও। বাজারে আনাজপাতি আর মুদির দোকানে চেনা মুখের উসখুসে ভিড়— ‘দেখ বাবা চাল-আলুটার যেন কামতি না পড়ে!’ সেই আশঙ্কাটাই যেন সত্যি হয়ে গেল রবিবার।
সকাল থেকে লালগোলার বাজার ছন্দে ফিরলেও সেখানে পা দিয়ে মানুষজন বুঝলেন, চালে হাত দিতেই ফোস্কা পড়ার জোগাড়, আলু যেন পাল্লা দিচ্ছে মহার্ঘ পেঁয়াজের সঙ্গে! যে চাল শুক্রবার বিকেলেও ছিল ২৪৯০ টাকা কুইন্টাল, এক রাত্তিরেই তা ৩ হাজার ছুঁয়েছে। ফলে কেজি প্রতি কুড়ি থেকে তিরিশ টাকা বেড়ে গিয়েছে চালের দাম। আলুও প্রতি কেজিতে দোকানি চেয়ে বসছেন সাত থেকে আট টাকা বেশি।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শুক্রবার রাত থেকেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল রেল-বাস না চলায় লালগোলা এবং ভগবানগোলা ক্রমশ চাল-শূন্য হয়ে পড়েছে। আসছে না আলুও। খুচরো ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত হয়ে বেশি দাম দিয়েই চাল-আলু তুলে রেখেছিলেন। রবিবার সেই বর্ধিত মূল্যই তাঁরা চাপিয়ে দিয়েছেন ক্রেতাদের উপরে। সাধারণ চল্লিশ টাকার মিনিকেট পঞ্চাশ। অন্য চাল ভাতে না বাড়লেও দামে বেড়েছে। একই অবস্থা আলুরও।
খবরটা কানে যেতেই অবশ্য ব্যবস্থা নিতে বাজারে নামে প্রশাসন। ব্যবসায়ীদের জেরা করতেই বেরিয়ে পড়ে ‘গুজবের কথা।’ এক খুচরো ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘পাইকারি ব্যবসায়ীদের অনেকেই শুক্রবার রাতে জানান, চাল-আলু মজুত কর। সেই মতো টোটো-ভ্যান বোঝাই করে চাল আলু কিনে ফেলেছিলাম বেসি দাম দিয়েই। বলতে দ্বিধা নেই, ভেবেছিলাম এই বাজারে একটু বাড়তি লাভ করব। কিন্তু এখন তো দেখছি অন্য হ্যাপা।’’
ভগবানগোলার বাজারে চাল বিক্রি হয়েছে প্রতি কুইণ্টাল ২৯৪০ টাকা থেকে ৩০০০ টাকায়। শনিবার লালগোলা ও ভগবানগোলায় আলু দর ছিল ২০০০ টাকা প্রতি ক্যুইন্টাল। সেই আলু রবিবার সকালে বিক্রি হয়েছে ৩০০০ থেকে ৩,২০০ টাকায়।
এ দিন লালগোলা বাজার থেকে কুড়ি বস্তা চাল কেনেন লালগোলার আইড়মারির এক খুচরো ব্যবসায়ী তৌফিক শেখ। তিনি বলেন, ‘‘শুনলাম যোগাযোগ বন্ধ তাই চাল পাওয়া যাবে না। মজুদ রাখতে চাল কিনতে যায় গিয়ে দেখি চালের দাম এক লাফে বেড়ে গিয়েছে।’’
তবে কালোবাজারির কথা প্রশাসনের কানে পৌঁছাতেই সকালে ভগবানগোলার বিভিন্ন গুদামে হানা দেন ভগবানগোলা-১ বিডিও পুলককান্তি মজুমদার ও ভগবানগোলা থানার পুলিশ। লালগোলা থানার ওসি সৌম্য দে বলেন, ‘‘কালোবাজারির খবর পেতেই লালগোলার বিভিন্ন চাল ও আলুর গুদামে আমরা হানা দিই। সঙ্গে মাইকে করে এলাকায় প্রচারও করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy