Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধ রেডব্যাঙ্ক বাগানে ফের মৃত্যু

ডুয়ার্সের বানারহাটের বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানে চিকিৎসার অভাবে এক শ্রমিক মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাগান সূত্রে জানা যায়, বাগানের আপার লাইনের বাসিন্দা ওই বিঘা শ্রমিকের নাম ফুলে মুন্ডা (৪৮)। গত সাত দিন ধরে ফুলে মুন্ডা জন্ডিসে ভুগছিলেন। তিনি কথা বলতে পারতেন না। তাঁর বাবা-মা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। তিনি বাড়িতে একাই থাকতেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বানারহাট শেষ আপডেট: ০৫ জুন ২০১৫ ০৩:৩৪
Share: Save:

ডুয়ার্সের বানারহাটের বন্ধ রেডব্যাঙ্ক চা বাগানে চিকিৎসার অভাবে এক শ্রমিক মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। বাগান সূত্রে জানা যায়, বাগানের আপার লাইনের বাসিন্দা ওই বিঘা শ্রমিকের নাম ফুলে মুন্ডা (৪৮)। গত সাত দিন ধরে ফুলে মুন্ডা জন্ডিসে ভুগছিলেন। তিনি কথা বলতে পারতেন না। তাঁর বাবা-মা অনেক আগেই মারা গিয়েছেন। তিনি বাড়িতে একাই থাকতেন।

শ্রমিকদের দুর্দশা মেটাতে ও বাগান খোলার জন্য গত বছর ২৩ নভেম্বরে রাজ্য সরকার বাগানটি অধিগ্রহণ করে। কিন্তু অধিগ্রহণের পর সাত মাস কেটে গেলেও সরকার বাগান খোলার জন্য কোন মালিককে বাগান আনতে পারেনি। অধিগ্রহণের পর এই প্রথম শ্রমিক-মৃত্যুর ঘটনা ঘটল ওই বাগানে।

বাগানের সমস্যা দেখতে গত মে মাসেই বন্ধ রেডব্যাঙ্ক ও সুরেন্দ্রনগর চা বাগানে আসেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। বাগান পরিদর্শনে এসে শ্রমিকদের অভাব অভিযোগের কথা শুনেন। আশ্বাস দিয়েছিলেন দ্রুত শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের কোন রাস্তা বের করবেন। কিন্তু, বারবার রাজ্যের কয়েক জন মন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর পরিদর্শনেও বাগানের দুর্দশার এক ফোঁটাও সমাধান হয়নি।

শেষবার রেডব্যাঙ্ক চা বাগান বন্ধ হয় ২০১৩ সালের অক্টোবর মাসে । এই বাগানে ৮৮৬ জন শ্রমিক ছিলেন। ২০১৩ সালে বন্ধ হওয়ার পর থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অপুষ্টি, বিনা চিকিৎসার অভিযোগে মৃত্যু হয়েছে ৫৫ জন শ্রমিকের। গত ফেব্রুয়ারি থেকে একশো দিনের কাজ বন্ধ রয়েছে বাগানে। ফলে, শ্রমিকরা উর্পাজনের কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছেন না। অনেক শ্রমিক নদীতে পাথর ভেঙে আধ পেটা খেয়ে কোনও রকমে বেঁচে আছেন। বাগানে পুরুষ শ্রমিকরা বেশির ভাগই কাজের সন্ধানে চলে গিয়েছেন ভুটান ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে। বন্ধ বাগানের জন্য মাসে মাসে পনেরশো টাকা করে ফাউলাইয়ের টাকা পান শ্রমিকরা। ওই টাকা দিয়ে সংসার চলে না তাঁদের। তার উপর আটান্ন বছর পেড়িয়ে যাওয়ায় দুশো শ্রমিক ফাউলাইয়ের টাকাও পান না। বাগানের শ্রমিক দীপক ওঁরাও ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, “আমাদের দেখবে কে? কেউ খেতে পাই না, কারও রোগ হলে চিকিৎসা করার টাকা থাকে না। ভাবেই হোক সরকার বাগান খোলার ব্যবস্থা করুক।” ধূপগুড়ির বিডিও শুভঙ্কর রায় বলেন, “বিনা চিকিৎসায় মারা গিয়েছেন এই অভিযোগ ঠিক নয়। লাইনে লাইনে গিয়ে চিকিৎসা হয়। বাগানে নিয়মিত মেডিক্যাল টিম যাচ্ছে। তবে কী কারণে ওই শ্রমিক মারা গেলেন তার খোঁজ নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

redbank garden worker poverty tea garden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE