Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ

বর্তমানে অধ্যক্ষ ছুটিতে রয়েছেন। অথচ তা স্বাস্থ্য ভবনে জানাননি বলে অভিযোগ। এ দিন বৈঠকের সময় এসে ছুটিতে রয়েছেন এবং সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছেন বলে জানালে রুদ্রবাবু বলেন, ‘‘আপনি ছুটিতে থাকলে কলেজে আসতে হবে না।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৮
Share: Save:

নানা অনিয়মের অভিযোগে উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে স্বাস্থ্য দফতরের দ্বারস্থ হচ্ছে রোগী কল্যাণ সমিতি। বুধবার রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানান সমিতির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য।

তাঁদের অভিযোগ, অধ্যক্ষের উদাসীনতায় কলেজের উন্নয়ন থমকে গিয়েছে। কলেজের গ্রন্থাগারে বই কেনার ২০ লক্ষ টাকা খরচ করতে না পারায় গত বছর তা ফেরত চলে গিয়েছে। পাঁচ বছর আগে ১৯ কোটি টাকা খরচ করে নতুন ভবন তৈরির প্রকল্প রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। অথচ এতদিন তা স্বাস্থ্য দফতরে পাঠানোই হয়নি। অভিযোগ উঠলে গত জানুয়ারি মাসে তা পাঠানো হয়। অন্যদিকে ডেন্টাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিরা পরিদর্শনে এসে নানা সময় পরিকাঠামোর ঘাটতির কথা বলেছেন। তা মেটানো না-হলে অনুমোদন খারিজ হতে পারে বলেও সতর্ক করেছেন। ৩৮ কোটি টাকা সরঞ্জাম কেনার জন্য বরাদ্দ হয়ে পড়ে রয়েছে। মার্চের মধ্যে তা খরচ না-করলে ফেরত চলে যাবে।

রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। রোগীদের প্রয়োজনে চিকিৎসা সরঞ্জাম চেয়েও পান না চিকিৎসকরা। অথচ রোগী কল্যাণ সমিতির তহবিল থেকে তা কেনা হয় না। বারবার বলা হয় টাকা নেই। সরকারের ভাবমূর্তিকে তিনি নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। মুখ্যমন্ত্রী যেখানে উত্তরবঙ্গ ডেন্টাল কলেজের উন্নয়নে নানা সহায়তা দিচ্ছেন সেখানে এ ধরনের উদাসীনতা বরদাস্ত করা হবে না।’’ আর কেউ এর সঙ্গে যুক্ত কি না তদন্ত হলেই স্পষ্ট হবে বলে দাবি।

বর্তমানে অধ্যক্ষ ছুটিতে রয়েছেন। অথচ তা স্বাস্থ্য ভবনে জানাননি বলে অভিযোগ। এ দিন বৈঠকের সময় এসে ছুটিতে রয়েছেন এবং সৌজন্য সাক্ষাতে এসেছেন বলে জানালে রুদ্রবাবু বলেন, ‘‘আপনি ছুটিতে থাকলে কলেজে আসতে হবে না।’’ এর পর অধ্যক্ষ চলে যান। পরে ডিপার্টমেন্ট অব হেল্থ সার্ভিসের ডেপুটি ডিরেক্টরকে বৈঠক থেকে চেয়ারম্যান ফোন করে বিস্তারিত জানান। অধ্যক্ষ কুড়ি দিনের মতো পিতৃত্বকালীন ছুটিতে গেলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়েই ইচ্ছেমতো কাজ করছেন বলে জানতে পারেন। অধ্যক্ষের দাবি, ‘‘অর্থ সংক্রান্ত বিষয়টি অ্যাকাউন্টস অফিসারই জানেন। ফিনান্সিয়াল রুলস আমার জানা নেই। আমাকে যখন যা জানানো হয় তা করেছি।’’ ছুটির বিষয়টি নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এ ব্যাপারে যা বলার অফিসই বলবে।’’ অধ্যক্ষের কাজকর্ম নিয়ে ৩১ জানুয়ারি স্মারকলিপি দেয় তৃণমূল নিয়ন্ত্রিত ছাত্র সংসদ, প্রগ্রেসিভ জুনিয়র ডা্ক্তার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা। জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিযেশনের কলেজ ইউনিটের সভাপতি সৌম্যদীপ খাঁড়া বলেন, ‘‘অধ্যক্ষের উদাসীনতায় লাইব্রেরির বই কেনার টাকা ফেরত গিয়েছে। কলেজের জন্য কেনা ১৮ টি এয়ার কন্ডিশন মেশিন কয়েক বছর ধরে শৌচাগারে পড়ে রয়েছে। কয়েক বছর আগে ওটির জন্য কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রাংশ কেনা হলেও তা চালু করতে অধ্যক্ষ তৎপর নন। যন্ত্রাংশ পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। অথচ রোগীরা পরিষেবা পাচ্ছেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE