Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
ভোটের নায়ক

কে বলেছে কোণঠাসা, সর্বত্র ছুটছেন কৃষ্ণেন্দুই

নিজস্ব কার্যালয়েই দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র পূরণেও তদারকি করছেন তিনি। আর তাঁর তৎপরতা দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে বিরোধী থেকে শুরু করে তাঁরই দলের বিক্ষুব্ধদেরও।

কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। ফাইল চিত্র

কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী। ফাইল চিত্র

অভিজিৎ সাহা
মালদহ শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২৯
Share: Save:

মন্ত্রিত্ব নেই। নেই পুরপ্রধানের পদও। তবুও দিনের শুরু থেকে রাত পর্যন্ত দলীয় কর্মীদের ভিড়ে থিকথিক করছে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর ব্যক্তিগত কার্যালয়। কর্মী, সমর্থকদের ভিড় দেখে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছেন মালদহের রাজনীতিতে কার্যত কোণঠাসা কৃষ্ণেন্দু। কখনও তিনি জেলা পরিষদের প্রার্থীদের নিয়ে ছুটছেন মহকুমা অফিসে। আবার কখনও পঞ্চায়েতের প্রার্থীদের সঙ্গে যাচ্ছেন ব্লক অফিসে। এমনকী, নিজস্ব কার্যালয়েই দলীয় প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র পূরণেও তদারকি করছেন তিনি। আর তাঁর তৎপরতা দেখে কপালে ভাঁজ পড়েছে বিরোধী থেকে শুরু করে তাঁরই দলের বিক্ষুব্ধদেরও।

কৃষ্ণেন্দু বিরোধী তৃণমূলের এক নেতা বলেন, “কৃষ্ণেন্দুবাবু এখন কোণঠাসা। পঞ্চায়েত নির্বাচনকে সামনে রেখে ফের রাজনৈতিক ময়দানে সক্রিয় হওয়ার মরিয়া প্রয়াস চালাচ্ছেন তিনি।” যদিও বিক্ষুব্ধদের কথায় কান না দিয়ে ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতি, গ্রাম পঞ্চায়েত ও জেলা পরিষদের আসন দখলকেই পাখির চোখ করেছেন কৃষ্ণেন্দু। তিনি বলেন, “আমি মুখ্যমন্ত্রীর একজন সৈনিক। তাই আমি দলের কাজ করছি। আশা করছি মুখ্যমন্ত্রীর আশীর্বাদে এ বারও ইংরেজবাজারে বিগত বছরের মতো ফলাফল হবে।”

ইংরেজবাজার শহরের ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কালীতলা এলাকায় মালদহের দাপুটে নেতা কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরীর ব্যক্তিগত কার্যালয়। ২০১৩ সালের মন্ত্রী হন কৃষ্ণেন্দু। ছিলেন ইংরেজবাজারের পুরপ্রধানও। সেই সঙ্গে রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে একাধিক কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি সহ একাধিক পদে ছিলেন তিনি। তবে ২০১৬ সালে বাম-কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী নীহাররঞ্জন ঘোষের কাছে হেরে যান কৃষ্ণেন্দু। মন্ত্রীত্বও যায়। পরে নীহার যোগ দেন তৃণমূলে। কৃষ্ণেন্দু বিরোধী কাউন্সিলরদের এককাট্টা করে পুরপ্রধান হন নীহার। এমনকী, এক এক করে সরকারি সমস্ত পদ থেকে সরানো হয় কৃষ্ণেন্দুকে। তারপর থেকে ভিড় উধাও হয়ে যায় তাঁর কার্যালয়ে। তবে পঞ্চায়েত ভোটের দামামা বাজতেই ফের বাড়ছে ভিড়। এর কারণ খুঁজছেন অনেকেই।

২০১৩ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে মালদহে একমাত্র ইংরেজবাজার পঞ্চায়েত সমিতিই একক ভাবে পেয়েছিল তৃণমূল। এ ছাড়া ব্লকের ১১টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে তৃণমূল দখল করেছিল ন’টি। শুধু তাই নয়, জেলা পরিষদের তিনটি আসনের মধ্যে দু’টি আসনে জয়ী হয়েছিলেন কৃষ্ণেন্দু ঘনিষ্ঠ প্রার্থীরা। এ বারও জেলা পরিষদের দু’টি আসনে প্রার্থী হয়েছেন কৃষ্ণেন্দু ঘনিষ্ঠরা। তাই এ বারের ইংরেজবাজারে অধিকাংশ তৃণমূল প্রার্থীর ভরসা তিনিই। তবে এ বার লড়াইটা কঠিন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। একে তো কৃষ্ণেন্দুর কোনও ক্ষমতা নেই। অন্তর্দ্বন্দ্বও রয়েছে। এখন দেখার কতটা বাজিমাত করতে পারেন কৃষ্ণেন্দু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE