Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Jaldapara

মৃত জোড়া গন্ডার, বৈঠকে মন্ত্রী

বিষয়টি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

গন্ডারটিকে ক্রেনে তুলে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য মা গন্ডারটি মারা যায়। ছবি: নারায়ণ দে

গন্ডারটিকে ক্রেনে তুলে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়ার কাজ চলছে। কিছুক্ষণ পরেই অবশ্য মা গন্ডারটি মারা যায়। ছবি: নারায়ণ দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০১:২৪
Share: Save:

একসঙ্গে দু’টি গন্ডারের মৃত্যুকে ঘিরে রহস্য দানা বাঁধল জলদাপাড়ার জঙ্গলে। বুধবার সকালে শালকুমারহাটে জঙ্গল লাগোয়া শিধাবাড়ি গ্রাম থেকে একটি গন্ডারকে অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করে বন দফতর। পরে সেটির মৃত্যু হয়। এরই মাঝে শিধাবাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে আরও একটি গন্ডারের মৃতদেহ উদ্ধার করেন বনকর্মীরা। দুই গন্ডারের মৃত্যুর কারণ নিয়ে নিশ্চিত নন বন দফতরের কর্তারা। তবে এটা যে চোরাশিকারের ঘটনা নয়, তা জানিয়ে দিয়েছেন তাঁরা। বিষয়টি নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক ডেকেছেন রাজ্যের বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।

শালকুমার-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের শিধাবাড়ি গ্রাম। যে গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে শিসামারা নদী। সেই নদী পার হলেই জলদাপাড়ার জঙ্গল। মাঝেমধ্যেই ওই এলাকায় গন্ডার, হরিণ ও বাইসনের মতো বন্যদের আনাগোনা প্রায়ই দেখা যায়। স্থানীয় সূত্রের খবর, বুধবার সকালে সেখানেই একটি শাবক-সহ মা গন্ডারকে দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। মা গন্ডারটি যে প্রচন্ড অসুস্থ, তাও বুঝতে পান তাঁরা। এলাকার গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য বিদুর বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা নিশ্চিত, মঙ্গলবার গভীর রাতে গন্ডারটি গ্রামেই শাবকটির জন্ম দেয়। কারণ, যে পথে মা গন্ডারটি এলাকায় এসেছিল সেখানকার মাটিতে মা গন্ডারটি ছাড়া কোনও শাবক গন্ডারের পায়ের ছাপ ছিল না।’’

গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যদের এই দাবির পর বিভিন্ন মহলে হইচই শুরু হয়। বন দফতর সূত্রের খবর, গন্ডার সাধারণত গভীর জঙ্গলেই শাবকের জন্ম দেয়। তবে এক্ষেত্রে এর উল্টোটা হয়ে থাকলে, কেন হল তা খতিয়ে দেখা উচিত বলে বিভিন্ন মহল থেকে দাবি ওঠে। তবে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিংহ বলেন, ‘‘মা গন্ডারটির সঙ্গে থাকা শাবকটির বয়স সম্ভবত দু’মাসের মতো হবে বলে শুনেছি।’’

তবে এই বিতর্ক দানা বাঁধার আগেই মা গন্ডার ও তার শাবকটিকে উদ্ধার করতে শিধাবাড়ি গ্রামে চলে যান বনকর্মীরা। প্রথমে শাবকটিকে উদ্ধার করেন তাঁরা। তারপর ক্রেনের সাহায্যে মা গন্ডারটিকে উদ্ধার করে জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর সেটির মৃত্যু হয়।

এর মধ্যে শিধাবাড়ির কাছে আরেকটি গন্ডারের দেহ উদ্ধার করেন বনকর্মীরা। জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল বলেন, ‘‘শিধাবাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে অপর গন্ডারের দেহটি উদ্ধার হয়। এই গন্ডারটিও স্ত্রী গন্ডার। বয়স ২০-২৫ বছরের মতো হবে।’’

একই দিনে খানিকটা দূরের দু’টি জায়গায় জোড়া গন্ডারের মৃত্যুর ঘটনায় রহস্য দানা বাঁধতে শুরু করে বিভিন্ন মহলে। তবে রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল সাফ জানান, এর পেছনে চোরাশিকারের কোনও ঘটনা নেই। বন দফতরের কর্তাদের কথায়, অসুস্থ হয়েই গন্ডার দু’টির মৃত্যু হয়েছে। ডিএফও বলেন, ‘‘গন্ডার দু’টি কীভাবে অসুস্থ হল তা খতিয়ে দেখতে তাদের দেহের ময়নাতদন্ত চলছে।’’

জোড়া গন্ডার মৃত্যুর খবর বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও পৌঁছেছে। মন্ত্রী জানান, বিষয়টি নিয়ে আজ একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক করবেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jaldapara Rhinoceros
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE