পুরসভার নির্মীয়মান জলাধার লাগোয়া বেড়া়র ঘরের পিছন থেকে পাওয়া যাচ্ছিল গোঙানির আওয়াজ। বাসিন্দারা দেখতে পান সেখানে হাত-মুখ বাঁধা অবস্থায় পড়ে আছে এক নাবালিকা। তড়িঘড়ি তাকে উদ্ধার করেন তাঁরা। সোমবার রাতে জলপাইগুড়ির আনন্দপাড়ার ঘটনা।
যে বেড়ার ঘরের পিছন থেকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেখানে জলাধার তৈরির কাজ করতে আসা শ্রমিকেরা থাকেন। উদ্ধারের পরে নাবালিকা অভিযোগ করে, ওই শ্রমিকেরা তাকে বেঁধে রেখেছিল। তার দাবি, নাচের ক্লাস থেকে বাড়ি ফিরছিল সে, আনন্দপাড়ার নির্জন গলিতে তিনজন শ্রমিক হাত চেপে ধরে। চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে বেড়ার ঘরের পিছনে গিয়ে হাত-মুখ বেঁধে ফেলে রাখে বলে অভিযোগ।
এ কথা শোনার পরেই উত্তেজিত বাসিন্দারা শ্রমিকদের ধরে গণপিটুনি দেয়। ঘটনার রাতেই পালিয়ে যায় এক শ্রমিক। মঙ্গলবার পুলিশ তাকেও গ্রেফতার করেছে। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার পুলিশ জানিয়েছে, ৬ জন শ্রমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতেরা গাজলের বাসিন্দা। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার বলেন, ‘‘ধৃতদের অতীতে কোনও অপরাধের রেকর্ড ছিল কিনা তাও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।” যদিও ধৃতদের দাবি, তারা এই ঘটনার সঙ্গে কোনওভাবেই যুক্ত নয়।
যে ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে সে শহরের একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণির পড়ুয়া। নাচের ক্লাস সেরে প্রতিদিন আনন্দপাড়ার ওই রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরে ওই ছাত্রী। ওই ছাত্রীর এক সহপাঠী জানায়, তারা দু’জন ফেরা সময় আনন্দপাড়ার গলি পর্যন্ত আসে, তারপরে ঢোকার মুখে দু’জন আলাদা পথে চলে যায়। সোমবার রাত সাড়ে আটটার মধ্যে বাড়ি ফেরার কথা থাকলেও এগারোটা বাজতে চললেও মেয়ে না ফেরায় খোঁজ শুরু করে বাড়ির লোকজন। রাত সাড়ে আগারোটা থেকে আনন্দপাড়া সহ বিভিন্ন এলাকায় খোঁজ শুরু করে পরিবারের সদস্যরা। সে সময়েই বেড়ার ঘরের পিছন থেকে গোঙানির শব্দ পান স্থানীয়রা।
প্রাথমিক জেরায় পুলিশ জেনেছে, ছাত্রীটি প্রায়দিনই একা একা আনন্দপাড়ার গলি দিয়ে ফেরে এটা শ্রমিকদের কয়েকজন দেখেছিল। আজ মঙ্গলবার ধৃত শ্রমিকদের দু’জনের গাজোলে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল বলে জানা গিয়েছে। ওই নাবালিকাকে গাজোলে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল কিনা তাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। শহরের পানীয় জল সরবরাহের নতুন প্রকল্প শুরু হয়েছে। সেই প্রকল্পে শহর জুড়ে একাধিক জলাধার তৈরি হওয়ার কথা। আনন্দপাড়াতে সেই প্রকল্পের জলাধার হচ্ছে। বাসিন্দারা জানান, মাস সাতেক ধরে কাজ চলছে। ভিন্ জেলা থেকে শ্রমিকরা এসে কাজ করেন। মাঝেমধ্যে শ্রমিকদের মুখ বদল হত। অভিযুক্তরা মাসখানেক ধরে কাজ করছিলেন বলে জানান বাসিন্দারা। যে ঠিকাদারের মাধ্যমে এরা কাজ করতে এসেছে, তাঁর খোঁজ করছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy