Advertisement
১০ মে ২০২৪

বাড়ছে চাহিদা, টান পড়েছে আমদানিতে

বর্ধমান রোডের একটি শপিং মলের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বিপণি। হাতে ঠেলা ট্রলিতে যতটা সম্ভব নুডলস ভরে ফেলছিলেন মাঝবয়সী এক মহিলা

সাবধানতা: দূরত্ব রেখে দাঁড়ানোর জন্য রাস্তায় দেওয়া হচ্ছে দাগ। শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

সাবধানতা: দূরত্ব রেখে দাঁড়ানোর জন্য রাস্তায় দেওয়া হচ্ছে দাগ। শিলিগুড়িতে। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০২০ ০২:৩০
Share: Save:

শিলিগুড়ি শহরের বাবুপাড়ার বাসিন্দা এক সরকারি কর্মী। লকডাউনের পর থেকেই প্রতিদিন সকাল ১১টা বাজলেই বাজার যাওয়া শুরু করেছেন। পাশেই, মহাবীরস্থান, রেলগেট এবং উড়ালপুল বাজার। রোজই অল্প অল্প আলু, আনাজ কিনে পাড়ার মুদিখানা দোকান হয়ে কিছু না কিছু নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। শুক্রবার তাঁকে সকালে বাজারে যেতে দেখেই পরিচিত এক ব্যক্তি কারণ জিজ্ঞেস করতেই তিনি বললেন, ‘‘কতদিন লকডাউন চলবে জানি না। তাই রোজই ঘরে আনাজ, রেশন মজুত করছি। চারজনের সংসার, যা জমা করেছি তাতে মাসখানেক চলে যাবে।’’ এর পর আর কথা বাড়াননি পরিচিত ভদ্রলোক। শুধু পাশে দাঁড়িয়ে থাকা কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে বললেন, ‘‘এঁদের জন্যই মালপত্রের আকাল দেখা দেবে।’’

বর্ধমান রোডের একটি শপিং মলের নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের বিপণি। হাতে ঠেলা ট্রলিতে যতটা সম্ভব নুডলস ভরে ফেলছিলেন মাঝবয়সী এক মহিলা। যা দেখে শপিং মলের এক কর্মী বলেন, ‘‘ম্যাডাম। অল্প করে নিন। সবাইকে কেনার সুযোগ দিন।’’ শুধু শপিং মল বা একটি-দু'টি বাজার নয়, গোটা শহরের সকাল থেকে রাত অবধি খোলা থাকা বাজার এবং দোকানগুলিতে একাংশ ক্রেতা প্যানিক বায়িং করে চলেছেন।

বিধান মার্কেটে কাপড়ের দোকানের কর্মী। স্বামী-স্ত্রী’র সংসার। প্রতি মাসে ২৫ কেজি চালের বস্তা আনলে পরের মাসেরও অনেকটা চলে যায়। তেমন লোককেও সাইকেলে ৫০ কেজির দু'টি বস্তা নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেথা গিয়েছে। কী কারণে অন্তত চার বা পাঁচ মাসের চাল তিনি বাড়িতে জমা করছেন তা পরিষ্কার নয়।

এই পরিস্থিতিতে নয়বাজার, খালপাড়া, চম্পাসারি পাইকারি বাজারে মালপত্রের চাহিদা রোজ বাড়ছে। কিন্তু চাহিদার তুলনায় আমদানি কম হওয়ায় সঙ্কটের একটা পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে তা মানছেন ব্যবসায়ীরা। মালপত্র আসছে কম, আবার অনেকে কিনছেন বেশি। তাতে বাকিরা পাচ্ছেন না। ডিম, আলু, পেঁয়াজ, ডাল, তেল, নুন, মশলা, প্যাকেট দুধ, বিস্কুট সব কিছুরই এক অবস্থা। বাসিন্দাদের অযথা হুড়োহুড়ি না করার আবেদন করেছেন মহকুমা শাসকও।

ছোট ব্যবসায়ীরা আবার জানাচ্ছেন, মালপত্র পাওয়া যাচ্ছে না বলে একাংশ ব্যবসায়ী অতিরিক্ত টাকা নিচ্ছিলেন। মহকুমাশাসক সুমন্ত সহায়ের কাছে অভিযোগ যাওয়ার পর তিনি দামের তালিকা ফ্লেক্স করে পাইকারি বাজারগুলিতে ঝুলিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। যা নিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় শিলিগুড়ি মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কর্তারা বৈঠকে বসেন। সংগঠনের সচিব গৌরীশঙ্কর গোয়েল জানান, আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। বাজার একদিন পর পর খোলা রাখা হচ্ছে। আজ, শনিবার শুধু পাহাড় এবং সিকিমে মালপত্র যাবে। রবিবার ছুটি। সোমবার শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীরা মালপত্র নিতে পারবেন। ব্যবসায়ীদের আবেদন করেন, যতটা প্রয়োজন কিনুন, ঠিক দামে বিক্রি করুন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE