Advertisement
০১ জুন ২০২৪
Coronavirus

পাড়ায় কেউ হাঁচলেই ফোন যাচ্ছে থানায়

আপাতত বিশেষ অভিযান বন্ধ, খুব প্রয়োজন না হলে গ্রেফতারি নয়।বুধবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় ফোন আসে, শহরের আনন্দপাড়ার এক আবাসনে আমেরিকা ফেরত দু’জন রয়েছেন।

ফাইল চিত্র

ফাইল চিত্র

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০২০ ০৭:২৯
Share: Save:

কেউ ঘন ঘন হাঁচলেও থানায় খবর পৌঁছে যাচ্ছে, বাড়ির সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে পুলিশ ভ্যান। ‘শিব ঠাকুরের আপন দেশে’ হাঁচতে হলে টিকিট কাটার আইন রয়েছে। তবে সেই আইন প্রযোজ্য সন্ধ্যে ৬টার আগে পর্যন্তই। কিন্তু এখন করোনা নিয়ে আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে দিনের যে কোনও সময়ে ঘনঘন হাঁচি বা কাশি হলে পড়শিরা থানায় ফোন করছেন। যেমনটা ঘটেছে জলপাইগুড়িতে। বুধবার বিকেল থেকে পরের পর ফোন আসতে শুরু করেছে কোতোয়ালি থানায়। এক পুলিশ অফিসারের কথায়, “এতদিন থানার ফোন তুলে চুরি হওয়া, বাড়িতে ডাকাত পড়ার কথাই শুনে এসেছি। এখন ফোন করে লোক বলছে, অমুকে খুব কাশছে, করোনা হতে পারে স্যার। ধরে নিয়ে যান।” খানিকটা বিরক্ত হয়েই ওই অফিসার বললেন, “যেতেও হচ্ছে। না হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখে দিচ্ছে পুলিশ কাজ করে না।”

বুধবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় ফোন আসে, শহরের আনন্দপাড়ার এক আবাসনে আমেরিকা ফেরত দু’জন রয়েছেন। পুলিশ পৌঁছতে খানিকটা দেরি হওয়ায় এলাকার বাসিন্দাদের কেউ কেউ সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখালেখি শুরু করেন। শেষে পুলিশ পৌঁছয়। জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার আইসি বিশ্বাশ্রয় সরকার ওই দুই বাসিন্দাকে বাড়ি থেকে কোনওভাবেই বের না হতে নির্দেশ দিয়ে আসেন। আনন্দপাড়া থেকে অফিসারেরা ফিরতে না ফিরতেই পুলিশকে জানানো হয় পোস্ট অফিস মোড় লাগোয়া এক ব্যবসায়ীর নাক দিয়ে সমানে জল গড়াচ্ছে। চিকিৎসকের কাছে যেতে বললেও তিনি যাচ্ছেন না। বৃহস্পতিবার সকালে থানায় ফোন আসে নেতাজিপাড়ায় এক ব্যক্তি জ্বরে আক্রান্ত। থানার ল্যান্ড লাইনে ফোন করে বলা হয়, “জলদি কিছু করুন।” খবর পেয়েই পুলিশ রওনা দেয়।

শুধু জলপাইগুড়ি শহর নয়, জেলা জুড়েই বিভিন্ন থানায় এমন বহু ফোন আসছে। জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অভিষেক মোদী বলেন, “সন্দেহভাজন করোনা রোগীর খবর দিয়ে অনেকেই ফোন করছেন, থানায় জানাচ্ছেন। বিষয়গুলি আমরা গুরুত্ব দিয়েই দেখছি। সন্দেহভাজন রোগীকে গিয়ে সরকারি নির্দেশ মতো পদক্ষেপ করতে বলছি। নজরও রাখছি।”

এ দিন সকালেই নাগরাকাটায় থানায় এসে হাজির এক আদিবাসী মহিলা। তিনি হরিয়ানা থেকে ফিরেছেন বলে দাবি করে জানান জ্বরে আক্রান্ত, শ্বাসকষ্টও রয়েছে। থানায় এসে সাহায্য চান তিনি। পুলিশ তাঁকে শুল্কাপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করায়। রাত তাঁকে হোম কোয়রান্টিনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। আপাতত বিশেষ অভিযান বন্ধ, খুব প্রয়োজন না হলে গ্রেফতারি,আটক এড়াতে নির্দেশ গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE