Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

লুকিয়ে চুরিয়ে বিক্রি বাজি, উঠছে নালিশ

কিন্তু লকডাউনের মধ্যে শিলিগুড়ি শহরে কি করে এল এই বিপুল পরিমাণ বাজি?

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

কৌশিক চৌধুরী
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২০ ০৩:৫৮
Share: Save:

এ যেন ছিল অকাল দীপাবলি। রবিবার রাত নয়টা থেকে নয় মিনিটের জন্য মোমবাতি, প্রদীপ, টর্চ জ্বেলে করোনা মোকাবিলায় সংহতি জানানোর কথা বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তা পালন করেছিলেন অনেকেই। তবে এর সঙ্গে জুড়ে গিয়েছিল বাজি, পটকা ফাটানোর উল্লাস। অনেক জায়গায় রাস্তায় নেমে হুল্লোড় হয়েছে। কাঁসর-ঘণ্টা, উলুধ্বনির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ফেটেছে শব্দবাজি। শিলিগুড়ি শহরে ওই সময়ে শব্দবাজির দাপট যেন দীপাবলির রাত মনে করিয়ে দিচ্ছিল।

কিন্তু লকডাউনের মধ্যে শিলিগুড়ি শহরে কি করে এল এই বিপুল পরিমাণ বাজি? বাস, ট্রেন, ট্রাক বন্ধ। রাস্তাঘাট ফাঁকা। বাজির দোকানদারদের গুদাম বন্ধ। বসেনি কোনও বাজি বাজারও। তাহলে কী ভাবে। বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, মোমবাতি বিক্রির আড়ালে দেদার চলেছে বাজি বিক্রিও। গত রবিবারের বাজারে দোকানপাট খোলে শহরে। সবই যে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তাও নয়। কিছু স্টেশনারি দোকান খোলা হয়। মহাবীরস্থান, বিধানমার্কেট, সুভাষপল্লি, হায়দারপাড়া, গেটবাজার, চম্পসারি বাজারে দেদার কেনাবেচা চলে। এরই আড়ালে দীপাবলির সময় থেকে যাওয়া বাজির আড়তদারদের মজুত করা মালপত্র বিক্রি হয় বলে অভিযোগ। তবে খোলামেলা ভাবে বাজি বিক্রি হয়নি। পরিচিত লোকজনের মধ্যে তা দেখেশুনে বিক্রি করা হয়েছে বলে পুলিশের একাংশই মনে করছে।

শহরের বাসিন্দাদের দাবি, পুলিশ পুরোপুরি ব্যর্থ। পুলিশ অফিসারেরা বাজি বিক্রির আঁচও না পাওয়ায় এমনটা হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। বাসিন্দাদের কথা যে অমূলক নয় তা অবশ্য পুলিশের একাংশ মানছেন। তাঁরা জানাচ্ছেন, কোথা থেকে পাড়ায় পাড়ায় এত বাজি ঢুকেছে তা আঁচ করা যায়নি। অনেকে বাড়িতে থেকে যাওয়া কিছু আতসবাজি ফাটিয়েছেন এটা সত্যি। কিন্তু তা হাতে গোনা। বাকিরা বিভিন্নভাবে তা জোগাড় করেছেন। চকলেট বোমা, লঙ্কাবাজি আর তুবড়়ি বিকিয়েছে দেদার।

শিলিগুড়ির নয়াবাজার এলাকার এক তারের ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘সকালে আমার এক বন্ধু বাজির কথা বলেন। বাজার করতে গিয়ে মহাবীরস্থান, স্টেশন ফিডার রোডের দুটি বন্ধ দোকানের সামনে থেকে ব্যাগ নিয়ে নিয়েছিলাম। ২ হাজার টাকার বাজি ফাটিয়েছি। আলোর সঙ্গে বাজি রোশনাই ভালই লেগেছে।’’ পঞ্জাবিপাড়ার বাসিন্দা, রেস্তরোঁ মালিক একজন বলেন, ‘‘মার্কেটের বহু দোকানদারের বাজির স্টক রয়েছে বাড়ির গুদামে। সেখান থেকে দুইদিন ধরে সুযোগ বুঝে চড়া দামে বিক্রি করা হয়েছে। বন্ধুরা ফাটাবে বলল আমিও কিনে নিলাম।’’

পুলিশ সূত্রের খবর, রবিবার ৯টা বাজার মিনিট দুয়েক পর থেকে বাজি ফাটা শুরু হয়। রাস্তা পুলিশের ভ্যান থাকলেও অফিসারেরা কার্যত অবাক হয়ে যান। তবে রাস্তায় নেমে বাজি ফাটানো চলেনি। সব হয়েছে বাড়ি, আবাসনের ছাদ বা চত্বরের মধ্যে। কাউকে ধরার কোনও নির্দেশও ছিল না। তবে মিনিট দশকের মধ্যে সব বন্ধ হয়ে যায় বলে পুলিশের দাবি। পরে কমিশনারেটের কর্তারা বিষয়টি খোঁজ নিতে বলেন। বাজি, পটকা প্রসঙ্গে কমিশনারেটের কোনও পুলিশকর্তাই কোনও কিছু বলেননি।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেনআপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Health Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE