পুতুল রাউত (টোটো চালক)
সংসার চলে টোটোর চাকায় ভর করে। আজ প্রায় দশ দিন হয়ে গেল বাড়িতে বসে আছি। লকডাউন চলছে। টোটো নিয়ে বাইরে বের হওয়ার জো নেই।
আজ দেখলাম, ড্রামের নীচে সামান্য কিছু চাল পড়ে রয়েছে। সাত জনের সংসার। এ বার কী হবে, কোথা থেকে জুটবে খাবার সেই চিন্তা করতে করতে রাতে ঘুমোতে পারছি না।
এ দিকে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের হচ্ছি না। টোটো বন্ধ থাকায় সংসারে আর্থিক টান পড়েছে। টোটো ফের রাস্তায় না চলা পর্যন্ত আয়ের অন্য কোনও পথ খোলা নেই। এই পরিস্থিতি কবে আবার স্বাভাবিক হবে, কে জানে!
চাল ছাড়া বাকি যা কিছু খাদ্য সামগ্রী ছিল তা-ও শেষ হয়ে গিয়েছে। যদিও এক সংস্থা কিছুটা চাল দিয়েছে। কিন্তু সাত জনের সংসার তা দিয়ে আর কতদিনই বা চলবে! আজ ছ'বছর ধরে টোটো চালিয়ে সংসার চালাচ্ছি। এক সময় বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম। তার পরে সংস্থা বন্ধ হয়ে গেল। বিপাকে পড়ে চা পাতা, সাবানের ব্যবসা শুরু করেছিলাম। সেই ব্যবসার লাভের টাকা দিয়ে সংসার চালানো সম্ভব হচ্ছিল না।
তার পরেই বাধ্য হয়ে টোটো নিয়ে রাস্তায় নেমে পড়ি। প্রথমে একটু অস্বস্তি হত। তার পরে সকলের সহযোগিতা ও উৎসাহে অস্বস্তি কেটেছে। তবে জীবনের এই লড়াই চালাতে গিয়ে বিয়ে-থা করা হয়নি। টোটো চালিয়ে প্রতিদিন গড়ে পাঁচশো টাকা আয় হত। সেই টাকা দিয়েই চলত সংসার। এখন সেই আয় একেবারে বন্ধ। ভাইয়েরাও লকডাউনের কারণে কাজে যেতে পারছে না। হাতে যা টাকা ছিল সবই ফুরিয়ে গিয়েছে।
সংসারে খাওয়াদাওয়া ছাড়াও অনেক খরচ রয়েছে। কোথা থেকে সেই টাকা আসবে তা-ও ভেবে পাচ্ছি না। দুই ভাইঝি প্রাথমিক স্কুলে পড়াশোনা করে। স্কুলে মিডডে মিল এখন বন্ধ৷ তবে চাল ও আলু দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এ ভাবে আর কতদিন চলবে?
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy