Advertisement
১১ মে ২০২৪

চিতাবাঘ রুখতে বাগানের জমিতে নজর বন দফতরের

চা বাগানে চিতাবাঘের উপদ্রব কোনও নতুন ঘটনা নয়। বছরের নানা সময়, বিশেষ করে প্রসবের সময় স্ত্রী চিতাবাঘদের জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন চা বাগানের নালা কিংবা ঝোপঝাড়ে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। ফলে অনেক সময়ই তখন চিতাবাঘ-মানুষের সংঘাতের ঘটনা ঘটে। 

—প্রতীকী ছবি।

—প্রতীকী ছবি।

পার্থ চক্রবর্তী
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:১৫
Share: Save:

আনাগোনা বেড়েছে চিতাবাঘের। অথচ বারবার আর্জি জানিয়েও জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন চা বাগানের ঝোপঝাড় পরিষ্কার হচ্ছে না বলে অভিযোগ। এই অবস্থায় অযত্নে পড়ে থাকা মাদারিহাটের বিভিন্ন চা বাগানের লিজ জমি অধিগ্রহণের ভাবনা-চিন্তা শুরু হল বন দফতরের অন্দরে। খুব শীঘ্রই এ ব্যাপারে রাজ্য সরকারের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বনকর্তারা।

চা বাগানে চিতাবাঘের উপদ্রব কোনও নতুন ঘটনা নয়। বছরের নানা সময়, বিশেষ করে প্রসবের সময় স্ত্রী চিতাবাঘদের জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন চা বাগানের নালা কিংবা ঝোপঝাড়ে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। ফলে অনেক সময়ই তখন চিতাবাঘ-মানুষের সংঘাতের ঘটনা ঘটে।

কিন্তু গত দুই মাসে মাদারিহাটের বিভিন্ন চা বাগানে এ ধরনের ঘটনা যে হারে বেড়েছে তাতে করে রীতিমতো চিন্তিত বনকর্তারা। গত ডিসেম্বর থেকে এখনও পর্যন্ত মাদারিহাটের চা বলয়ে চিতাবাঘের হানায় তিন শিশু-কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। জখম হয়েছেন এক বৃদ্ধ ও এক কিশোর। বিষ মেশানো মাংস খাইয়ে দু’টি চিতাবাঘকে মেরে ফেলার অভিযোগও উঠেছে।

চিতাবাঘ-মানুষ সংঘাত থামাতে বন দফতর মাদারিহাটের বিভিন্ন চা বাগানে ১৫টি খাঁচা পাতে। গত দুই মাসে তাতে ১১টি চিতাবাঘ ধরা পড়েছে।

কিন্তু বন কর্তাদের মতে, এটা সমস্যার সমাধান নয়। তাদের কথায়, এতগুলি চিতাবাঘ খাঁচাবন্দী হওয়ার জন্য সাময়িকভাবে হয়তো মাদারিহাটের চা বাগান এলাকায় তাদের উপদ্রব কমবে। কিন্তু এটা চূড়ান্ত সমাধান নয়।

এই অবস্থায় ব্যবহার হয়না, আবার অযত্নে পড়ে রয়েছে- জঙ্গল লাগোয়া বিভিন্ন চা বাগানের এ ধরণের জমি অধিগ্রহনের কথা ভাবতে শুরু করলেন বন দফতরের কর্তারা৷ জলদাপাড়ার ডিএফও কুমার বিমল বলেন, “ওই জমিগুলি ব্যক্তিগত জমি নয়৷ সবটাই লিজ জমি। আর সে জন্যই ওই জমিগুলো যদি চা বাগান কর্তৃপক্ষ ব্যবহার না-ই করেন, তবে অযত্নে ফেলে রাখার বদলে আমাদের দিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে একটা প্রস্তাব রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হচ্ছে।’’ ডিএফও জানান, এমনটা হলে, ওই জমিতে বেড়া দিয়ে জঙ্গলের আয়তন বৃদ্ধি সম্ভব হবে৷ তেমনই হাতিদের করিডরের সমস্যাও অনেকটা দূর হবে। স্বাভাবিকভাবে, এর ফলে সেখানে বন্যপ্রাণী-মানুষ সংঘাতের সম্ভবনাও অনেকটাই কমে যাবে।

তবে প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, বন দফতর প্রস্তাব পাঠালে কিংবা বাগান মালিকরা তাতে রাজি হলে জমির বদলে তাঁদের ক্ষতিপূরণ প্রদানেরও একটা বিষয় থাকবে। ফলে প্রস্তাব পাওয়ার পর সব দিক বিবেচনা করে রাজ্য সরকার কী সিদ্ধান্ত নেয় সেটাও দেখার রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Leopard Tea garden Forest Department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE