Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

জয়ের মার্জিন পাল্টে গেল হারের অঙ্কে

শাসকদলের অন্দরেই একটি অংশের ধারণা, সেই কারণেই খাস জলপাইগুড়ি শহরের অধিকাংশ ওয়ার্ডেই বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে। 

প্রতীকী চিত্র।

প্রতীকী চিত্র।

অনির্বাণ রায়
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০৮:০২
Share: Save:

ভোটের পরে জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর অঙ্ক ছিল, জলপাইগুড়ি কেন্দ্রে তৃণমূল জিতছে ১ লক্ষ ৭৬ হাজার ভোটে। আর গণনার দিন নবম রাউন্ড পরে ওই কেন্দ্রে বিজেপির প্রার্থী এগিয়ে ১ লাখ ৭১ হাজার ভোটে।

কী করে ঠিক উল্টো হল হিসেব?

তৃণমূলের অন্দরেই শোনা যাচ্ছে বেশ কয়েকটি উত্তর। দলের এক যুব কর্মী গণনাকেন্দ্রের কাছে দলের শিবিরে ছিলেন সকাল থেকে। আস্তে আস্তে শিবির ফাঁকা হতে শুরু করে। সৌরভ নিজেও বেলা তিনটে নাগাদ শিবির থেকে বেরিয়ে যান। সেই শিবিরের কাছে দাঁড়িয়েই ওই যুব নেতা বলে ফেলেন, কেউই জেলা নেতাদের বিরাগভাজন হতে চাননি, তাই কেউই সত্যি কথাটা বলেননি। তাঁর কথায়, ‘‘ভোটের আগে বৈঠকে জেলা নেতারা জানতে চান, কত ভোটের লিড দিচ্ছেন? কিন্তু কোথাও কোনও সমস্যা রয়েছে কি না, তা জানতে চাওয়া হয়নি।’’ আবার শাসক দলের এক ছাত্র নেতা বললেন, “নেতারা সারা বছর নিজেদের মধ্যে মারামারি করেছেন।’’ তৃণমূলের এই অংশটির ধারণা, এই কারণেই দু’মাস আগে জলপাইগুড়ির দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন সার্কিট বেঞ্চের উদ্বোধন হওয়ার পরে সেই ফসলও ভোটে তুলতে পারেনি তৃণমূল।

শাসকদলের অন্দরেই একটি অংশের ধারণা, সেই কারণেই খাস জলপাইগুড়ি শহরের অধিকাংশ ওয়ার্ডেই বিজেপি এগিয়ে গিয়েছে।

সৌরভের বক্তব্য, ‘‘আমাদের অন্তর্দ্বন্দ্ব নেই। ধর্মীয় মেরুকরণ করেছে বিজেপি।’’ জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় কিন্তু স্বীকার করে নেন, ‘‘আমরা পরিস্থিতি আন্দাজ করতে পারিনি। কেন পারিনি, সেটা ভাবা দরকার।’’

বিজেপির প্রার্থী জয়ন্ত রায়ের অবশ্য বক্তব্য, ‘‘চোরাস্রোতের মতো দেশ জুড়ে বইতে থাকা মোদী-হাওয়া এবং তৃণমূল সরকার বিরোধী ক্ষোভেই মানুষ বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন।’’

যদিও বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে সহমত হচ্ছেন না তাঁর দলের নেতারাই। বিজেপি নেতারা প্রকাশ্যেই স্বীকার করছেন, ‘বামের ভোট রামে না পড়লে’ এই জয় সম্ভব ছিল না। বাম নেতারা অবশ্য তা স্বীকার করছেন না।

তবে তৃণমূলের কোনও কোনও নেতার দাবি, পঞ্চায়েত ভোটে ‘সন্ত্রাসের’ অভিযোগও এ বার লোকসভা ভোটে পরাজয়ের কারণ। ভোটের আগে কেন্দ্রীয় বাহিনীর টহলে শহর লাগোয়া পাহারপুরের মহিলারা জওয়ানদের কাছে অভিযোগও করেছিলেন, পঞ্চায়েতে তাঁদের ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। তৃণমূল নেতরাই কবুল করছেন, সেই ক্ষোভ তাঁদের বিরুদ্ধে গিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE