বালুরঘাটে অর্পিতা ঘোষ। নিজস্ব চিত্র
ব্যক্তিগত গুণগান গেয়ে তাঁকে ভোট দেওয়ার জন্য বালুরঘাটের মানুষের কাছে মরিয়া আবেদন রেখেছিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। সেই আবেদন বিফলেই পর্যবসিত হল শেষপর্যন্ত। মুখ্যমন্ত্রীর সেই প্রার্থী অর্পিতা ঘোষকে ফিরিয়ে দিল বালুরঘাট। এ দিন শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়েও হেরে গেলেন অর্পিতা। বালুরঘাট লোকসভা আসনে বিজেপির নতুন মুখ, প্রার্থী সুকান্ত মজুমদারকে বেছে নিলেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বড় একটা অংশের মানুষ। সুকান্ত ৩৩৫৫৫ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছেন।
গতবারের সাংসদ অর্পিতা এবার পেয়েছেন ৫০৫০৯৯ ভোট। সুকান্তের ঝুলিতে গিয়েছে ৫৩৮৬৫৪টি ভোট। ৭২৮৩৩ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে রয়েছেন আরএসপির রণেন বর্মণ। কংগ্রেসের সাদেক সরকার পেয়েছেন ৩৬৬০৬ ভোট। বৃহস্পতিবার সকালে বালুরঘাট কলেজের গণনাকেন্দ্রে প্রথম তিন রাউন্ডে তৃণমূল প্রার্থী অর্পিতা এগিয়ে থাকলেও চতুর্থ রাউন্ড থেকে বিজেপি প্রার্থী সুকান্ত এগোতে শুরু করেন। এরপর গণনা যত এগিয়েছে বালুরঘাট কেন্দ্রে সুকান্ত ও অর্পিতার মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই চলতে থাকে। উত্তেজনা এতটাই চরমে ওঠে যে, দুই দলের সমর্থকরা এ দিন গণনা কেন্দ্রের সামনে থেকে সরে যান। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় রাউন্ডে যথাক্রমে ৭৫০০, ৫০০০ ও ১৫০ ভোটের লিড পান অর্পিতা। কিন্তু চতুর্থ রাউন্ডে বিজেপি প্রার্থী এগিয়ে যান ৪৫০০ ভোটে। তার পরেই তৃণমূল কর্মীরা এলাকা ছেড়ে চলে যান। এ দিন তাঁদের প্রার্থী জিতছেনই ধরে নিয়ে সকাল থেকেই গণনাকেন্দ্রের সামনে প্রায় শিবির করে অপেক্ষা করছিলেন তৃণমূল কর্মীরা।
এ দিকে, চতুর্থ রাউন্ডের পর বিজেপি প্রার্থী এগিয়ে যাওয়ায় অর্পিতা মেজাজ হারান। গঙ্গারামপুর, বালুরঘাট-সহ বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূলের ব্যাপক ভরাডুবির জন্য তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। গণনাকেন্দ্রের মিডিয়া সেলে বসে অর্পিতা ফোন করে তৃণমুল জেলা সভাপতি বিপ্লব মিত্রকে ওই সব এলাকার অঞ্চল সভাপতিদের বদলে ফেলার দাবি করেন। এই কেন্দ্রে গত ২০১৪ সালে এই আসনে অর্পিতা এক লক্ষেরও বেশি ভোটে জিতেছিলেন। বিপ্লব এ দিন দাবি করেন, দলের ভোট অনেকটাই ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে। বামেদের ভোটেই জিতল বিজেপি। আরএসপির রাজ্য সম্পাদক বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, ‘‘তৃণমূলের লাগামহীন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে একমাত্র বিজেপি নিরাপত্তা দিতে পারবে বলে মানুষ মনে করেছেন। ফলে বামেদের বদলে তাঁরা বিজেপিকে ভোট দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy