দুরবস্থা: পরিত্যক্ত পোল্ট্রি ফার্মে ঠাঁই। জাজইলে। নিজস্ব চিত্র
পরিত্যক্ত পোল্ট্রি ফার্মের খাঁচাই ১৩ জন পরিযায়ী শ্রমিকের আস্তানা। কেউ ফিরেছেন মহারাষ্ট্র থেকে কেউ চেন্নাই। জানা গিয়েছে, ট্রেন থেকে নেমে এলাকার প্রাথমিক স্কুলে তাঁরা ১৪ দিনের জন্য কোয়রান্টিনে থাকতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেখানে আগে থেকেই শ্রমিকদের ভিড়। শেষ পর্যন্ত গ্রামের বাসিন্দাদের পরামর্শে পরিত্যক্ত মুরগির খামারে আশ্রয় নেন ১৩ জন। হবিবপুর ব্লকের জাজইল পঞ্চায়েতের শালবোনাপাড়া গ্রামে।
শ্রমিকদের আক্ষেপ, গ্রামের পরিচিতদের অনেকেই এখন তাঁদের অন্য চোখে দেখছেন। ভিন্ রাজ্য থেকে ফেরার পরে লালারস পরীক্ষার ব্যবস্থা না হওয়ায় ক্ষুব্ধও ওই শ্রমিকরা।
মহারাষ্ট্রের পুনে সংলগ্ন একটি এলাকায় নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করতেন হবিবপুর ব্লকের জাজইল পঞ্চায়েতের শালবোনাপাড়া গ্রামের উমা রায়, স্বাধীন দাস, সন্তোষ রায়। রবিবার রাত ন'টায় পুণে থেকে আসা ‘শ্রমিক স্পেশ্যাল' ট্রেনে তাঁরা মালদহে ফেরেন। তাঁদের অভিযোগ, ট্রেনে ওঠার পর থেকে শুকনো খাবার ছিল ভরসা। দু'দিনের সফরের ঝক্কি সামলে মালদহ স্টেশনে এসে মিলেছিল ভাত, সয়াবিন আর ডাল। মালদহ স্টেশন থেকে বাড়ি ফেরা নিয়ে ছিল বিড়ম্বনা। সরকারি বাস দেওয়া হলেও বুলবুলচণ্ডিতে নামিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের। তখন রাত বারোটা। শেষ পর্যন্ত এক হাজার টাকা দিয়ে স্থানীয় এক জনের ভুটভুটি ভাড়া করে গভীর রাতে শালবোনাপাড়া গ্রামে পৌছন তাঁরা। এক শ্রমিক উমা রায় বলেন, "আমরা ভেবেছিলাম স্থানীয় আগ্রা ডোবাপাড়া প্রাইমারি স্কুলে ১৪ দিনের জন্য কোয়রান্টিনে থাকব। কিন্তু এসে দেখি স্কুলের চারটি ক্লাসরুমে গিজগিজ করছে অন্য পরিযায়ী শ্রমিকরা। রাতটুকু স্কুলের বারান্দায় কাটিয়েছি। গ্রামে বিকল্প কোনও স্কুল বা সরকারি পরিকাঠামো নেই। শেষ পর্যন্ত ফাঁকা এলাকায় থাকা একটি পরিত্যক্ত পোল্ট্রি ফার্মে আমাদের থাকার পরামর্শ দেন গ্রামবাসীরা। সেখানেই আছি। চেন্নাই থেকে আরও দশ জন আসেন। তাঁরাও এখানে আছেন।" ওই পরিযায়ী শ্রমিকরা বলেন, ‘‘পোল্টি ফার্মে থাকতেও কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু পরিবার-পরিজনের সুরক্ষার কথা ভেবে, সমাজের কথা ভেবে আমরা এই কষ্টকে নিজের মনে করে নিয়েছি।’’
হবিবপুরের বিডিও শুভজিৎ জানা বলেন, "পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য সরকারি কোয়রান্টিন রয়েছে। ওই শ্রমিকদের ক্ষেত্রে কি হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে দেখছি।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy