গাপ্পি মাছ
মশার বংশবিস্তার রুখতে এ বার দাওয়াই গাপ্পি মাছ। সরকারি সূত্রের খবর, কোচবিহার শহর এলাকার নর্দমাগুলিতে ওই মাছ চাষ করে ছাড়ার ব্যাপারে আলোচনা শুরু হয়েছে। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে এ মাসেই ওই মাছ চাষের ব্যাপারে কোচবিহার পুরসভার কর্তাদের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর কথা ভাবছেন মৎস্য দফতরের কর্তারা।
পুরসভার তরফে সবুজ সংকেত মিললে মাছের চাষ শুরু করা হবে। মশার উপদ্রবে নাজেহাল দশার অভিযোগ ঠেকাতে ইতিমধ্যে কোচবিহার শহর জুড়ে স্প্রে করা শুরু হয়েছে। আবর্জনা, নর্দমা সাফাইয়েও জোর দেওয়া হয়েছে। বাসিন্দাদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, তাতেও মশার উপদ্রব কমছে না। এই পরিস্থিতিতে বংশবৃদ্ধি রুখতে লার্ভা অবস্থায় মশা নিধন করতে জোর দেওয়া উচিত।
মৎস্য দফতরের কোচবিহার জেলা আধিকারিক অলোকনাথ প্রহরাজ বলেন, “মশার বংশবৃদ্ধি রুখতে গাপ্পি মাছ চাষ করে কাজে লাগানো যেতেই পারে। নর্দমায় মশার লার্ভা ওই মাছেরা চটপট খেয়ে নেয়। বিষয়টি নিয়ে কোচবিহার পুরসভা কর্তাদের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠান হবে।” কোচবিহার পুরসভার চেয়ারপার্সন রেবা কুণ্ডু বলেন, “মশার উপদ্রব ঠেকাতে সব রকম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তেল, ধোঁয়া, ব্লিচিং পাউডার ছড়ানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ওই কাজে গাপ্পি মাছ ব্যবহার নিয়ে কোনও প্রস্তাব এলে তা চিন্তাভাবনা করে দেখা হবে।”
বাসিন্দাদের অভিযোগ, কোচবিহার পুরসভা জুড়ে মশার উপদ্রব রয়েছে। সব ওয়ার্ডেই মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ মানুষ। সন্ধের পরে মশার উপদ্রব বাড়ছে। এই অবস্থার মধ্যে কোচবিহার জেলা হাসপাতালে প্রায় প্রতিদিন জ্বরে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসার জন্য আসছেন। সব মিলিয়ে তাই চিন্তা বেড়েছে। বিভিন্ন মহল থেকে মশা নিধনে বিকল্প প্রকল্পের দাবিও উঠছে।
কোচবিহার নাগরিক অধিকার রক্ষা সমিতির সভাপতি রাজু রায় বলেন, “মশা মারতে পুরসভা কাজ শুরু করেছে। বস্তি, খামার, বাজার এলাকাগুলিতে ওই প্রতিষেধক ব্যবহারের ব্যাপারে আরও জোর দেওয়া দরকার। বিকল্প হিসেবে সারা বছর জমা জল থাকে এমন নর্দমা, জলায় গাপ্পি মাছ ছাড়ার কথাও ভাবা দরকার।”
মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, গাপ্পি মাছ অনেকটা ছোট আকৃতির। কম অক্সিজেনযুক্ত ও অপেক্ষাকৃত দূষিত জলেও ওই মাছ বেঁচে থাকতে কোনও অসুবিধে হয় না। সাধারণ ভাবে ওই মাছের গড় আয়ু ৩-৪ বছর। প্রতি ঘণ্টায় একটি মাছ ২০০ মশার লার্ভা খেয়ে ফেলতে পারে। মৎস্য দফতরের কয়েকজন কর্মী জানান, প্লাস্টিকের ড্রামে বিশেষ পদ্ধতিতে গাপ্পি মাছ চাষ করা যেতে পারে। আর্থিক খরচও বেশি নয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy