ঘটনাস্থলে: লকেট। নিজস্ব চিত্র
কখনও ‘এনকাউন্টার’-এর পক্ষে সওয়াল করলেন। কখনও ধমক দিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপারকে। শনিবার ধানতলা-কাণ্ড নিয়ে দিনভর বিতর্কে জড়ালেন বিজেপির মহিলা মোর্চার রাজ্যনেত্রী তথা সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্য করার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছে তৃণমূলও। তৃণমূলের দাবিকে আমল না দিয়ে ঘটনাটি রাজ্য সরকার ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন লকেট।
তরুণীর অর্ধনগ্ন অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধার হায়দরাবাদ-কাণ্ডেরই ছায়া বলে দাবি করে সরব হন গ্রামবাসীর একাংশ। পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে আগেই সরব হয়েছে বামেরা। শুক্রবার রাতেই শহর জুড়ে মোমবাতি মিছিল করেছেন বাম নেতা-কর্মীরা। এ বার আসরে নামল বিজেপি।
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ মালদহ মেডিক্যালে হরিশ্চন্দ্রপুরে নির্যাতিতা শিশুকে দেখতে আসেন লকেট। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন লকেট এবং বিজেপির অন্য নেত্রীরা মাতৃমা বিভাগে ঢুকে পড়েন। যদিও শিশু বিভাগে যত্রতত্র রোগীর পরিজনদের প্রবেশের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেখান থেকে লকেট দলবল নিয়ে চলে যান ধানতলার ঘটনাস্থলে। গ্রামবাসীর সামনে তিনি বলেন, “মালদহের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু হায়দরাবাদ পুলিশের এনকাউন্টারের পরে সারা দেশ জুড়ে এখন তোলপাড় হচ্ছে, তাই পুলিশ পরিকল্পিত ভাবে এই তরুণীর পরিচয় গোপন করছে।”
এ রাজ্যের পুলিশ বিচার দিতে পারবে না বলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। যদিও শুক্রবারই মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটলে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে ৩-১০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে হবে। লকেটের এনকাউন্টারের পক্ষে সওয়াল শুনে গ্রামের মহিলাদের একাংশ আবার দোষীদের প্রকাশ্যে পুড়িয়ে মারার দাবি জানান। লকেট বলেন, “গ্রামের মহিলাদের জোটবদ্ধ হয়ে আন্দোলন করতে হবে।”
আর এখানেই উঠছে প্রশ্ন। গ্রামবাসীর একাংশই বলছেন, এই ঘটনায় আমরা রাজনীতি চাই না। পুলিশ দোষীদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিক। তৃণমূলের জেলা সভাপতি মৌসম নুর বলেন, “দোষীদের চিহ্নিতকরণের কাজ চলছে। এরই মধ্যে বিজেপি নেত্রীরা গ্রামে গিয়ে উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন। এতে জেলার শান্তি বিঘ্নিত হবে।” তৃণমূলের দাবিকে আমল না দিয়ে লকেট শহর জুড়ে মিছিল করেন। তার পরে দলবল নিয়ে সোজা ঢুকে পড়েন পুলিশ সুপার অফিস চত্বরে। সেই সময় অফিসে ছিলেন না পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া। তিনি না থাকায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অরিন্দম সরকারকে ধমক দেন লকেট। চলে পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান। পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বচসাতেও জড়িয়ে পড়েন তিনি। এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্তাদের একাংশ।
এখানেই থেমে না থেকে অফিস চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করে লকেট। বলেন, “পুলিশ সুপারকে আগাম জানানো সত্ত্বেও তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করেননি। তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।” পুলিশ সুপার বলেন, “সমস্ত দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy