Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শৌচাগার নেই, তবু নির্মল জেলা

জেলাকে নির্মল করতে প্রশাসন কোচবিহারে একাধিক কর্মসূচি নেয়। জেলাশাসক থেকে শুরু করে প্রশাসনের আধিকারিকরা ভোর থেকে এলাকায় এলাকায় টহল দেন। মন্ত্রী-সাংসদরাও ভোরের আলোয় এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৭ ০৯:৪০
Share: Save:

কারও বাড়িতে শৌচাগার নেই। ভোরের আলোতে বা রাতের অন্ধকারে এখনও বাঁশঝাড় থেকে খোলা মাঠেই যেতেই তাঁরা অভ্যস্ত। কোথাও আবার নদীর ধারে দুর্গন্ধে যেতে পারেন না বাসিন্দারা। নির্মল জেলা কোচবিহারের এমনই চিত্রে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বাসিন্দাদের মনে। অভিযোগ উঠেছে, জেলায় সব বাড়িতে যেখানে শৌচাগার তৈরি হয়নি সেখানে দিল্লি থেকে নির্মল পুরস্কার কী করে দেওয়া হল কোচবিহারকে?

বাসিন্দাদের অনেকেরই দাবি, খাতায়-কলমে জেলাকে নির্মল দেখিয়ে পুরস্কার আনা হয়েছে। আদতে বাস্তব পরিস্থিতি অন্যরকম। কোচবিহারের জেলাশাসক কিছু দিন আগেই দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি বলেন, “আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখব।”

সব বাড়িতে যে শৌচাগার নেই, সে কথা দিন কয়েক আগে জানতে পেরেছিলেন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাই। দিন কয়েক আগে মাথাভাঙা ১ নম্বর ব্লকের প্রশাসনের কর্তারা কেদারহাটের বাগদিপাড়ায় পরিদর্শনে যান। সেখানে বারো ঘর বাসিন্দার কারও বাড়িতেও শৌচাগার নেই। এখনও তাঁরা শৌচকর্ম করতে বাঁশঝাড়ে যে যান, সে কথা সবার সামনেই স্বীকার করেছেন। শুধু ওই এলাকাই নয়, ওই ব্লকেরই ছাট খাটেরবাড়িতেও অনেক বাড়িতেই শৌচাগার নেই। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তালেব আজাদ বলেন, “বাগদিপাড়ার বাসিন্দারা কাজের জন্য মাঝে মাঝেই বাইরে যান। সে জন্য হয়তো কোনওভাবে সেখানে শৌচাগার হয়নি। আমরা দ্রুত ওই এলাকায় শৌচাগার নির্মাণের কাজ করব।” পাশাপাশি তিনি দাবি করেন, ছাট খাটেরবাড়িতে তিনটি কমিউনিটি টয়লেট তৈরি করা হয়েছে।

জেলাকে নির্মল করতে প্রশাসন কোচবিহারে একাধিক কর্মসূচি নেয়। জেলাশাসক থেকে শুরু করে প্রশাসনের আধিকারিকরা ভোর থেকে এলাকায় এলাকায় টহল দেন। মন্ত্রী-সাংসদরাও ভোরের আলোয় এলাকায় ঘুরে বেরিয়েছেন। স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে সমস্তরকম শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেও সচেতনতামূলক প্রচার চালানো হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে তথ্যচিত্র। বিজেপির অভিযোগ, শুধু মাথাভাঙায় নয়, জেলার ফলিমারি, ঢাংঢিংগুড়ি, শালবাড়ি সহ পাঁচ মহকুমা কোচবিহার সদর, দিনহাটা, তুফানগঞ্জ ও মেখলিগঞ্জে বহু পরিবারে এখনও শৌচাগার নেই। এমনকি কিছু কিছু মানুষ টাকা জমা দিয়েও সরকারি শৌচাগার পাননি। দলের কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “পুরস্কার পাওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে এমন তড়িঘড়ি ভাবে খাতায়-কলমে হিসেব মেলানো হয়েছে। আমরা প্রশাসনকে ইতিমধ্যে জানিয়েছি। আমরা চাই দ্রুত শৌচাগার নির্মাণ হোক।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE