প্রতীকী ছবি।
কোনও এলাকায় পুলিশ কমিশনারেট থাকলে, সেই এলাকায় সাধারণত মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতও থাকে। আইনজীবীরা জানাচ্ছেন, সিআরপিসি’র-১৯৭৩ (২ অব ১৯৭৪) অনুসারে কমিশনারেট তৈরি হলে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত তৈরি করা যায়। তাতে একটি আদালতেই কমিশনারেটের সব আসামী এবং বিচারপ্রার্থীদের পাঠানো সম্ভব হবে। কিন্তু শিলিগুড়ি কমিশনারেটের ছবিটা ভিন্ন। এখানে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত না থাকায় থানাগুলোকে তাদের সংশ্লিষ্ট জেলার আদালতে অভিযুক্তদের বিচারের জন্য নিয়ে যেতে হয়।
কমিশনারেটের প্রধাননগর, মাটিগাড়া, বাগডোগরার মতো থানাগুলো শিলিগুড়ি আদালতে অভিযুক্তদের নিয়ে যায়। অন্যদিকে ভক্তিনগর, এনজেপি থানা বা আশিঘর, আমবাড়ি ফাঁড়ির পুলিশকর্মীদের অভিযুক্তদের নিয়ে যেতে হয় জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে। ২০১২ সালের অগস্টে চালু হয় শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেট। দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলা মিলিয়ে শিলিগুড়ি শহর এবং লাগোয়া এলাকার থানাগুলো নিয়ে কমিশনারেট গঠিত হয়। সেই সময় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরব হয় বৃহত্তর শিলিগুড়ি নাগরিক মঞ্চ। জলপাইগুড়িতে হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ চালু হওয়ার পরে আবার তোলা হচ্ছে সেই দাবি।
কমিশনারেট চালুর পরপরই ওই দাবিতে শহরে নাগরিক কনভেনশন হয়। মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে একাধিক মন্ত্রীকে দাবিপত্র পাঠানো হয়। কিন্তু দুই জেলার আলাদা আইনি পরিকাঠামো ও প্রশাসনিক ব্যবস্থায় তা চালু করা যায়নি। শিলিগুড়ির আইনজীবীদের একটা বড় অংশ মেট্রোপলিটন আদালত চাইলেও জলপাইগুড়ির একাংশ তাতে রাজি ছিলেন না। সেই নিয়েও চলে টানাপড়েন। পুলিশ কমিশনারেটের সাত বছর হয়ে গেলেও মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত কেন চালু হল না সেই প্রশ্ন তুলেছেন শিলিগুড়ির আইনজীবীদের একাংশ।
কমিশনারেটের ভক্তিনগর ও এনজেপি থানা ছাড়াও আশিঘর, আমবাড়ি এবং মিলনপল্লি ফাঁড়ির পুলিশ কর্মীদের শিলিগুড়ি আদালতের বদলে রোজ ৪৫ কিমি দূরে জলপাইগুড়ি জেলা আদালতে অভিযুক্তকে নিয়ে যেতে হয়। যার ফলে থানার গাড়ি, পুলিশকর্মীর একাংশকে সারাদিন জলপাইগুড়ি গিয়ে বসে থাকতে হয়। পাশাপাশি, শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি যাতায়াত করতে গিয়ে নাজেহাল হচ্ছেন বিচারপ্রার্থীদের পরিবারের লোকও। শিলিগুড়ির আইনজীবীদের একাংশকেও নিয়মিত জলপাইগুড়ি আদালতে যেতে হয়। না হলে জলপাইগুড়ির আইনজীবীদের সঙ্গে সমন্বয় করে মামলা লড়তে হচ্ছে বলে জানান তাঁরা।
বৃহত্তর নাগরিক মঞ্চের সম্পাদক তথা আইনজীবী রতন বণিক বলেন, ‘‘বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি কমাতে শিলিগুড়িতে দ্রুত এই কোর্ট তৈরি করা প্রয়োজন। সার্কিট বেঞ্চ তো হল, এ বার আমাদের এখানে কাজ হোক।’’ ওই আদালত চালুর দাবি জানিয়েছেন শিলিগুড়ি বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সভাপতি পীযূষ ঘোষও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy