Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

উদ্ধার হোক অস্ত্র, দাবি সব দলের

বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, গত পঞ্চায়েত ভোটে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়েই বিরোধীদের বহু আসনে মনোনয়ন পত্র তুলতে দেয়নি রাজ্যের শাসক দলের কর্মীরা। এমনকি ভোটের সময় পুলিশের সামনেই বহু জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৬ মার্চ ২০১৯ ০৭:৩৪
Share: Save:

কেউ স্টেনগান নিয়ে দাপিয়ে বেড়িয়েছে। কারও হাত থেকে উদ্ধার হয়েছে সেভেন এমএম। প্রকাশ্যে গুলি চালাতেও দেখা গিয়েছে একাধিক জনকে। পঞ্চায়েত নির্বাচন ও তার পরে কয়েক মাস ধরে এই দৃশ্য হরদম চোখে পড়েছে কোচবিহারে। তার সামান্য কয়েক মাসের হেরফেরে লোকসভা নির্বাচন হচ্ছে। এই নির্বাচনে যাতে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দুষ্কৃতীরা দাপিয়ে বেড়াতে না পারেন, সে জন্য আগাম ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে শাসক-বিরোধী সব দলই।

বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, গত পঞ্চায়েত ভোটে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়েই বিরোধীদের বহু আসনে মনোনয়ন পত্র তুলতে দেয়নি রাজ্যের শাসক দলের কর্মীরা। এমনকি ভোটের সময় পুলিশের সামনেই বহু জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তৃণমূল কর্মীদের দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গিয়েছে বলে দাবি বিরোধীদের। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভানেত্রী মালতী রাভা বলেন, “পুলিশ ভোটের আগেই সমস্ত অস্ত্র উদ্ধার করতে ব্যবস্থা নিক, সেই দাবি আমরা জানিয়েছি। পরিস্থিতির দিকে নজর রেখে প্রয়োজনে নির্বাচন কমিশনে অভিযোগ জানাব।”

পুলিশ সূত্রে অবশ্য জানানো হয়েছে, পঞ্চায়েত নির্বাচনের পর থেকে এখনও পর্যন্ত অন্ততপক্ষে ১০০টিরও বেশি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে অন্ততপক্ষে ১৫০ জন। অস্ত্র ব্যবসার সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ সুপার অভিষেক গুপ্ত বলেন, “গত কয়েক মাসে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। সব জায়গায় নজরদারি রয়েছে। তেমন অভিযোগ পেলেই গ্রেফতার করা হবে।”

গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় দিনহাটায় যুব ও মূল তৃণমূলের লড়াইয়ে খুনের অভিযোগও ওঠে। ওকরাবাড়ি ও গীতালদহের দুই তৃণমূল কর্মীর বোমায় হাত উড়ে যায়। দিনহাটার আটিয়াবাড়ি থেকে তৃণমূল নেতা নরেশ বর্মণের কাছ থেকে স্টেনগান উদ্ধার হয়। দিনহাটার নয়ারহাট ও সংলগ্ন এলাকার পাঁচ জনকে ডাকাতির চেষ্টার অভিযোগে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকেও পিস্তল উদ্ধার হয়। তাদের সঙ্গে শাসক দলের যোগ রয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা।

পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরে পরে দিনহাটার ওই গন্ডগোল নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ নিজেই আইনশৃঙ্খলা নিয়ে অভিযোগ করেন। শাসক দলের অবশ্য অভিযোগ, বিজেপি কর্মীদের একটি অংশের হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। মাথাভাঙায় গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল কর্মী খুনে অভিযোগ উঠেছিল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। দিনহাটার বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা নিশীথ প্রামাণিক বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তাঁর একাধিক অনুগামীর বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। নিশীথবাবু অবশ্য আগেই জানিয়েছেন, তাদের বিরুদ্ধে ছক কষে মামলা দেওয়া হয়েছে।

সিপিএমের কোচবিহার জেলা সম্পাদক অনন্ত রায় বলেন, “যারা আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে রাজনীতি করার চেষ্টা করছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাব। যাতে দ্রুত সমস্ত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয় সে ব্যপারে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।” তৃণমূল নেতা ও বিধায়ক উদয়নবাবু বলেন, “যাদের হাতে অস্ত্র রয়েছে তারা দুষ্কৃতী। পুলিশ ইতিমধ্যেই অনেক অস্ত্র উদ্ধার করে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করেছে। বাকি ক্ষেত্রেও দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশা করছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE