বোন: পরীক্ষার ফর্ম ভর্তি করতে বোন আমানুরাকে নিয়ে কলেজে রাবেয়ার দিদি। নিজস্ব চিত্র
পুলিশ ও প্রশাসনের অনুরোধে অবশেষে রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে একটি বেসরকারি সংস্থার অধীনে অস্থায়ী কর্মীর পদে যোগ দিলেন রাবেয়া খাতুন। রাবেয়ার বোন আশনুরাও এ দিন ইসলামপুর কলেজে পুলিশ প্রহরায় প্রথম বর্ষের পরীক্ষার জন্য ফর্ম ভর্তি করলেন।
করণদিঘির ছাগলকাটির বাসিন্দা এই দুই বোন ২২ ফেব্রুয়ারি হেমতাবাদে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা বেষ্টণী ভেঙে সভামঞ্চে ওঠার চেষ্টা করেন। রাবেয়া মুখ্যমন্ত্রীর কাছ পর্যন্ত পৌঁছেও যান। আশনুরা ধরা পড়ে যান আগেই। তা নিয়ে রাজ্য জুড়ে হইচই পড়ে। তারপরে বেশ কয়েকদিন দুই বোনকেই রায়গঞ্জ সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি তাঁরা সেখান থেকে ছুটি পেয়েছেন। পুলিশকর্মীরা দুই বোনকে ২০ হাজার করে টাকাও দিয়েছেন।
সোমবার দুপুরে রাবেয়া হাসপাতালে গিয়ে ওয়ার্ডগার্ল পদে যোগ দিয়েছেন।
তবে তিনি সন্তুষ্ট নন। রাবেয়ার দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হওয়ার অনেক আগেই আমার এই চাকরি নির্ধারিত ছিল। আমরা নয় বোন ও তিন ভাই। মা ও দুইভাই দীর্ঘদিন অসুস্থ।’’
তাঁর অভিযোগ, টানা ৯ দিন চিকিৎসা ও তদন্তের নামে তাঁদের হাসপাতালে আটকে রাখা হয়। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশ ও প্রশাসনের অনুরোধে আমি আপাতত হাসপাতালে অস্থায়ী কর্মীর পদে যোগ দিলাম। কিন্তু এই চাকরি করে আমাদের সংসার, মা ও ভাইদের চিকিৎসা চালানো সম্ভব নয়। তাই আমার ও আমার বোনের সরকারি চাকরির দাবিতে আমাদের লড়াই চলবে। আমরা প্রয়োজনে কলকাতায় নবান্ন বা কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হব।’’
জেলাশাসক আয়েশা রানির বক্তব্য, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সভামঞ্চে ওঠার অনেক আগেই পারিবারিক সমস্যার কথা জানাতে রাবেয়া আমার কাছে এসেছিলেন। প্রশাসন ওই পরিবারটিকে গীতাঞ্জলি আবাস যোজনায় ঘর সহ সাধ্য মতো সব রকম সরকারি সাহায্য করেছে। প্রশাসনিক প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাবেয়াকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ওয়ার্ডগার্লের পদে চাকরিও দেওয়া হল। এর পর আর প্রশাসনের কী করার থাকতে পারে?’’
আশনুরার ভাল নাম আমানুরা। এ দিন পুলিশি প্রহরায় কলেজে ফর্ম ভর্তি করতে গিয়েছিলেন। যা দেখে রীতিমত হকচকিয়ে যান ছাত্রছাত্রীরা। তবে পরেই চিনতে পারেন সকলে। আমানুরা ইসলামপুর কলেজেই কলা বিভাগে পড়াশোনা করে। কলেজের কর্মীরা জানান, নিয়ম মেনে তাঁর ফর্ম ভর্তি করা হয়েছে। ইসলামপুর কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘মেয়েটি খুবই দুঃস্থ বলেই জানি। কলেজের ভর্তি হওয়ার পর মেয়েটির সঙ্গে একাধিক বার কথা হয়েছে।’’ করণদিঘি থানার আইসি পরিমল সাহা অবশ্য পুলিশি প্রহরার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy