থমকে: বালুরঘাট-হিলি রেল সম্প্রসারণের কাজ। নিজস্ব চিত্র
বাজেট বরাদ্দের পর চার মাস কেটে গিয়েছে। কিন্তু বালুরঘাট-হিলি রেলপথ সম্প্রসারণের জন্য জমি অধিগ্রহণে রেলের তরফে এখনও কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রেলমন্ত্রী থাকার সময় বালুরঘাট রেলের মানচিত্রে স্থান পায়। পরবর্তী সময়ে মুকুল রায় রেলমন্ত্রী থাকাকালীন দায়িত্ব পেলে হিলি-বালুরঘাট রেলপথের জন্য জমি চিহ্নিতকরণের কাজ শেষ হয়েছিল। বালুরঘাটের খিদিরপুরে আত্রেয়ী নদীর উপর এবং হিলিতে যমুনা নদীর উপর রেলসেতু তৈরির কাজও শুরু হয়। রেলমন্ত্রক তৃণমূলের হাতছাড়া হলে আচমকা সেতু দু’টির কাজ মাঝপথে বন্ধ করে রেলের ঠিকাদার সংস্থা যন্ত্রপাতি গুটিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রেল বাজেটের পর উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের পক্ষ থেকে জমি অধিগ্রহণের প্রক্রিয়া শুরু করতে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমিরাজস্ব) সুদীপ্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘জমি অধিগ্রহণে প্রশাসন তৈরি বলে রেলকে জানিয়ে দেওয়া হয়। তারপর দু’মাস কেটে গেলেও রেলের তরফে কোনও সাড়া মেলেনি।’’ অথচ এ বারে বালুরঘাট-একলাখি রেলপথের উন্নতি এবং হিলি, বুনিয়াদপুর, ইটাহার রেলপথ সম্প্রসারণে ৫১৪ কোটি টাকা কেন্দ্র বরাদ্দ করে।
কিন্তু উত্তর পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজারের পাঠানো সাম্প্রতিক এক চিঠিতে জেলার সংশ্লিষ্ট রেলপথ সম্প্রসারণে জমি অধিগ্রহণে রাজ্য সরকারকে সদর্থক ভূমিকা নিতে হবে বলে মন্তব্য করা হয়েছে। এতে বালুরঘাটের রেল উন্নয়ন কমিটি সিঁদুরে মেঘ দেখছেন। বালুরঘাট রেল উন্নয়ন কমিটির সভাপতি পীযূষকান্তি দেবের আশঙ্কা, রেলের তরফে রাজ্যের উপর দায় চাপিয়ে বাজেট বরাদ্দকৃত ৫১৪ কোটি টাকা অন্য খাতে সরিয়ে নেওয়ার কৌশল হতে পারে। এর বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে তিনি জানান।
রেলের বক্তব্য, বালুরঘাট থেকে হিলি ২৯ কিলোমিটার রেলপথ সম্প্রসারণ প্রকল্পে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা প্রকল্প খরচ ধরে গত বছর মাত্র ৪৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল। অনুরূপভাবে বুনিয়াদপুর থেকে কালিয়াগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ৩৩ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ সম্প্রসারণে ২২১ কোটি টাকা মোট প্রকল্প ব্যয়ের মধ্যে গতবার মাত্র ২৪ কোটি টাকা অর্থ বরাদ্দ হয়েছিল। প্রকল্পের কাজ ত্বরান্বিত করতেই এ বার সেই জায়গায় এক ধাপে বাজেটে অনেক টাকা বাড়ানো হয়েছে। সমন্বয়ের ঘাটতির অভিযোগ ঠিক নয় বলে রেলের এক কর্তা জানান।
বালুরঘাটের বাম বিধায়ক বিশ্বনাথ চৌধুরী বলেন, ‘‘হিলি-বালুরঘাট রেলপথ সম্প্রসারণে জেলার লাগাতার দাবি মেনে রেলমন্ত্রক বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করে। কিন্তু রেলের তরফে এখনও কাজ শুরুর কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না।’’ জমি অধিগ্রহণের বিষয়টি চিঠির মধ্যে আটকে না রেখে সংশ্লিষ্ট রেল কর্তাদের জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করে জমিদাতাদের ক্ষতিপূরণের বিষয়টি চূড়ান্ত করতে হবে বলে বিশ্বনাথবাবু মনে করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy