শোক: কান্নায় ভেঙে পড়েছেন শিক্ষক ও সাহিত্যব্রতী সমর চক্রবর্তীর আত্মীয়-পরিজনেরা। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
জীবনাবসান ঘটল বিশিষ্ট শিক্ষক তথা সাহিত্যব্রতী সমর চক্রবর্তীর। অশ্রুকুমার সিকদারের পর শিলিগুড়ি হারাল আরও এক কৃতী নাগরিককে। মঙ্গলবার রাতে কলকাতার এক হাসপাতালে সমরবাবু প্রয়াত হন। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৬৮ বছর। দীর্ঘদিন তিনি শিলিগুড়ি কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। টানা তিন বছর ছিলেন শিলিগুড়ি প্রাথমিক সংসদের চেয়ারম্যান পদে। রাজ্য সরকার ২০১৫ সালে তাঁকে বঙ্গরত্ন সম্মানে ভূষিত করেছিল।
দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ছিলেন সমরবাবু। হয়েছিল বাইপাস সার্জারি। চেক-আপের জন্য কলকাতায় যাওয়ার পর শ্বাসকষ্টের সমস্যা হওয়ায় তাঁকে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই শোকের ছায়া নেমে আসে শিক্ষা-সংস্কৃতি মহলে।
বুধবার সন্ধ্যায় সমর চক্রবর্তীর দেহ শিলিগুড়িতে পৌঁছনোর পরে প্রথমে আশ্রমপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পরে প্রাথমিক সংসদ, দীনবন্ধু মঞ্চ, শিলিগুড়ি কলেজ, শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ার অর্গানাইজেশনে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া জগতের মানুষজন। শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব এবং মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। রাতেই কিরণচন্দ্র শ্মশানে তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।
শিলিগুড়ি কলেজে গৌতম দেবের শিক্ষক ছিলেন সমরবাবু। গৌতম দেবের কথায়, ‘‘স্যারের মৃত্যুতে অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেল। সাহিত্য, ভাষা, সমাজভাবনা— সব ক্ষেত্রে ওঁর অবাধ বিচরণ ছিল। আমার দফতরের বহু বাজেট বক্তৃতায় ব্যবহৃত শব্দ-বাক্য স্যারেরই তৈরি!’’ মেয়র অশোকবাবু বলেন, ‘‘শিলিগুড়ির শিক্ষা ও সাহিত্য জগতে বড় ক্ষতি হয়ে গেল।’’
আদতে বীরভূমের বাসিন্দা সমরবাবুর কলেজ-জীবন কেটেছে শান্তিনিকেতনে। ইংরেজি সাহিত্যে তাঁর দখল এবং গবেষণা সকলের নজর কেড়েছিল। ১৯৭৫ সালে তিনি শিলিগুড়ি কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। ফরাসি ভাষা-সাহিত্যেও অবাধ বিচরণ ছিল তাঁর। উত্তরবঙ্গ উৎসবের লোগোয় ব্যবহৃত ‘উন্মীলন-উজ্জীবন-উদ্যাপন’ শব্দবন্ধ সমর চক্রবর্তীরই চয়ন করে দেওয়া।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy