ফাঁদ: চাবাগানের ছায়া গাছে এভাবেই লাগিয়ে রাখা হয়েছে শেড ট্রি ট্র্যাপিং প্লাস্টিক। নিজস্ব চিত্র
চা বাগানের কাছে গেলেই দেখা যাবে, ছায়া গাছের গায়ে বিভিন্ন রঙের প্লাস্টিক মোড়ানো। আগে ছায়া গাছগুলিকে গোনার সুবিধার জন্য চুন রং করে রাখা হত। কিন্তু এখন এই রঙিন আঠার প্লাস্টিকের চাদর মুড়িয়ে রাখা কিন্তু শুধু বাগানের সৌন্দর্যবৃদ্ধির জন্য নয়। চা গাছের রোগ পোকা ঠেকাতেই এই ধরনের আঠার চাদরের ব্যবহার হচ্ছে। আর এতে সুফলও মিলছে বলে চা বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে দাবি করা হয়েছে।
এই রঙিন প্লাস্টিকের ভিতরের দিকে যেমন আঠা থাকে তেমনই, বাইরের দিকেও আঠা লাগানো থাকে। আর রঙিন প্লাস্টিকের রঙে আকৃষ্ট হয়ে কাছে যেতেই আঠায় আটকে যাচ্ছে পোকা। পোকা বন্দি করার এই ফাঁদ ডুয়ার্সের বহু বাগানে এখন ব্যবহার করা হচ্ছে। বানারহাটের মোগলকাটা চা বাগানের ম্যানেজার মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য জানান চা গাছের পাতার থেকে ৬-৭ ইঞ্চি উঁচুতে ছায়াগাছের মূল কাণ্ডের গায়ে এই প্লাস্টিকের চাদর লাগাতে হয়। মূলত হলুদ প্লাস্টিকেই বেশি পরিমাণে পোকারা আকৃষ্ট হচ্ছে বলে জানান তিনি। এই ধরনের আঠার চাদরের পোশাকি নাম ~শেড ট্রি ট্র্যাপিং প্লাস্টিক@।
চা বাগান কর্তৃপক্ষের তরফে জানা গিয়েছে, বাগানে মূলত দু’ধরনের রোগ পোকার প্রাদুর্ভাব দেখা যায়। এক ধরনের পোকা চা গাছের পাতা কামড়ে খায় অন্য ধরনের পোকা চা গাছের পাতা চুষে খায়। এই ধরণের পাতা বা চা গাছের রস চুষে খাবার কারণে এদের ‘সাকিং পেস্ট’-ও বলা হয়। মূলত এই সাকিং পেস্ট জাতীয় পোকাই এই প্লাস্টিকের আঠালো জালে বন্দি হয়। পোকা ধরার এই ফাঁদ যে রীতিমত জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে তা মেনে নিয়েছেন চা বাগান সংস্থাগুলিও।
ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ অব ইন্ডিয়ান টি অ্যাসসিয়েশন এর সচিব সুমন্ত গুহঠাকুরতা জানান, “এই পদ্ধতি তরাই, ডুয়ার্সে খুব জনপ্রিয় হয়েছে, যারা এখনও এই পদ্ধতি গ্রহণ করেননি তাঁদের আমরাও এই পদ্ধতির কথা বিশদে জানিয়ে পরামর্শ দিচ্ছি।” উল্লেখ্য ফি বছর দু’বার করে প্লাস্টিক বদলে দিতে হয়। বর্ষায় এই প্লাস্টিকের বাইরের দিকে আঠার তীব্রতা কমতে থাকে তাই বর্ষার সময় আগের প্লাস্টিক খুলে নতুন ফাঁদ বসাতে হয়। মূলত খুব ছোট আকারের সাকিং পেস্টই এই ফাঁদে বেশি ধরা পরে বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy