Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

যত কাণ্ড শ্যুটিং ঘিরে

বর্হিবিভাগে লাইন ছেড়ে রোগীরাও ভিড় জমান শুটিং দেখার জন্য। স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে জনাকয়েক আধিকারিকও শ্যুটিং দেখার উৎসাহীদের ভিড়ে ছিলেন বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এর ফলে পিপি ইউনিটে পরিষেবা নিতে আসা মা ও শিশুদের অসুবিধের মধ্যে পড়তে হয় বলে অভিযোগ।

 নায়িকা: একটি সিনেমার শুটিংয়ে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

নায়িকা: একটি সিনেমার শুটিংয়ে ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
জলপাইগুড়ি শেষ আপডেট: ৩০ মে ২০১৯ ০৪:৫৫
Share: Save:

একটি হিন্দি সিনেমার শুটিংকে কেন্দ্র করে অব্যবস্থার অভিযোগ উঠল জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালের বর্হিবিভাগে। বুধবারেকর ঘটনা। এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ ওই ছবির শুটিং শুরু হয় জলপাইগুড়ি জেলা সদর হাসপাতালের পিপি ইউনিট লাগোয়া লেপ্রসি সেন্টারে। ছবির শুটিংয়ের জন্য এ দিন হাজির ছিলেন অভিনেত্রী ঋতুপর্ণা সেনগুপ্ত। ছিলেন টলিউড-বলিউডের একাধিক কলাকুশলীও। প্রিয় অভিনেত্রীকে দেখতে হাসপাতাল চত্বরে উপচে পড়ে ভিড়। শুটিংয়ের খবর পেয়ে বাইরে থেকেও লোকজন আসতে থাকে হাসপাতালে। তা দেখে যে এলাকায় শুটিং চলছে তা দড়ি দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয়। তবুও ভিড় সামলাতে হিমসিম খেতে হয় নিরাপত্তারক্ষীদের।

বর্হিবিভাগে লাইন ছেড়ে রোগীরাও ভিড় জমান শুটিং দেখার জন্য। স্বাস্থ্যকর্মী থেকে শুরু করে জনাকয়েক আধিকারিকও শ্যুটিং দেখার উৎসাহীদের ভিড়ে ছিলেন বলে জানাচ্ছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা। এর ফলে পিপি ইউনিটে পরিষেবা নিতে আসা মা ও শিশুদের অসুবিধের মধ্যে পড়তে হয় বলে অভিযোগ। কাজের দিনে কেন হাসপাতালে শুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হল সেই প্রশ্ন তুলেছেন রোগীর পরিজনদের অনেকেই। ভিড়ের ঠেলায় হাসপাতালের স্বাভাবিক কাজকর্ম শিকেয় উঠেছে এমন অভিযোগ পেতেই জেলা প্রশাসনের তরফে শুটিং বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

যদিও হাসপাতালের বহির্বিভাগে কী ভাবে শুটিংয়ের অনুমতি দেওয়া হল সে প্রশ্ন তুলেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরাই। জলপাইগুড়ির অতিরিক্ত জেলাশাসক সুনীল আগরওয়াল বলেন, ‘‘এই বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিককে অবিলম্বে শুটিং বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’ জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘আমাকে বলা হয়েছিল তথ্যচিত্রের শ্যুটিং করা হবে। ছাড়পত্র দিয়ে সকাল ৯-১১টা পর্যন্ত শুটিং করার কথা বলা হয়েছিল। একই সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয় হাসপাতালের স্বাস্থ্য পরিষেবার যেন কোনও ব্যাঘাত না হয়।’’ রোগীদের দাবি, শুটিংয়ের অনুমতি দিলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষেরই উচিত ছিল নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা।

এ দিন শুটিং দেখতে হুড়োহুড়ি পড়ে গিয়েছিল হাসপাতাল চত্বরে। তা সামলাতে বেগ পেতে হয় পুলিশকে। এ দিন প্রসূতি বিভাগে আসা বিমলা রায় বলেন, ‘‘ভিড় ঠেলে পৌঁছতেই পারিনি।’’ অন্যদিকে, চলচ্চিত্র পরিচালন সংস্থার কার্য নির্বাহী প্রযোজক শতরূপা সান্যাল বলেন, ‘‘আমরা তথ্যচিত্রের শ্যুটিংয়ের কথা কখনও বলিনি। পূর্ণ দৈর্ঘ্যের হিন্দি ছবির শুটিংয়ের কথাই জানানো হয়েছিল। স্বাস্থ্য দফতরের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শুটিংয়ের কাজ শেষ করতে পারিনি আমরা। তবুও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের নির্দেশ মেনে শুটিং বন্ধ করে দিতে বাধ্য হলাম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE