Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
John Barla

চায়ের কাপে জমছে ক্ষোভ, মোদীর কাছে বার্লা

বিজেপি সূত্রের খবর, সোমবার সংসদে একান্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কিছুক্ষণের জন্য দেখা করেন বার্লা।

সাক্ষাৎ: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাংসদ জন বার্লা।

সাক্ষাৎ: প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাংসদ জন বার্লা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার ও শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৩ মার্চ ২০২০ ০৬:২২
Share: Save:

দীর্ঘদিন ধরে চা পর্ষদের কাছে পাওনা ভর্তুকি বকেয়া পড়ে রয়েছে উত্তরবঙ্গের তরাই ও ডুয়ার্সের ১৯টি বাগানের। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে এ নিয়ে তদ্বির করতে জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের দ্বারস্থ হল মালিক সংগঠনগুলি। কেন্দ্রীয় বাজেটে চা নিয়ে বঞ্চনারও অভিযোগ তোলে তারা। তাদের সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে যখন সাংসদ আশ্বাস দিচ্ছেন, সেই সময়ই খোদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাগান খোলা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। তাঁর বক্তব্য, বাগানের উন্নয়নে রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপই করেনি। বার্লা জানান, তিনিও বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।

বিজেপি সূত্রের খবর, সোমবার সংসদে একান্তে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কিছুক্ষণের জন্য দেখা করেন বার্লা। সাংসদের কথায়, ‘‘অধিবেশনের মাঝে প্রধানমন্ত্রীই আমায় ডেকে পাঠান। আমার কাছে ডুয়ার্সের পরিস্থিতি জানতে চান। তখনই ডুয়ার্সের চা বাগান থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কথা প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরি।’’ রাজ্য সরকার চা বাগানের উন্নয়নে কোনও পদক্ষেপ করছে না বলে দীর্ঘদিন অভিযোগ করে আসছে বিজেপি। এ দিন সেই বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিশেষ করে উল্লেখ করেন বার্লা। সাংসদের কথায়, ‘‘তৃণমূলের আমলে ডুয়ার্সের চা বলয়ের মানুষ শুধুমাত্র বঞ্চনার শিকার। এই ক’বছরে চা বাগানের কোনও উন্নতিই হয়নি। উল্টে একের পর এক বাগান বন্ধ হয়েছে। এখনও অনেক বাগান বন্ধ। যেগুলি খুলতে রাজ্য সরকার কোনও পদক্ষেপ করছে না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সেই সব বিষয়গুলি তুলে ধরেছি।’’

তার আগেই বাগান মালিকদের সংগঠন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া (টাই) গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সাংসদ জয়ন্তকে একটি চিঠি দিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে কথা বলে বকেয়া মেটানোর ব্যবস্থা করার আবেদন জানায়। ফেব্রয়ারিতেই দুই দফায় চা পর্ষদের ডেপুটি ডিরেক্টর (টি ডেভেলপমেন্ট) আর কুজুরকে বিষয়টি জানিয়ে বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। সংগঠনের বক্তব্য, এখন চা বাগানগুলি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। উৎপাদন বাড়লেও ঠিকমতো চাহিদা বাড়ছে না। বাগানের শ্রমিক ও কর্মীদের মজুরি এবং বেতনের প্রক্রিয়া ব্যাঙ্কের মাধ্যমে করার নির্দেশিকা জারি হলেও প্রত্যন্ত এলাকার থাকা বাগানগুলিতে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা ঠিকমতো পৌঁছয়নি। চাহিদা অনুযায়ী এটিএম, কাস্টমার সার্ভিস সেন্টার নেই। ভোগান্তি হচ্ছে শ্রমিকদের। পর্যাপ্ত ব্যাঙ্কিং পরিকাঠামো না থাকায় নগদে মজুরি ও বেতন দেওয়া হলে মোট অঙ্কের উপর ২ শতাংশ হারে কর কেটে নেওয়া হচ্ছে। মাসে তা বিরাট অঙ্কের হয়ে যাচ্ছে বলে বাগান মালিকেরা জানাচ্ছেন। সংগঠনের দাবি, প্রায় ৮ বছর ধরে প্রায় ১১ কোটি টাকা বকেয়া পড়ে রয়েছে। টাই-য়ের উত্তরবঙ্গ শাখার সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাজেটকে ঘিরে বিরাট প্রত্যাশা ছিল। বাজেটে চা শিল্প প্রায় বঞ্চিতই থেকে গিয়েছে। তার উপরে চা পর্ষদকে বারবার বলা হলেও বকেয়া ভর্তুকির টাকা দিচ্ছে না।’’

তবে বার্লার সমালোচনায় সরব হয়েছে তৃণমূল। চা বাগান তৃণমূল মজদুর ইউনিয়ানের রাজ্য সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, ‘‘রাজ্যকে এড়িয়ে টি বোর্ডের বৈঠকে যোগ দিয়ে সাংসদ যেমন চা বাগানের কোনও উন্নতি করতে পারেননি, তেমনি একাধিক বন্ধ বাগান অধিগ্রহণের প্রতিশ্রুতি দিয়েও প্রধানমন্ত্রী কথা রাখতে পারেননি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

John Barla Narendra Modi Tea Garden
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE