প্রতীকী ছবি
করোনায় আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার রাতেই মারা গিয়েছিলেন শামুকতলার বাসিন্দা বন দফতরের এক অবসরপ্রাপ্ত আধিকারিক। কিন্তু শুক্রবার মাঝরাতে অন্ত্যেষ্টির জন্য যখন তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয়, তখন শ্মশানে ছিলেন না বাড়ির কেউই। পুলিশই ওই বৃদ্ধের দেহ সৎকার করে। শুধু তা-ই নয়, পরিবারের লোকজনের উপস্থিতিতে হিন্দু রীতি মেনে ওই বৃদ্ধের ‘মুখাগ্নি’ও করলেন শামুকতলা থানার ওসি বিরাজ মুখোপাধ্যায়।
তার আগে অবশ্য ওই মৃতদেহের সৎকারের ক্ষেত্রে বাধারও সম্মুখীন হতে হয় পুলিশকে। তবে সেই বাধা উপেক্ষা করেই বৃদ্ধের মৃতদেহ নিয়ে স্থানীয় লালপুর শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়। শ্মশানযাত্রী হিসাবে সেখানে শামিল হন আলিপুরদুয়ার-২ ব্লকের জয়েন্ট বিডিও, পুলিশকর্মী ও সিভিক ভলান্টিয়াররা। মৃতের বাড়ির লোক না আসায় মুখাগ্নি কে করবেন, সেই প্রশ্ন উঠতেই এগিয়ে আসেন ওসি বিরাজ মুখোপাধ্যায়। রাত দেড়টা পর্যন্ত শ্মশানে দাঁড়িয়ে থেকে মৃতদেহ সৎকার করে ফেরেন তিনি।
শ্মশানে না থাকা নিয়ে মৃত ব্যক্তির ছেলে বলেন, ‘‘আমাদের সৎকারে না যাওয়ার কথা বলা হয়েছিল। তাই হাসপাতালে দূর থেকে দেখে বাবাকে শ্রদ্ধা জানিয়েছি।’’
অন্যদিকে, ওসি বিরাজের কথায়, “যুবক বয়স থেকেই মৃতদেহ সৎকার করা আমার অভ্যাস। স্বাভাবিক ভাবে করোনায় মৃত ব্যক্তির সৎকারে লোকজনের অভাব থাকে। তাই এজন্য তিনজন স্বেচ্ছাসেবককে আনা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা কাজটি সামলে উঠতে পারছিলেন না। তাই পুরনো অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে নিজের হাতেই সৎকার করেছি।”
তবে শনিবার সকালে শ্মশান চত্বর জীবাণুমুক্ত করার দাবিতে এলাকায় পথ অবরোধ করেন স্থানীয়রা। পুলিশ জীবানুমুক্তের ব্যবস্থা করায় অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।
শুধু বিরাজই নন। স্বজন ও প্রতিবেশীরা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত আলিপুরদুয়ার জংশনের বাসিন্দা মহিলার শেষকৃত্যেও সমস্যায় পড়েন তাঁর ছেলে। তখন তাঁর পাশে দাঁড়ান আলিপুরদুয়ারের এসডিপিও কুতুবউদ্দিন খান। শহরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের কবরস্থানে নিজে দাঁড়িয়ে থেকে ওই মহিলার শেষকৃত্য সম্পন্ন করেন ওই পুলিশ আধিকারিক। এসডিপিও-র কথায়, ‘‘মৃতার ছেলের পাশে দাঁড়ানোটা কর্তব্য বলে মনে হয়েছিল আমার।’’
তবে এই দুটি ক্ষেত্রেই অবশ্য পুলিশ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে নিয়ম ভাঙার অভিযোগও উঠেছে। অভিযোগ, দুটি শেষকৃত্য সম্পন্নের সময় আধিকারিকরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে ন্যূনতম পিপিই পর্যন্ত পড়েননি। এসডিপিও-র কথায়, তখন সেই পরিস্থিতি ছিল না। শামুকতলার ওসি অবশ্য বলেন, ‘‘সমস্ত সরকারি নিয়ম মেনেই সৎকার হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy