Advertisement
১০ মে ২০২৪

নিরাপত্তার অসুখে মেডিক্যাল

এনআরএস কাণ্ডে চিকিৎসক প্রহৃত হওয়া, তা নিয়ে চিকিৎসক-পড়ুয়াদের আন্দোলনের সময় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ছাত্র-চিকিৎসকেরা।

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের একটি গেট।  নিজস্ব চিত্র

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের একটি গেট। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৯
Share: Save:

ভিজিটিং আওয়ার্স কে তোয়াক্কা করে! রোগীর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে মেডিসিন বা প্রসূতি বিভাগে ঢুকছে লোকজন। জরুরি বিভাগে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরাও নেই। জরুরি বিভাগে এক দিকের প্রবেশ পথে কোলাপসিবল গেটও নেই। ওয়ার্ডগুলোর সামনে কোনও পুলিশ নেই। কেবল, অনেক সময় মেডিসিন বিভাগ, শিশু বিভাগে এক জন বেসরকারি নিরাপত্তরক্ষীকে দেখা যায়। নিরাপত্তার এমনই পরিস্থিতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে।

এনআরএস কাণ্ডে চিকিৎসক প্রহৃত হওয়া, তা নিয়ে চিকিৎসক-পড়ুয়াদের আন্দোলনের সময় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন ছাত্র-চিকিৎসকেরা। নিরাপত্তার স্বার্থে একাধিক ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি ওঠে তখনই। পড়ুয়াদের একাংশের অভিযোগ, এরপর জরুরি বিভাগে কোলাপসিবল গেট এবং ক্যাম্পাসে ড্রপ গেট করা হয়েছে। তবে নিরাপত্তার বাকি ফাঁকফোকর এখনও সেই অবস্থাতেই রয়েছে। ওয়ার্ডে বহিরাগতদের অবাধে ঢুকে পড়া, নিরাপত্তা কর্মীর অভাব-সহ নানা সমস্যা রয়েছে।

জুনিয়র চিকিৎসকদের একাংশের অভিযোগ, ওয়ার্ডে অবাধে লোক ঢোকা নিয়ন্ত্রণ করতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা রক্ষী নেই। কিছু ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা বসানো হলেও সেগুলো নজরদারির ব্যবস্থা নেই। ক্যাম্পাসেও লাগোয়া এলাকার লোকজন ঢুকছে সব সময়। রোগীর আত্মীয়দের সঙ্গে পরিচয় করে পানীয় বা খাবারের সঙ্গে নেশার ওষুধ খাইয়ে বেঁহুশ করে লুঠ করার ঘটনাও ঘটছে, সক্রিয় দালাল চক্র। মেডিক্যাল কলেজ চত্বর থেকে অটো-টোটো, বাসস্ট্যান্ড সরানোর দাবিও তুলে আসছেন ছাত্র-চিকিৎসকেরা। হাসপাতাল চত্বরে ব্লাড ব্যাঙ্কের পিছনের অংশে শতাধিক অবৈধ দোকান বসে হাটের চেহারা নিয়েছে। নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সেটাও বড় সমস্যা। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিয়ে কর্তৃপক্ষের তরফে পুলিশকেও জানানো হয়েছিল। পুলিশ জানায়, শীঘ্রই আলোচনায় বসা হবে।

মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ প্রবীরকুমার দেব বলেন, ‘‘কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্যাম্পাস থেকে বাস স্ট্যান্ড বা অবৈধ দোকান সরানোর বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়েছে।’’ পর্যাপ্ত পুলিশ যে তাদের পক্ষে দেওয়া সম্ভব নয় তা আগেই পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে। মেডিক্যাল কলেজগুলোর জন্য আলাদা করে পুলিশের ব্যবস্থা হলে তবেই সেই ব্যবস্থা হবে বলে জানানো হয়।

এর আগে ক্যাম্পাসে চিকিৎসকদের ব্যাগ চিনতাইয়ের চেষ্টা, ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার মতো ঘটনা একাধিকবার ঘটেছে। টোটো চালকের সঙ্গে গোলমাল হয়েছে ছাত্রদের। ওয়ার্ডে রোগী মৃত্যুকে ঘিরে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ মাঝেমধ্যেই ওঠে। তখন চিকিৎসকদের গায়ে হাত তোলা, ভাঙচুরও অতীতে হয়েছে।

রোগীর আত্মীয়দের একাংশের পাল্টা অভিযোগ, ভিতরে গিয়ে খোঁজখবর নিয়ে রোগীর পরিস্থিতি দেখে নার্স, চিকিৎসকদের বলতে হয়। তবে চিকিৎসা মেলে। ওষুধ খাওয়ানোর কেউ নেই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে নার্সরা কিছু দেখেন না। টাকা দিয়ে আয়া রাখতে হয়। কিন্তু কিছু হলে আয়ারা দায় নেবেন না।

চিকিৎসকরা জানান, উপযুক্ত পরিকাঠামোতে রোগীর পরিজনদের সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করাও দরকার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

North Bengal Medical College Security
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE