ছাত্র যুব উৎসবে মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষের জায়গায় কোচবিহার জেলা পর্যায়ের পৃষ্ঠপোষক হলেন উমাকান্ত বর্মণ। সম্প্রতি রাজ্য ক্রীড়া দফতরের তরফে ছাত্র ও যুব উৎসবের জেলা ও ব্লক পর্যায়ের কমিটি ঘোষণা করা হয়। সেই তালিকাতেই উমাকান্তবাবুর নাম রয়েছে। উমাকান্ত কোচবিহার জেলা পরিষদের সভাধিপতির দায়িত্বে রয়েছেন। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই ওই উৎসবে জেলা পর্যায়ের পৃষ্ঠপোষক ছিলেন রবীন্দ্রনাথবাবু।
সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদকে জিইয়ে তোলা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের সঙ্গে তাদের যৌথ বৈঠকও হয়েছে। সেই বৈঠকের পরে পর্ষদের দায়িত্বে থাকা পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, দফতরের কাজকর্ম যাতে ঠিকমতো হয়, সেটা এ বার থেকে দেখা হবে। এই বৈঠকের পরেই তৃণমূলের মধ্যে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, তা হলে কি রবীন্দ্রনাথের গুরুত্ব কমছে দলে? ছাত্র যুব উৎসবে উমাকান্ত বর্মণের উত্তরণ সেই প্রশ্নকে আরও উস্কে দিল। গৌতমের কথার জবাব দিতে গিয়ে অবশ্য রবি বলেছিলেন, ‘‘উনি নিজের মন্ত্রক নিজে সামলান।’’ কিন্তু তাতেও ধামাচাপা পড়েনি গুঞ্জন।
দলের একটি অংশের বক্তব্য, যুব ও মূল তৃণমূলের বচসায় কোচবিহারে তৃণমূল কোণঠাসা। তাই ২০১৬ সালে একা হাতে দলকে এই জেলায় একচ্ছত্র করে তোলা রবীন্দ্রনাথ ঘোষও কিছুটা হলেও ব্যাকফুটে। তিনি যে এই দ্বন্দ্ব সামলাতে পারছেন না, বরং কিছু ক্ষেত্রে তাঁর বিরুদ্ধে আঙুল তুলছেন যুবর লোকজন, তাতে দলের রাজ্য নেতৃত্বের মনেও বিরূপ মনোভাব তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। সেই জন্যই হয়তো রবীন্দ্রনাথকে সরিয়ে নিরপেক্ষ হিসেবে পরিচিত উমাকান্তবাবুকে আনা হয়েছে।
একটি অংশের অবশ্য বক্তব্য, দল উত্তরবঙ্গে নেতৃত্বে সবাইকে জায়গা করে দিয়ে ভারসাম্য রাখার চেষ্টা করছে। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “ক্রীড়া দফতরের ওই কমিটি ঘোষণা হয়েছে। এটা হতেই পারে।” উমাকান্তবাবু বলেন, “সরকারি নিয়মে ওই কমিটি করা হয়। আমি ওই কমিটির বিষয়ে এখনও কিছু জানি না।” যুব তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি তথা সাংসদ পার্থপ্রতিম রায় ওই বিষয়ে কিছু বলতে চায়নি। তিনি বলেন, “এটা সরকারি ব্যাপার।” যুব তৃণমূলের এক নেতার কথায়, “ওই কমিটিতে ছাত্র ও যুবরা রয়েছেন। যুবদের অনেক নেতার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথবাবুর সম্পর্ক ভাল না থাকায় ওই পরিবর্তন হয়েছে।” ওই কমিটিতে পার্থ তো আছেনই, আছেন যুব নেতা অভিজিৎ দে ভৌমিক এবং টিএমসিপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নয়নজ্যোতি রায়ও।
তৃণমূলে রবি-গোষ্ঠীর নেতারা মনে করেন, এই মুহূর্তে এখানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর সমতুল নেতার সংখ্যা হাতে গোনা। তাই কোচবিহারে দলের জেলা সভাপতি পদ বা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী পদ নিয়ে এখনই জল্পনার অবকাশ নেই। যদিও রবি-বিরোধীরা এই নিয়ে অন্য কথা বলছেন। জেলা সভাপতি হিসেবে এই মুহূর্তে কেউ থাক বা না থাক, কেউ কেউ মন্ত্রী হিসেবে রবির প্রাক্তনীর নাম উস্কে দিচ্ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy