কুপন বিতরণ। নিজস্ব চিত্র
এত দিন দূর থেকে ঝকঝকে শপিং মল দেখেছে ওরা। কাচের দেওয়ালের এপার থেকে দেখেছে, ওপারে নানা রঙের পোশাক সাজানো। বহুতলে ওদের বয়সী অনেককে বাবা-মায়ের হাত ধরে যেতেও দেখেছে এতদিন। এ বার ওদের হাতেও এল বহুতলে ঢোকার ‘অধিকার’। শুক্রবার বিকেলে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের তরফে জলপাইগুড়ির অনুভব হোমের নাবালিকাদের দেওয়া হল একটি করে কুপন। শহরের কদমতলা মোড়ের একটি শপিং মলে নামী ব্র্যান্ডের শোরুমের সেই উপহার কুপনে রয়েছে সাতশো টাকা পর্যন্ত কেনাকাটার সুযোগ। হোমের কাছে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের অনুরোধ, হোমে থাকা সব মেয়েকেই যেন শোরুমে নিয়ে গিয়ে পুজোর বাজার করানো হয়।
কেউ অনাথ, কেউ বাড়ির ঠিকানা বলতে পারে না, কেউ বা ভবঘুরে ছিল, কারও বাড়ির পরিবেশ নাবালিকার জন্য মোটেই নিরাপদ নয়—এমন শিশু, কিশোরী, তরুণীরা অনুভব হোমে থাকেন। প্রতি বছর তাদের পুজোর বাজারও হয়। হোমের কর্ণধার দীপশ্রী রায় বললেন, “ওদের সকলের জন্য ব্র্যান্ডের পোশাকই আনা হয়। ওদের মাপ নিয়ে গিয়ে এতদিন আমরা কিনে আনতাম। এ বার একটি ব্যাঙ্ক ওদের কুপন দিয়েছে, ওদের নিয়েই এ বার শপিং মলে বাজার করতে যাব।”
এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ১২৫ বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান চলছে। ব্যাঙ্কের জলপাইগুড়ির ক্লাবরোডের মূল শাখার তরফে চিকিৎসা শিবির সহ নানা অনুষ্ঠান চলছে। সেই অনুষ্ঠানের অংশ হিসেবেই অনুভব হোমের আবাসিক নাবালিকাদের জন্য এই উদ্যোগ। ব্যাঙ্কের মুখ্য ম্যানেজার সিদ্ধার্থ গুপ্ত বলেন, “পুজোর সময়ে অন্য বাচ্চারা বাবা-মায়ের সঙ্গে শপিং মলে যায়। হোমে থাকা, বাড়ি-ছাড়া মেয়েগুলির তখন নিশ্চই খারাপ লাগে। আমরা চেষ্টা করেছি এ বছর অন্তত ওদের সেই মন খারাপ দূর করতে।”
প্রথমে ঠিক হয়েছিল, হোম কর্তৃপক্ষের হাতে একটি কুপন দেওয়া হবে। সেই কুপন থেকেই সকলের বাজার হবে। পরে সিদ্ধান্ত বদলে ব্যাঙ্ক ঠিক করে সব নাবালিকার হাতে একটি করে কুপন তুলে দেওয়া হবে। শুক্রবার বিকেলে হোমের ৫১ জন আবাসিকের হাতে কুপন দিয়েছে ব্যাঙ্ক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy