Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
West Bengal Lockdown

লকডাউন নিয়ে দুই কর্তার টানাপড়েন

এই টানাপড়েনের ফলে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের কাজের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

বন্ধ রয়েছে শিলিগুড়ির একটিয়াশাল হাট। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

বন্ধ রয়েছে শিলিগুড়ির একটিয়াশাল হাট। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০১ জুলাই ২০২০ ০৬:৩৬
Share: Save:

শিলিগুড়িতে করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে পূর্ণ লকডাউন হবে কি না, তা নিয়ে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের টানাপড়েন শুরু হয়েছে। জেলার এক স্বাস্থ্য কর্তা, যিনি নিজেও পেশায় চিকিৎসক এবং যার উপর দায়িত্ব রয়েছে এই এলাকায় করোনা সংক্রান্ত সমন্বয়ের, তিনি চান শিলিগুড়ি শহরকে ভাল রাখতে অবিলম্বে কিছু দিন পূর্ণ লকডাউন করা হোক। সেই সময়ে কোথায় কোথায় সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা ভাল করে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে। কিন্তু জেলা প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে প্রয়োজন মতো কনটেনমেন্ট জ়োন করা হচ্ছে। বাজারগুলিও বন্ধ রাখা হচ্ছে। এই মূহূর্তে এর বেশি কিছু করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। যদিও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, শিলিগুড়িতে নিয়মিত মানুষ মারা যাচ্ছেন, যে মৃত্যুর অন্যতম কারণ করোনা বলে সন্দেহের অবকাশও থেকে যাচ্ছে।

এই টানাপড়েনের ফলে স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের কাজের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। বাজারগুলিতে ভিড়, দূরত্ব বিধি, স্বাস্থ্যবিধি না মানা নিয়ে পুলিশ, প্রশাসনের সমন্বয়ের অভাব মেটাতে এর মধ্যেই সোমবার পর্যটনমন্ত্রী বৈঠক করেন। শহরে সংক্রমণ আটকাতে তিনিও সচেষ্ট। তিনি বলেন, ‘‘স্বাস্থ্য দফতর, প্রশাসনের হাতে কাজের লোক প্রচুর রয়েছে। তাঁদের সুসংগঠিত ভাবে কাজে লাগাতে হবে। রাজ্যের কাছে প্রতিনিয়ত তথ্য পাঠানো হচ্ছে। তাঁরাও বিষয়টি জানেন।’’ মন্ত্রী জানান, নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধি, সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে সমন্বয় রেখে কাজ করতে হবে। স্থানীয় স্তরের আধিকারিকেরা সেটা করছেন।

শিলিগুড়িতে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে তিনশোর কাছাকাছি। তার মধ্যে ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে আক্রান্তের সংখ্যা অন্তত ৬৫ জন। ওই ওয়ার্ডে অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। শহর এবং লাগোয়া এলাকা মিলিয়ে মৃত্যুর সংখ্যা অন্তত ১৯ জন। শেষ ২০ দিনেই অধিকাংশ মারা গিয়েছেন। যাঁদের মধ্যে অনেকে কোমর্বিডিটি বা অন্য রোগের শিকার বলে স্বাস্থ্য দফতরের দাবি। মৃত্যু রুখতে সম্প্রতি উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। তার পর জানানো হয়, শহরকে বাঁচাতে বাসিন্দাদের অনেকে সম্পূর্ণ লকডাউন চাইছেন। বিষয়টি রাজ্যস্তরে স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকদেরও জানানো হচ্ছে।

তবে জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের একাংশ জানান, যে সমস্ত এলাকায় সংক্রমণ কোথা থেকে এল বোঝা যাচ্ছে না, সেগুলিকে কনটেনমেন্ট জ়োন করে, এলাকার বাসিন্দাদের নমুনা পরীক্ষা করে আর কারও সংক্রমণ রয়েছে কি না দেখা হচ্ছে। সব মিলে দেড়শোর বেশি কনটেনমেন্ট জ়োন আছে। সেগুলি জীবাণুমুক্ত করা হচ্ছে। শহরের বাজারগুলি থেকে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে কি না, দেখা হচ্ছে। তবে যে ভাবে বাজারগুলিতে ভিড় বাড়ছে এবং বাজারের কারণে ৪৬, ২৮, ১৮ নম্বরের মতো ওয়ার্ডগুলিতে সংক্রমণ ছড়িয়েছে, তা উদ্বেগের। শিলিগুড়ি ওয়েলফেয়ারের কার্যকরী সভাপতি অভিজিৎ মজুমদারের মত, ‘‘রোগ নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা নিয়ে কিছু দিন লকডাউন করাই যেতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

West Bengal Lockdown Coronavirus Lockdown
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE