তুবড়ে: দুর্ঘটনার পরে এমন অবস্থাই হয়েছে সরকারি বাসটির। ছবি: অভিজিৎ সিংহ।
প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ জানাচ্ছেন, মুখোমুখি এসে গিয়েছিল একটি মোটরবাইক। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের একটি মন্দিরের দেওয়ালে ধাক্কা দিল একটি বাস। মৃত্যু হল এক যাত্রীর। আহত ২৪ জন। সোমবার সকালে ছাতনার দুবরাজপুর সংলগ্ন এলাকায় বাঁকুড়া-পুরুলিয়া রাজ্য সড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। আহতদের মধ্যে তিন জন ভর্তি রয়েছেন ছাতনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে। আট জনের চিকিৎসা চলছে বাঁকুড়া মেডিক্যালে। বাকিদের প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বাঁকুড়া মেডিক্যাল কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বাসযাত্রীর নাম ধনঞ্জয় রায় (৪৫)। তিনি ছাতনার উপরডিহি এলাকার বাসিন্দা। তাঁর মাথায় গুরুতর চোট ছিল। ছাতনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল থেকে ধনঞ্জয়বাবুকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে রেফার করা হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগমের একটি বাস বাঁকুড়া থেকে পুরুলিয়ার দিকে যাচ্ছিল। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ঘটনার সময়ে বাসটি দ্রুত গতিতে ছুটছিল। হঠাৎ সামনে একটি মোটরবাইক এসে পড়ে। ব্রেক কষতেই নিয়ন্ত্রণ হারান চালক। রাস্তার বা’দিকে নেমে গিয়ে একটি কালী মন্দিরের দেওয়ালে ধাক্কা দেয় বাস। মোটরবাইকের চালকও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পড়ে চোট পেয়েছেন।
ধাক্কার তীব্রতায় প্রচণ্ড শব্দ করে মন্দিরের দেওয়ালের একাংশ ভেঙে পড়ে। পুজো দিতে আসা মানুষজন আকস্মিকতায় ভয় পেয়ে চিৎকার করে ওঠেন। দেওয়ালে ধাক্কা মেরে বাসটি থেমে যায়। জখম যাত্রীদের উদ্ধার করে প্রথমে ছাতনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পরে সেখান থেকে এগারো জনকে বাঁকুড়া মেডিক্যালে রেফার করা হয়। জখমদের বাঁকুড়া মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক ধনঞ্জয়কে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকি দশ জনের মধ্যে দু’জনকে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়। মোটরবাইকের চালকও সেখানে চিকিৎসাধীন। বাঁকুড়া মেডিক্যালের সুপার গৌতমনারায়ণ সরকার বলেন, “জখমেরা চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছেন।” ঘটনায় জখম বাঁকুড়া মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন এক যাত্রী বলেন, “বাসের মাঝামাঝি একটা সিটে বসেছিলাম। বেশ গতিতেই ছুটছিল। হঠাৎই প্রচণ্ড ঝাঁকুনি। তার পরে আর কিচ্ছু মনে নেই।’’
দুর্ঘটনায় মৃত ধনঞ্জয়বাবু পেশায় মাংস বিক্রেতা। এই ঘটনায় তাঁর পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ গৌরাঙ্গ রক্ষিত বলেন, “ধনঞ্জয় আমার দীর্ঘ দিনের বন্ধু। এ দিন ব্যবসার কাজেই সে বাঁকুড়া গিয়েছিল। ফেরার পথে দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা সবাই ওর পরিবারের পাশে রয়েছি।” পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy