Advertisement
১১ মে ২০২৪
তলানিতে হিমঘরের জোগান

আলুর দর কি আরও চড়বে, চিন্তা

কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার ৪৭টি হিমঘরে এই মুহূর্তে তিন হাজার টন আলু মজুত রয়েছে।

বিষ্ণুপুরের একটি হিমঘরে শনিবার মজুত আলু বাছাই চলছে। ছবি: শুভ্র মিত্র

বিষ্ণুপুরের একটি হিমঘরে শনিবার মজুত আলু বাছাই চলছে। ছবি: শুভ্র মিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০২০ ০১:১৯
Share: Save:

জলদি আলু বাজারে আসতে এখনও দেরি আছে। এই পরিস্থিতিতে বাঁকুড়ার হিমঘরগুলিতে মজুত আলু দিয়ে বাজারে কত দিন জোগান দেওয়া যাবে, তা নিয়ে সংশয়ে জেলা কৃষি বিপণন দফতরের কর্তারা। ফলে, আগামী দিনে আলুর দর আরও চড়বে কি না, তা নিয়ে চিন্তা বাড়ছে ক্রেতাদের।

কৃষি বিপণন দফতর সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার ৪৭টি হিমঘরে এই মুহূর্তে তিন হাজার টন আলু মজুত রয়েছে। তবে বাজারে জোগানের ভারসাম্য বজায় রাখতে মজুত সব আলু বার করার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার। জেলা কৃষি বিপণন দফতরের আধিকারিক মহম্মদ আকবর আলি বলেন, “আমরা সমস্ত হিমঘর মালিকদের চিঠি দিয়ে সোমবারের মধ্যে মজুত আলু বার করার কথা বলেছি।”

যদিও হিমঘর মালিক সমিতির জেলা সভাপতি দিলীপ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “দু’দিনের মধ্যে সব আলু বার করা কার্যত অসম্ভব। আমরা সরকারকে চিঠি দিয়ে আলু মজুত রাখার মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন জানিয়েছি।”

তবে এ সব ছাপিয়ে সাধারণ মানুষজনের একটাই দাবি, অবিলম্বে খোলা বাজারে আলুর দর নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ হোক। ইতিমধ্যে জেলার বাজারে জ্যোতি আলুর দর কেজিতে পঞ্চাশ টাকা ছুঁই ছুঁই। শনিবার বাঁকুড়ার বাজারে আলু বিকিয়েছে কেজি প্রতি ৪৪-৪৬ টাকা দরে। সুফল বাংলা স্টলে রাজ্য সরকারের নির্দেশে ভর্তুকিযুক্ত আলু ২৫ টাকা কেজি দরে আলু বিকোচ্ছে।

এ দিন বাঁকুড়া শহরের কিসানমান্ডিতে সুফল বাংলা স্টলে গিয়ে দেখা গেল, কয়েকশো মানুষের লম্বা লাইন। লাইনে দাঁড়ানো বাঁকুড়ার বাসিন্দা সুবোধ মল্লিক, সুমন পাত্রেরা ক্ষোভের সুরে, “শহরে একটিই সুফল বাংলার স্টল রয়েছে। চার কেজি করে আলু দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা কিনতে ঘণ্টা দু’য়েক লাইনে দাঁড়াতে হচ্ছে।” সুফল বাংলা পরিচালনকারী সংস্থার সিইও তাপসকুমার দাসের কথায়, ‘‘দৈনিক ৩৫ কুইন্টাল

আলু বিক্রি হচ্ছে।’’

এ দিকে, ছাতনার খড়বনার বাসিন্দা দীনবন্ধু কুণ্ডুর আক্ষেপ, “বাঁকুড়ায় তা-ও লাইনে দাঁড়াতে হলেও ২৫ টাকায় আলু মিলছে। আমাদের এখানে সেই সুবিধাও নেই। বাজারে ৪৪ টাকা কেজি দরে জ্যোতি আলু কিনতে হচ্ছে। মধ্যবিত্ত মানুষের নাগালের বাইরে বেরিয়ে গিয়েছে আলুর দর।”

যদিও আলুর দর কোন পথে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব, তার সদুত্তর নেই প্রশাসনিক আধিকারিকদের কাছেও। মহম্মদ আকবর আলি বলেন, “হিমঘরে যে পরিমাণ আলু মজুত রয়েছে, জেলায় মাসিক চাহিদা তার কয়েকগুণ। জলদি আলু কবে বাজারে ওঠে, সে দিকেই আপাতত তাকিয়ে রয়েছি।” জেলার উপ কৃষি-অধিকর্তা সুধান্ত মহাপাত্র জানান, ডিসেম্বরের শেষে জেলার বাজারে প্রায় দু’হাজার টন জলদি আলু ওঠার কথা। আর জানুয়ারির প্রথমে জেলার বাজারে প্রায় ১৫ হাজার টন নতুন আলু আসার সম্ভাবনা রয়েছে।

কেন এমন পরিস্থিতি? হিমঘর মালিকেরা জানান, জেলায় আট লক্ষ টন আলু মজুত রাখার পরিকাঠামো রয়েছে। তবে এ বছরে করোনা-পরিস্থিতিতে হিমঘরগুলিতে মাত্র ৫৫ হাজার টন আলু মজুত করা গিয়েছে। তাই বছর শেষে এমন সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে মত হিমঘর কর্তাদের। রাজ্য প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির জেলা উপদেষ্টা বিভাস দে-র কথায়, “হিমঘরে যা আলু মজুত রয়েছে, তা বেশিরভাগই চাষিদের। রাজ্য সরকারের দ্রুত হিমঘর খালি করার নির্দেশ নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Potato price hike Grocery
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE