প্রতীকী ছবি।
করোনা-আক্রান্তের বাড়ির অন্য লোকজনকে পরীক্ষা করতে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ ঘেরাও হয়ে থাকতে হল এক মহিলা চিকিৎসককে। বুধবার পুরুলিয়া মফস্সল থানা এলাকার একটি গ্রামের ঘটনা। তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে ঘেরাও হয় পুলিশও। প্রশাসনের আধিকারিকেরা গ্রামে গিয়ে মানুষজনকে বুঝিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বেলা ১১টায় ঘেরাও হওয়া চিকিৎসক গ্রাম ছাড়েন বিকেল ৩টে নাগাদ।
পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালে পুরুলিয়া ১ ব্লকের ডুঁড়কু পঞ্চায়েতের দু’টি গ্রামে দুই পরিযায়ী শ্রমিকের করোনা-সংক্রমণ ধরা পড়ে। ১৯ মে মহারাষ্ট্র থেকে গ্রামে ফেরার পরেই, তাঁদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। মঙ্গলবার আসা রিপোর্টে জানা যায়, দু’জনেরই শরীরে করোনা-সংক্রমণ রয়েছে। স্বাস্থ্য দফতর ‘হোম কোয়রান্টিন’ থাকার নির্দেশ দেয়। দুই আক্রান্তের বাড়িকে কেন্দ্র করে ১৪ দিনের জন্য নির্দিষ্ট এলাকা ‘কন্টেনমেন্ট জ়োন’ ও আরও কিছুটা এলাকা ‘বাফার জ়োন’ হিসেবে চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে।
বুধবার আক্রান্ত এক শ্রমিকের বাড়ির লোকজনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে গিয়েছিলেন পুরুলিয়া ১ ব্লকের চাকলতোড় ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের এক মহিলা চিকিৎসক। পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, বেরনোর সময়ে গ্রামের কিছু লোকজন তাঁকে ঘেরাও করেন। দাবি ওঠে, আক্রান্তকে গ্রাম থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে। বোঝানোর চেষ্টা করলেও কাজ না হওয়ায় গাড়ির কাচ তুলে বসে থাকেন ওই চিকিৎসক। ফোনে খবর দেন ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে।
এ দিকে, খবর পেয়ে পরে পুলিশের একটি গাড়ি ঘটনাস্থলে গেলে সেটিকেও ঘেরাও করা হয়। আটকে থাকা ওই চিকিৎসক এর পরেই জেলার স্বাস্থ্য আধাকারিকদের গোটা ঘটনা জানান। ততক্ষণে প্রায় আড়াই ঘণ্টা পেরিয়ে গিয়েছে। দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছন পুরুলিয়া মফস্সল থানার আইসি সঞ্জয় চক্রবর্তী, বিডিও (পুরুলিয়া ১) দিব্যজ্যোতি দাস ও পুলিশ-প্রশাসনের অন্য কর্তারা।
বিডিও বলেন, ‘‘গ্রামে গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলার পরে তাঁরা বুঝতে পেরেছেন।’’ করোনা-পরিস্থিতি সামলানোর দায়িত্বপ্রাপ্ত অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) আকাঙ্ক্ষা ভাস্কর জানান, সরকরি নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী, আক্রান্তদের কোনও উপসর্গ না থাকলে বাড়িতেই ‘কোয়রান্টিন’ করা হচ্ছে। তাঁদের নিয়মিত পরীক্ষা করছেন স্বাস্থ্যকর্মী এবং চিকিৎসকেরা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘এক মহিলা চিকিৎসককে এ ভাবে ঘেরাও করে রাখা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। তিনি তো গ্রামের মানুষের জন্যই সেখানে গিয়েছিলেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy