আলাপচারিতা: পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। শনিবার বিশ্বভারতীতে। নিজস্ব চিত্র
দায়িত্ব নেওয়ার পরের দিনই বিশ্বভারতীর বিভিন্ন ভবন ঘুরে দেখলেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
শনিবার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ঢোকার মুখে একদল পড়ুয়া তাঁর জন্য অপেক্ষা করছিলেন। তাঁদের দেখে থেমে যায় তাঁর গাড়ি। গাড়ি থেকে নামতেই অপেক্ষারত পড়ুয়ারা নতুন উপাচার্যের হাতে ফুলের তোড়া দিয়ে স্বাগত জানান। সেখানে দাঁড়িয়ে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলতে শুরু করেন উপাচার্য। পড়ুয়ারা তাঁদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানান। তিনিও খুব শীঘ্রই সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন। সব শেষে পড়ুয়াদের একটাই মত— ‘‘এত দিন পর মনে হচ্ছে আমরা সত্যিই অভিভাবক পেলাম।’’
দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে স্থায়ী উপাচার্য না থাকার কারণে বিভিন্ন অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে বিশ্বভারতীতে। একাধিক কর্মী ও অধ্যাপকের পদ শূন্য। কোনও কোনও ক্ষেত্রে একাধিক পদ সামলাচ্ছেন একই ব্যক্তি। তার সঙ্গে পদোন্নতিও হয়নি দীর্ঘ আড়াই বছর। একে একে অনেক জটিলতা তৈরি হয়েছিল। এ বার সব জটিলতা কেটে গিয়ে বিশ্বভারতীর অচলাবস্থা কেটে যাবে বলে মনে করছে অধ্যাপক, কর্মী থেকে শুরু করে পড়ুয়ারা।
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বিভিন্ন অভিযোগে উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্তকে অপসারণ করে মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক। এর পরে তৎকালীন সহ-উপাচার্য স্বপনকুমার দত্তকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ করা হয়। তিনি অবসর নেন ২০১৮ সালের ২৭ জানুয়ারি। এক সপ্তাহের অচলাবস্থার পর ৩ ফেব্রুয়ারি, অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবেই দায়িত্বভার গ্রহণ করেন বিশ্বভারতীর তখনকার প্রবীণতম ডিরেক্টর সবুজকলি সেন। তিনি পরবর্তী কয়েকটি মাস তাঁর দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বিশ্বভারতীর ‘অ্যাক্ট এবং স্ট্যাটিউট’ অনুযায়ী বেশ কিছু অধিকার শুধুমাত্র স্থায়ী উপাচার্যেরই আছে। অস্থায়ী উপাচার্যেরা এই বিষয়গুলিতে কোনও হস্তক্ষেপ করতে পারেননি।
শেষ পর্যন্ত বিশ্বভারতীর স্থায়ী উপাচার্য হিসেবে ৮ অক্টোবর মন্ত্রক থেকে অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম ঘোষণা করা হয়। তার পরই খুশিতে ভাসছিল বিশ্বভারতী। এক মাস পরে শুক্রবার তাঁর যোগদানে সেই উৎসাহ আরও বেড়েছে।
এ বার সব জটিলতা কেটে যাওয়ার আশাতেই দিন গুনছে বিশ্বভারতী। এখানকার প্রত্যেক সংগঠন স্বাগত জানিয়েছে স্থায়ী উপাচার্যকে। বিশ্বভারতীর কর্মিসভার সম্পাদক বিদ্যুৎ সরকার বলেন, ‘‘আশা করছি এ বার আমাদের কর্মীদের সমস্যার সমাধান হবে। আমরা তাঁকে সব ক্ষেত্রে সহযোগিতা করব।’’ অধ্যাপকসভার সম্পাদক গৌতম সাহার কথায়, ‘‘স্থায়ী উপাচার্যের দাবিতে আমরা আন্দোলন করেছি। এত দিন পরে স্থায়ী উপাচার্য পাওয়ায় আমরা খুশি।’’ বিশ্বভারতী ফ্যাকাল্টি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুদীপ্ত ভট্টাচার্য এবং সম্পাদক বিকাশচন্দ্র গুপ্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘উনি একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন অধ্যাপক। তাঁর থেকে ভাল পদক্ষেপের আশা রাখব। আমরা সহযোগিতা করব।’’
বিশ্বভারতীর সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের পক্ষে অচিন্ত্য বাগদি বলেন, ‘‘আমরা কথা বলেছি তাঁর সঙ্গে। উনি আমাদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy