প্রতীকী ছবি
ভিন্-জাতের ছেলেকে বিয়ে করেছে মেয়ে। তাতে মত ছিল না মেয়ের বাবার। সেই আক্রোশে ছেলের বাবাকে খুন করে সে— পুরুলিয়ার পাড়ায় পার্শ্বশিক্ষক খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পরে এমনটাই দাবি করল পুলিশ।
দুঃখহরণ রাজোয়াড় নামে ওই শিক্ষককে খুনের অভিযোগে শুক্রবার সকালে পুলিশ গ্রেফতার করেছিল তাঁর বেয়াই ফুলচাঁদ মাহাতোকে। দু’জনেরই বাড়ি পাড়া থানার হাতিমারা গ্রামে। সে দিনই ফুলচাঁদকে রঘুনাথপুর আদালতে তোলা হলে তার তিন দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ হয়। জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘জেরায় ফুলচাঁদ আমাদের কাছে স্বীকার করেছে, তার অমতে মেয়ে ভিন্ জাতের যুবককে বিয়ে করার আক্রোশে সে বেয়াইকে কুপিয়ে খুন করেছিল।”
গত ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় নডিহা থেকে মোটরবাইকে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন দুঃখহরণবাবু। গ্রামেরই প্রাথমিক স্কুলে পার্শ্ শিক্ষক ছিলেন তিনি। গ্রাম থেকে কিছুটা দূরে, কালাডহর এলাকায়, তাঁর রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। খুন করা হয়েছিল ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে। ঘটনাস্থল থেকেই দুঃখহরণের মোটরবাইক উদ্ধার হওয়াতে পুলিশ নিশ্চিত ছিল, ছিনতাইয়ের জন্য খুন করা হয়নি।
প্রাথমিক তদন্তে পরে পুলিশ দাবি করেছিল, পারিবারিক বিবাদের জেরে খুন করা হয়ে থাকতে পারে দুঃখহরণবাবুকে। পরে তাঁর ছোট ছেলে লোকনাথ দাদার শ্বশুর ফুলচাঁদ-সহ আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ জানাচ্ছে, অভিযুক্তদের মধ্যে তিন জন আদালতে আত্মসমর্পণ করেছিল। এক জনকে গ্রেফতার করা হয়। কিন্তু মূল অভিযুক্ত ফুলচাঁদ পলাতক ছিল। শুক্রবার পুরুলিয়া শহর থেকে তাকে গ্রেফতার করে পাড়া থানার পুলিশ।
পুলিশের দাবি, ফুলচাঁদ রগচটা বলে এলাকায় পরিচিত। এর আগে তার বিরুদ্ধে পুত্রবধূকে পুড়িয়ে খুন করার অভিযোগ রয়েছে। ওই ঘটনায় দু’মাস জেলও খেটেছে সে। সেই খুনের মামলার বিচার এখনও চলছে। সাত মাস আগে ফুলচাঁদের মেয়ের সঙ্গে বিয়ে হয় দুঃখহরণের বড় ছেলে তারকনাথের। কিন্তু সেই বিয়েতে মত ছিল না ফুলচাঁদের।
পুলিশের দাবি, মেয়ের বিয়ের পর থেকেই ফুলচাঁদ দুঃখহরণের পরিবারকে হুমকি দিত। পুলিশ জানাচ্ছে, কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে দুঃখহরণকে খুনের ছক কষেছিল ফুলচাঁদ। গত ১৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় রাস্তায় একা পেয়ে পাঁচ জন মিলে খুন করে দুঃখহরণকে। আপাতত ধৃতকে হেফাজতে নিয়ে খুনে ব্যবহৃত ধারালো অস্ত্রটির খোঁজ করছে পুলিশ।
ফুলচাঁদের ছেলে লালমোহনকে ওই ঘটনায় গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাড়িতে রয়েছেন ফুলচাঁদের স্ত্রী। যোগাযোগ করা যায়নি তাঁর সঙ্গে। আদালতে অবশ্য ফুলচাঁদ দাবি করেছেন, মিথ্যা অভিযোগে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy