পুরুলিয়ার মেডিক্যাল কলেজের নাম বিতর্কের অবসান ঘটালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শুক্রবার বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন, পুরুলিয়ার মেডিক্যাল কলেজের নাম দেবেন মাহাতোর নামেই হচ্ছে। এ ব্যাপারে বিধানসভায় প্রশ্ন তুলেছিলেন পুরুলিয়ার কংগ্রেস জেলা সভাপতি তথা বাঘমুণ্ডির বিধায়ক নেপাল মাহাতো। তিনি নাম অপরিবর্তিত রাখার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
পরে নেপালবাবু বলেন, ‘‘পুরুলিয়া মেডিক্যাল কলেজের নামকরণ মুখ্যমন্ত্রী জেলার প্রয়াত সাংসদের (দেবেন মাহাতো) নামে করায়, তিনি এই জেলার মানুষজনকেও সম্মানিত করলেন।’’
রাজ্য সরকার পুরুলিয়ায় মেডিক্যাল কলেজ গড়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে পুরুলিয়া শহরের উপকন্ঠে পুরুলিয়া মফস্সল থানার হাতোয়াড়াতে মেডিক্যাল কলেজের একটি ভবন তৈরি করা হয়। সেই থেকে শহরের প্রাণকেন্দ্রে থাকা পুরুলিয়া দেবেন মাহাতো সদর হাসপাতাল এই মেডিক্যাল কলেজের একটি অংশ হিসেবে কাজ শুরু করেছিল। হাসপাতাল সূত্রে খবর, প্রশাসনিক দিক থেকে নাম বদলে গিয়ে এই হাসপাতালের নাম হয় গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতাল (দেবেন মাহাতো সদর)।
তা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়ায়।
সূত্রের খবর, বুধবার মুখ্যমন্ত্রী নেপালবাবুকে বিধানসভায় নিজের অফিসে ডেকে এ নিয়ে কথাও বলেন। তার পরেই এ দিন বিধানসভায় তিনি জানান, মেডিক্যাল কলেজ দেবেন মাহাতোর নামেই করা হচ্ছে। নেপালবাবু বলেন, ‘‘এই হাসপাতালের নাম বদলানোর বিষয়টি আমার নজরে অনেকেই এনেছিলেন। তাঁরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন বলে জানিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলাম, হাসপাতালের নাম কি বদলে দেওয়া হয়েছে? পাল্টাচ্ছে না শুনে আশ্বস্ত হলাম।’’
জেলার ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করা মানুষজনের কাছ থেকে জানা গিয়েছে, স্বাধীনতার আগে, ব্রিটিশ আমলে এই হাসপাতালটি গড়ে ওঠে। নন্দলাল সিংহ নামে পুরুলিয়ার এক বাসিন্দা হাসপাতাল গড়তে জমি দান করেছিলেন। পঞ্চকোটের তৎকালীন মহারাজ জ্যোতিপ্রসাদ সিংহ দেও এই হাসপাতাল তৈরি করার জন্য এক লক্ষ টাকা দান করেছিলেন বলে জেলার ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করা কয়েক জন জানাচ্ছেন।
পঞ্চকোট রাজবংশের উত্তরসূরী বিপি সিংহ দেও বলেন, ‘‘যে সময় এই হাসপাতাল গড়ে ওঠে, তখন পুরুলিয়া ছিল বিহারের মানভূমের মধ্যে। এই হাসপাতাল গড়তে সে সময় বিহার সরকারের বরাদ্দ ছিল খুবই কম।’’ তিনি জানাচ্ছেন, সেই সময়ে অন্তর্বিভাগের নাম ছিল, মহারাজা জ্যোতিপ্রসাদ সিংহ দেও ইন্ডোর হাসপাতাল। বহির্বিভাগের নাম ছিল নন্দলাল চ্যারিটেবল ডিস্পেন্সারি।
নেপালবাবু জানান, ১৯৭৫ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি এই হাসপাতালে তাঁর বাবার (দেবেন মাহাতো) মৃত্যু হয়। তার পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন রাজ্য সরকার এই হাসপাতালের নামকরণ করেন দেবেনবাবুর নামে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy