Advertisement
১১ মে ২০২৪

রোজই ভোজ, তৈরি পুরুলিয়া

শাকান্ন মানে শাক-ভাত? মোটেও না! সুকুমার রায় তো বলেছেনই— ‘জলযোগে জল খাওয়া শুধু জল নয় তা’। শাকান্নতেও তেমন থাকছে লক্ষ্মীভোগ, শাক-গন্ধরাজ লেবু, কুমড়ি, বড়ি-আলু-পটল-বেগুন ভাজা, সোনামুগের ডাল, হিংয়ের কচুরি, ফুলকপির সব্জি, লাউপোস্ত, মুরগির মাংস, মাছের ঝাল, রাজভোগ, দই, পাঁপড়, চাটনি আর পান।

প্রশান্ত পাল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৪৬
Share: Save:

‘ময়রা ও পাচকের যত কিছু সৃষ্টি’ চেখে দেখার সময় এসে গিয়েছে। চার দিনের পেটপুজোর আয়োজন নিয়ে তৈরি পুরুলিয়া। শহরের ইস্ট লেক রোডের একটি রেস্তরাঁ তো দিনের ভোজের এক একটা নামও রেখেছে। সপ্তমীতে শাকান্ন। অষ্টমীতে মহাভোগ। নবমীতে মহাভোজ। আর দশমীতে ভুরিভোজ।

শাকান্ন মানে শাক-ভাত? মোটেও না! সুকুমার রায় তো বলেছেনই— ‘জলযোগে জল খাওয়া শুধু জল নয় তা’। শাকান্নতেও তেমন থাকছে লক্ষ্মীভোগ, শাক-গন্ধরাজ লেবু, কুমড়ি, বড়ি-আলু-পটল-বেগুন ভাজা, সোনামুগের ডাল, হিংয়ের কচুরি, ফুলকপির সব্জি, লাউপোস্ত, মুরগির মাংস, মাছের ঝাল, রাজভোগ, দই, পাঁপড়, চাটনি আর পান।

মহাভোগের মূল আকর্ষণ কড়াইশুঁটির কচুরি, শুক্তো, আলু-ঝিঙে পোস্ত, পনির, মিষ্টি ইত্যাদি। মহাভোজে রাধাবল্লভি, কচুর লতি, পঞ্চরস, কচি পাঁঠা বা মুরগির মাংস, চিতলের মুইঠ্যা। শেষ পাতে গোলাপজাম, দই, পান। পুরভরা কচুরি, কাঁচকলার কোপ্তা, মোচার ঘন্ট, ঠাকুরবাড়ির মাংস (মুরগি), ইলিশের বাটনায় দশমির ভুরিভোজ। ওই রেস্তরাঁর কর্ণধার রোহিত লাটা জানাচ্ছেন, পরিবেশন হবে মাটির পাত্রে। দাম সাড়ে চারশো থেকে ছ’শো টাকার মধ্যে।

শহরের কুকস কম্পাউন্ড সর্বজনীনের এ বার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষ। মণ্ডপের কাছে পুজোর চার দিনই দুপুর আর রাতের খাওয়ার আয়োজন নিয়ে বসছে একটি সংস্থা। সপ্তমীর দুপুরে আলুভাজা, ভাত, মুগের ডাল, ধোকার-ডালনা, তরকারি, মাছ। রাতে পোলাও, চিকেন কষা, পনির মশালা। অষ্টমীর দুপুরে রাধাবল্লভি, ছোলার ডাল, পনির বাটার মশালা। রাতে মশালা কুলচা, কাশ্মীরী আলুরদম। নবমীতে খাসির মাংস। মাছের থালি। রাতে ফ্রায়েড রাইস, চিলি চিকেন, চিলি পনির। দশমীতে ভাপা ইলিশ বা পমফ্রেট বা খাসির মাংস। রাতে লুচি, চিকেন দোপিঁয়াজি। আয়োজকদের পক্ষ থেকে আনন্দ দত্ত জানাচ্ছেন দাম রাখা হচ্ছে ৮৫ থেকে ১৮০ টাকার মধ্যে। তবে বসে খাবার বন্দোবস্ত নেই। বুকিং করলে থালি মিলবে।

দেশবন্ধু রোড মলে দক্ষিণ ভারতীয় একটি রেস্তরাঁও উৎসবের মরসুমে সাবেক বাঙালি আর উত্তর ভারতীয় খাবার নিয়ে হাজির। রেস্তরাঁর পক্ষ থেকে অর্ণব মুখোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, চার দিনই নিরামিষ। সপ্তমীতে পোলাও, কড়াইশুঁটি দিয়ে মুগের ডাল, ধোকার ডালনা, আলু-পটলের রসা, রাধাবল্লভি, বেগুন বাসন্তী। উত্তর ভারতীয় থালিতে শাহি বিরিয়ানি, কুলচা, ডাল মাখানি, পনির টকাটক। অষ্টমীতে কান্কা রাইস, আলুর দম, পাঁচমিশেলি সব্জি দিয়ে ডাল, নানপুরি ইত্যাদি। উত্তর ভারতীয় থালিতে ভেজ বিরিয়ানি, বেবি নান, ডাল বাটারফ্রাই, কড়াই পনির। অর্ণববাবু জানাচ্ছেন, খরচ কমবেশি চারশো টাকা।

ঠাকুর দেখে শহরের ভিড় কাটিয়ে রাঁচী রোড ধরে এগোলে চাকড়ায় রয়েছে একটি গার্ডেন রেস্তরাঁ। সেটির মালিক সৌগত দাস জানাচ্ছেন, দুপুরে মিলবে ঝুরি আলুভাজা, বাঁশকাঠি চালের ভাত, সোনামুগের ডাল, ফুলকপি-আলু-কড়াইশুঁটির তরকারি, ধোকার ডালমাটিয়া, আলুপোস্ত, চিকেন কষা, মাছের কালিয়া। রাতে দইবড়া, জয়পুরি আলুরদম, ডাল মাখানি ইত্যাদি। সঙ্গে থাকছে কেশর জিলিপির মতো মিষ্টিমুখের আয়োজন।

পুরুলিয়ায় ঠাকুর দেখা মানে নিতুড়িয়া ঢুঁ মারতেই হবে। সরবড়ি মোড় ঘিরে একাধিক বড় ঠাকুর দেখার। সেখান থেকে পারবেলিয়ায় নেতাজি সেতু রোডের ধারে একটি রেস্তরাঁ। কর্ণধার সুরজ বিশ্বকর্মা জানান, বিরিয়ানি বা থালি তো থাকছেই, আর থাকছে নানা ধরনের কাবাব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durga Puja Durga Puja 2018 Food
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE