Advertisement
E-Paper

এই কটাক্ষ সুস্থ বোধের পরিচয় দিচ্ছে কি?

প্রশ্ন হল, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী সুন্দর, নাকি অসুন্দর, তা বিচার করার ভার বিনোদ নারায়ণ ঝা-কে কে দিলেন? সুন্দর বা অসুন্দর হিসেবে কাউকে চিহ্নিত করার মাপকাঠিটা ঠিক কী?

অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০০:২০
—ছবি রয়টার্স।

—ছবি রয়টার্স।

রুচির এতটা অবনতি মেনে নেওয়া কঠিন। সক্রিয় রাজনীতিতে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর অভিষেকের কথা ঘোষিত হতেই প্রতিপক্ষ শিবির থেকে যে সব মন্তব্য উড়ে যেতে শুরু করেছে তাঁর দিকে, সে সবের অনেকগুলোই সুস্থ রাজনৈতিক রুচির বাইরে। রাজনৈতিক গভীরতার কথা ছেড়েই দিলাম, সামাজিকতার শিক্ষাটুকু যাঁর মধ্যে উপযুক্ত পরিমাণে রয়েছে, তিনি কখনও প্রিয়ঙ্কা সম্পর্কে ওই সব মন্তব্য করতে পারবেন না।

প্রথমে আপত্তিকর কটাক্ষ শোনা গিয়েছিল বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা সুশীল মোদীর কণ্ঠে। এ বার সেই তালিকায় জুড়ল বিহারের আর এক মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা বিনোদ নারায়ণ ঝা-এর নাম। প্রিয়ঙ্কার ‘সৌন্দর্যের’ বিচার করেছেন বিনোদ। প্রিয়ঙ্কার রাজনৈতিক প্রজ্ঞাও মাপার চেষ্টা করেছেন। শেষমেশ বিনোদের সিদ্ধান্ত এই যে, সৌন্দর্যকে হাতিয়ার করে রাজনীতিতে সফল হতে প্রিয়ঙ্কা পারবেন না।

প্রশ্ন হল, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী সুন্দর, নাকি অসুন্দর, তা বিচার করার ভার বিনোদ নারায়ণ ঝা-কে কে দিলেন? সুন্দর বা অসুন্দর হিসেবে কাউকে চিহ্নিত করার মাপকাঠিটা ঠিক কী? বিনোদ নারায়ণ ঝায়ের মন্তব্য অনুযায়ী প্রিয়ঙ্কা গাঁধীকে সুন্দরী হিসেবে যদি ধরেও নিই, তা হলে অসুন্দর হিসেবে কাদের চিহ্নিত করব? বিনোদ নারায়ণ ঝা এই বিষয়ে কি আমাদের সাহায্য করবেন? কোন কোন রাজনীতিককে দেখে তাঁর সুন্দর মনে হয় না, সেগুলোও কি জানাবেন?

সম্পাদক অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা আপনার ইনবক্সে পেতে চান? সাবস্ক্রাইব করতে ক্লিক করুন

আরও পড়ুন: ‘সুন্দরী, কিন্তু রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই’! প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য বিহারের আরও এক মন্ত্রীর

রাজনীতির সঙ্গে কারও দৈহিক বা শারীরিক সৌন্দর্যের কোনও সম্পর্ক নেই। সৌন্দর্য বা অসৌন্দর্যের প্রশ্ন সম্পূর্ণ অবান্তর অতএব। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী সুন্দর কিনা, সেই প্রসঙ্গটা উত্থাপন করাই অসুস্থ রুচির পরিচয়। এইটুকু বোঝার জন্য পোড় খাওয়া রাজনীতিক হওয়ার দরকার পড়ে না, সুস্থ সামাজিকতার বোধটা থাকলেই হয়। সেই বোধটা সম্ভবত বিনোদ নারায়ণ ঝায়ের নেই।

রাজনীতিতে প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর অভিষেকের কথা ঘোষিত হতেই যে ভাবে কটাক্ষ এবং শ্লেষ ছুড়ে দেওয়া শুরু হয়েছে, তা ভারতীয় রাজনীতির অন্তরের শিক্ষার সঙ্গে মানানসই নয়। কোনও এক নাগরিক সদ্য রাজনীতিতে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নিলেন। এখন তো তাঁকে ময়দানে স্বাগত জানানোটাই দস্তুর। কিন্তু সে কথা যেন মাথাতেই আসছে না প্রিয়ঙ্কা গাঁধীর প্রতিপক্ষ শিবিরে থাকা কারও। নবাগতাকে স্বাগত না জানিয়ে শুরু থেকেই বিঁধতে শুরু করা রাজনৈতিক বীরত্বের পরিচায়ক নয়। নিজের রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দেওয়ার সুযোগ প্রিয়ঙ্কা গাঁধী এখনও কি পেয়েছেন? রাজনৈতিক মেধা বা প্রজ্ঞা যদি না থেকে থাকে প্রিয়ঙ্কার তা হলে তার প্রমাণ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই মিলবে। তখন কটাক্ষ করার এবং আক্রমণ করার অবকাশও যথেষ্টই মিলবে। তার জন্য অপেক্ষা না করে মাঠে নামার আগেই নবাগতার বিরোধিতা কেন? এই বিরোধিতায় রাজনৈতিক অপরিপক্কতা স্পষ্ট হচ্ছে না কি?

Newsletter Bihar Priyanka Gandhi BJP Anjan Bandyopadhyay অঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় Congress Priyanka Vadra
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy