Advertisement
১৭ মে ২০২৪
সুমনী ঝোড়িয়া ও তার সাথিদের সঙ্গে, ত্রিশ বছর পরে

এই কি ওদের প্রাপ্য ছিল?

১৯৭৮ সালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অগ্রগামী যখন এ অঞ্চলে কাজ করতে আরম্ভ করে, তখন বিডিওর জিপ ছিল না, ছিল হাতি। অসংখ্য পাহাড়ের ঢেউ আকাশে লিপ্ত হয়ে আছে। মিশ্র পর্ণমোচী জঙ্গলের ঘনসন্নিবদ্ধ বিস্তার, মাঝেমধ্যে পাহাড়ের ধাপে ধানের চাষ, উপত্যকার সবুজ পিঙ্গল বিপুলতা মনে সম্ভ্রম ও হর্ষ জাগায়।

অনিতা অগ্নিহোত্রী
শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৯ ০০:২১
Share: Save:

রায়গড়া জেলা সদর থেকে যখন বার হলাম, তখন বিকেল ফুরিয়ে সন্ধের ছায়া নামছে। কাশীপুর যাব। ৭৫ কিলোমিটার পথ। চওড়া মসৃণ রাজপথ দেখে বোঝা যায় না এক দিন কাশীপুর ছিল কোরাপুট জেলারও দুর্গমতম অঞ্চল। দুস্তর অরণ্য পর্বত, মহামারির মতো ম্যালেরিয়া, কাঁচা রাস্তা।

১৯৭৮ সালে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অগ্রগামী যখন এ অঞ্চলে কাজ করতে আরম্ভ করে, তখন বিডিওর জিপ ছিল না, ছিল হাতি। অসংখ্য পাহাড়ের ঢেউ আকাশে লিপ্ত হয়ে আছে। মিশ্র পর্ণমোচী জঙ্গলের ঘনসন্নিবদ্ধ বিস্তার, মাঝেমধ্যে পাহাড়ের ধাপে ধানের চাষ, উপত্যকার সবুজ পিঙ্গল বিপুলতা মনে সম্ভ্রম ও হর্ষ জাগায়। কত যে রং ফাল্গুনের এই বেলাশেষে। শালের বন ধূসর সাদা নতুন মঞ্জরিতে, বাঁশঝাড়ের কচিসবুজের পাশে বউলে উন্মনা আমের বন, রাঙা পাতায় সেজে আছে কুসুম গাছ। একটু পরেই শুক্লা চতুর্থীর লঘু বাঁকা চাঁদ উঠে আসবে বনের মাথায়। বাতাসে আম্রমুকুল ও মহুয়ার মদির গন্ধ।

ত্রিশ বছর আগে যখন এসেছিলাম, সুমনী (ছবিতে, বাঁ দিকে) ও তার সঙ্গী মান্ডিবিসি গ্রামের মেয়েরা প্রাণপণ লড়ছে আদিবাসী বিকাশ সংগঠনের ঠিকেদারদের সঙ্গে। বনজ সম্পদ সংগ্রহের অধিকার সরকার আদিবাসী মেয়েদের দেয়নি, দিয়েছে জঙ্গল নিগম মারফত ঠিকেদারদের। নদীর ধার থেকে চতরণ ঘাসের বোঝা তুলে ফুলঝাড়ু বানিয়ে বাজারে বিক্রি করে মেয়েদের সংগঠন, ঠিকেদের সঙ্গে পুলিশ আর জঙ্গল বিভাগের স্টাফ জুটেছে তাদের বাধা দিতে। লড়তে লড়তে মেয়েদের নেত্রী হয়ে উঠেছে সুমনী। ডিএম তার সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ঘুরে এসেছে রোম, ফিলিপিন্স।

অনেক কিছু বদলেছে ত্রিশ বছরে। গ্রাম ও জেলা স্তরে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া আরম্ভ হয়েছে সংবিধান সংশোধন করে। অর্থনৈতিক উদারীকরণ হয়েছে। বড় রাজ্য, জেলা ভেঙে ছোট হয়েছে। দেশের বৃহত্তম জেলা কোরাপুট ভাগ হয়েছে চারটি জেলায়। রায়গড়া তাদের একটি। বৈদ্যুতিন সংযোগ ছড়িয়েছে। অরণ্য অধিকার আইন পাশ হয়েছে। তবু, অন্ধকারে অরণ্য পাহাড়ের শীতলতা গায়ে জড়িয়ে যখন অগ্রগামীর আঙিনায় পৌঁছলাম, প্রাচীন আম, শিমুল, কৃষ্ণচূড়া গাছগুলি ত্রিশ বছর আগেকার বিদ্যুৎবিহীনতার স্মৃতি উদ্বেলিত করে স্বাগত জানাল।

সুমনী এল পরের দিন সকালে। কানে, নাকের মাঝে পিত্তল গয়না, পরনে হাতে-নীল-রং-করা শাড়ি, বয়স বেড়েছে, জরা আচ্ছন্ন করেনি। আমাকে নিয়ে সে চলল মইকঞ্চ। দু’দশক আগে অবিভক্ত কোরাপুট জেলার এ গ্রামে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন এক আদিবাসী মহিলা-সহ তিন জন। বেশ কয়েক জন গুরুতর আহত। স্থানীয় নেতার প্ররোচনায়, পুলিশ গুলি চালায় নিরস্ত্র মানুষের উপর। নিয়মগিরি ও সন্নিহিত পূর্বঘাট পর্বতশ্রেণি, যা রায়গড়া জেলার মধ্যে শিরা উপশিরার মতো, তার বহু পাহাড়ই উপর থেকে নীচে বক্সাইটে ঠাসা। নিয়মগিরির বেশ ক’বছর আগে বাফলিমালী পাহাড়ের খনিজ সম্পদের উপর চোখ পড়ে বহুজাতিক অ্যালুমিনিয়ম কোম্পানির। জমি, পাহাড় আমাদের চির দিনের বাসভূমি, আমরা জমি ছাড়ব না— এই দাবিতে পাহাড়ের পাদদেশে মইকঞ্চ, কুচেই পদর ও সন্নিহিত গ্রামগুলিতে আরম্ভ হয় জন আন্দোলন। আদিবাসীবহুল কোরাপুটে বিশ্বায়নের পদসঞ্চার আরম্ভ হতেই মানুষের সঙ্গে সংযোগের ভাষা ভুলে গেল প্রশাসন, জনপ্রতিনিধিরা। গুলি যারা চালিয়েছিল তাদের উপর কোনও আইনি ব্যবস্থা হয়নি, কয়েক জনের রুটিন বদলি ছাড়া। কিন্তু সচেতনতা বৃদ্ধির নামে আদিবাসীদের প্ররোচিত করার দায় এসে পড়ে অগ্রগামীর উপর। এফআইআর হয়, কেস চলে দীর্ঘ তেরো বছর। জমি অধিগ্রহণ, আদিবাসীদের উচ্ছেদ ঠেকানো যায়নি। অ্যালুমিনা প্লান্ট চলছে। সেই এক দশক ছিল পরিবেশ ও মানবাধিকারের উন্মীলনের কাল। গ্রামে গ্রামে মাওবাদীদের সঙ্গে সংযোগের অভিযোগে নিরীহ মানুষের অপহরণ ও গ্রেফতার চলেছে। কোম্পানির বেতনভোগী দালালরা আন্দোলনের কর্মকর্তাদের, মিটিংয়ের আগাম খবর পৌঁছে দিয়েছে পুলিশকে। রাষ্ট্র অনুমোদিত সন্ত্রাস।

বাসগৃহ, কৃষিজমি থেকে উচ্ছিন্ন আদিবাসীরা পাহাড়তলিতে টিন-ছাওয়া কলোনিতে গিয়ে উঠেছে। কিন্তু যাদের জমি যায়নি তাদের অবস্থাও শোচনীয়। বক্সাইট খনি থেকে তোলা মাটি পাহাড়ের পায়ের কাছে খেতের উপর পড়ে তিন-চার ফুট পুরু স্তর তৈরি হয়েছে। এ বর্জ্য মাটি কোম্পানি তোলেনি, কথা দিয়েও। খনি থেকে ক্রমাগত বেরোতে থাকা ধুলো-ধোঁয়ায় নষ্ট হচ্ছে জল, শ্বাসবায়ু দূষিত হচ্ছে। আন্দোলনের নেতা দইতারী বললেন, এই সব কারণেই আমরা কোম্পানির বিরোধ করেছিলাম, কেউ শোনেনি। টাকা দিয়ে মানুষকে ভাগ করে আন্দোলনের কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। বেশ কিছু গ্রামে প্রচুর টাকায় চুপ করানো হয়েছে আদিবাসী নেতাদের। সাড়ে তিনশো লোকের কর্মসংস্থান হয়েছে, তাদের প্রায় সকলেই বহিরাগত। কিছু দ্বাররক্ষী, দিনমজুরির কাজ ছাড়া স্থানীয় আদিবাসী কিছু পায়নি। কারণ তাদের কারিগরি শিক্ষা, ট্রেনিং কিছুই নেই। অন্য দিকে, কোম্পানির সঙ্গে প্রশাসন ও সরকারের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। তাদের সুখসুবিধেই সরকারের ধ্যানজ্ঞান, আমরা সব নষ্টের গোড়া। কোম্পানির দেওয়া গাড়িতে জেলাশাসকের চলাফেরা, তাদের দুর্গাপুজোর উদ্বোধনে জেলাশাসক আসেন। এ সবে যে নিরপেক্ষতার দৃষ্টান্ত তৈরি হয় না, তরুণ প্রশাসকরা কি বোঝেন না?

খনিজ সম্পদ, কারখানা দরকার। অস্বীকার করতে চান না আদিবাসীও। তা বলে নির্দিষ্ট আইনের অনুশাসন মানা হবে না? অরণ্য অধিকার আইনে গ্রামসভার অনুমোদন ছাড়া জমির অন্য ব্যবহার সম্ভব নয়। নিয়মগিরিতে ডোঙ্গরিয়া কন্ধ আদিবাসীদের ঐক্যের ফলে বক্সাইট খনির জন্য জমি অধিগ্রহণ হয়নি। কিন্তু রায়গড়া বস্তারের অন্য আদিবাসী অঞ্চলে গ্রাম থেকে লোককে তুলে এনে জেলা সদরে তৈরি করা কাগজে সই করানোর অভিযোগ আছে। দরিদ্র মানুষকে ভেঙে টুকরো করতে কেসে জড়ানোর ভয়, উগ্রপন্থী সন্দেহে গ্রেফতারের ভয়, অর্থের প্রলোভন— নানা কলাকৌশল নির্মাণে শিল্পগোষ্ঠীর বুদ্ধিদাতা হয়ে ওঠে প্রশাসন। বক্সাইট বয়ে নেওয়ার জন্য কনভেয়র বেল্ট চলেছে পাহাড় থেকে পাহাড়ে। কারখানার মালিকদের সঙ্গে মানুষের দূরত্ব ঘুচেনি। সামাজিক ব্যয়ের টাকা সেই সব গ্রামে আসে না যেখানে মানুষ বশ মানেনি।

দু’দশক হল ঝোড়িয়া আদিবাসীদের কার্যত বার করে দেওয়া হয়েছে তফসিলি আদিবাসী নামের সূচি থেকে। তারা আদিবাসী হিসেবে না পাচ্ছে সার্টিফিকেট, না পাচ্ছে আশ্রম স্কুলে ভর্তির সুবিধে। সবাই জানে, ঝোড়িয়ারা পরজা আদিবাসীর উপগোষ্ঠী। নৃতাত্ত্বিক দস্তাবেজেও তার প্রমাণ আছে। স্বাধীনতার পর রাষ্ট্রপতি অনুমোদিত আদিবাসীদের নামের সূচি থেকে ঝোড়িয়ারা বাদ পড়েছিল, কিন্তু রাজ্য স্তরে সংরক্ষণ পেতে তাদের এত দিন অসুবিধে হয়নি। অ্যালুমিনা শিল্পের সঙ্গে সংঘাতের মূলে যাদের বিশেষ ভূমিকা ছিল, সেই ঝোড়িয়াদের উপর আক্রমণ নেমে আসে এর পরেই। এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করা হচ্ছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের, কিন্তু ঝোড়িয়াদের সন্দেহ, পিছনে কলকাঠি নাড়ছে অ্যালুমিনা গোষ্ঠী। কুটরামালী আর সাসবহুমালী পর্বতে বক্সাইট পাওয়া গিয়েছে, খনন আরম্ভ হবে। এ সব এলাকায় ঝোড়িয়া শবরদের জমিই বেশি। আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর করা যায় না অ-আদিবাসীদের। কিন্তু যদি ঝোড়িয়ারা আদিবাসী হিসেবে গণ্যই না হয়, তবে শিল্পের জন্য জমির ব্যাপারটা সহজ হয়ে যায়। ঝোড়িয়া-সহ কয়েকটি আদিবাসী গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্তি প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে পড়ে আছে কয়েক বছর। এদের ছেলেমেয়েরা হস্টেল ও ছাত্রবৃত্তিতে বঞ্চিত, এ স্কুল ও স্কুল ঘুরছে।

মইকঞ্চে সুমনী তার সখীর ঘরের দাওয়ায় বসে মান্ডিয়া জাউ খেতে খেতে বলছিল, আমার নাম ঝোড়িয়া। সরকারের হিসেবে আমি আদিবাসী নই। আবার আমার ছেলে পরজা। সে আদিবাসী। ‘নীতি’র প্রয়োগে সাধারণ জ্ঞান অন্তর্হিত হলে যা হয়।

বিকেলে গেলাম মান্ডিবিসি গ্রামে, যেখানে মহিলা সংগঠন কাজ করছে তিন দশক হল। অরণ্য অধিকার আইন পাশ হওয়ার পর তাদের চতরণ ঘাস সংগ্রহের কাজ সহজ হয়েছে। কিছু পাইকারি ব্যবসায়ী পড়শি রাজ্য থেকে এসে ভাল দামে কিনে নিয়ে যাচ্ছিল ফুলঝাড়ু। লাভ থাকছিল মেয়েদের হাতে। দু’বছর আগে নোটবন্দি এসে বন্ধ করে দিয়েছে পুরোপুরি নগদনির্ভর এই ব্যবসার চাকা। পাইকাররা আসে না। পুরনো ঝাড়ুর স্টক গাদা হয়ে পড়ে আছে সংগঠনের গুদামে। মেয়েরা মোবাইলের আলো জ্বেলে দেখাচ্ছিল। পনেরো ষোলো লাখ টাকার মাল ডুবে আছে, মেয়েদের রক্ত জল করা টাকা। নোটবন্দির প্রভাব নিয়ে কোনও শ্বেতপত্র প্রকাশ পেলে এই কথাগুলি উঠে আসত নিশ্চয়ই।

অসময়ে মেঘ ঘনিয়ে এল মান্ডিবিসি গ্রামের মাথায়। তার পর ঝমঝম বৃষ্টি। আশপাশের পাড়া বা শাহী থেকে ঘর ও বাইরের কাজ সেরে এসেছে মেয়েরা। পা ছড়িয়ে বসেছে মঙ্গল দেই, শুক্রী, কুচাই দেই, রূপা দেই, সালপেই মাঝি। রান্না বলতে ভাত, সপ্তাহে দু’দিন কান্দুল বা স্থানীয় ডাল, খিড়কি বাগানের পেঁপে বা কুমড়ো, শাক। মাসে এক দিন কুঁকড়ো। মাছ খাও না কেন? সুমনী তার গ্রামে ছোট জালে মাছ ধরে, মান্ডিবিসির মেয়েরা জানে না। ওসাদানি নদীতে বড় জালে মাছ ধরে বিক্রি হয়। মাঝে কারা যেন বিষ শেকড় দিয়ে মাছ মেরেছিল, মাছ মরে ভেসে উঠেছিল ওপরে। এমন করা ঠিক হয়নি, সে মাছ খায়ওনি ওরা। মেয়েদের স্বয়ং সহায়ক দল গত পাঁচ বছর স্কুলে মিড ডে মিল বানানোর কাজ পেয়েছিল। সে কাজও এখন নেই। মেয়েদের ধারণা, ওরা ঘুষ দিতে পারেনি তাই। নাও হতে পারে তা। তবে কোনও রোজগার না থাকা, তার সঙ্গে জমে ওঠা ঝাড়ুর স্টক ওদের মন ভেঙে দিয়েছে। অনাহার নেই, আগের মতো ছাতা লাগা আমের আঁটি খেয়ে মানুষ মরে না, তবু আদিবাসীদের সব বয়সেই অপুষ্টির সমস্যা জুড়ে আছে। শিশু অভুক্ত স্কুলে আসে, মেয়েপুরুষ খালি পেটে চাষের জমিতে যায়।

হ্যাঁ, খুব লড়ে ওরা মদের ভাটিগুলি বন্ধ করতে পেরেছে। দু’টি গ্রামসভা সিদ্ধান্ত নিয়ে ভাটি বন্ধ করে। অথচ, পঞ্চায়েত সেক্রেটারি সে বিজ্ঞপ্তি লুকিয়ে রেখে দেয় লাইসেন্স নবীকরণের দিন পর্যন্ত। জেলাশাসকের অফিসে একশো মেয়ে দিনের পর দিন ধর্না দেয়। তবু চলতে থাকে বেআইনি ভাটি। পুরুষেরা গায়ের জামা বাঁধা দিয়ে মদ খেত। বাড়ি এসে ঝগড়া মারধর। শেষে অন্য পথ না দেখে মেয়েরা ভাটির উনুন, বাসনকোসন ভেঙে দেয়। নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। সত্তর জন মেয়ের উপর কেস হয় ভাটি মালিকের নালিশে। জঙ্গলে পালিয়ে বসে থাকত মেয়েরা দিনের পর দিন। শেষ পর্যন্ত জিতেছে ওরা। কিন্তু দীর্ঘ, অনাবশ্যক লড়াইয়ের পতন-অভ্যুদয়-বন্ধুর পন্থা, এই কি ওদের প্রাপ্য ছিল?

অর্থ আছে, বল আছে প্রশাসনের। অথচ কোথাও যেন তাদের কানে পৌঁছবার আগে রয়ে যায় সুমনীদের কণ্ঠস্বর। অন্ধকারের লিপি পড়ার ক্ষমতা লুপ্ত হয়ে গিয়েছে অগ্রগতির ডিস্কো আলোর ছটায়। চার পাঁচ দিন আগে, কালাহান্ডির লাঞ্জিগড়ে অ্যালুমিনা প্ল্যান্টের দরজায় সুরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মারা গিয়েছেন দু’জন। এক জন সুরক্ষাকর্মী, অন্য জন ঠিকাকর্মী। স্থানীয়দের কাজ দেওয়ার দাবিতে ধর্না ছিল। কোম্পানি বলছে বহিরাগতদের অন্যায্য দাবির কথা। তদন্ত চলছে।

কিন্তু আগে থেকে বিক্ষোভের তীব্রতা আঁচ না করতে পারার পিছনে কোথাও যেন লুকিয়ে বসে আছে শোনার অক্ষমতা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Aluminium Factory Dongria KOndh Buxit Niyamgiri
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE