Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সম্পাদক সমীপেষু

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অষ্টম শ্রেণির দ্রুত পঠনে রবীন্দ্রোত্তর তিন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম এক বন্দ্যোপাধ্যায় বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালী’-র কিশোর উপযোগী ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ পাঠ্যভুক্ত করেছে।

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৭ ০০:৪৯
Share: Save:

ভুল অপু, দোষ কার?

পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ অষ্টম শ্রেণির দ্রুত পঠনে রবীন্দ্রোত্তর তিন বন্দ্যোপাধ্যায়ের অন্যতম এক বন্দ্যোপাধ্যায় বিভূতিভূষণের ‘পথের পাঁচালী’-র কিশোর উপযোগী ‘ছোটোদের পথের পাঁচালী’ পাঠ্যভুক্ত করেছে। ভূমিকায় প্রশাসক কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায় এটিকে ‘কিশোর উপন্যাস’ বলেছেন। বলেছেন, ‘প্রখ্যাত লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই উপন্যাসে রয়েছে চিত্তাকর্ষক কল্পনা ও নৈসর্গিক সৌন্দর্যের চমকপ্রদ সম্ভার।’ (জুলাই, ২০১৪)

কিন্তু কল্পনা দানা বাঁধে না। ব্যাঘাত ঘটে যখন দেখি, ৭ম পরিচ্ছেদে প্রসন্ন গুরুমহাশয়ের ‘পাঠশালা বসিত বৈকালে। সবসুদ্ধ আট-দশটি ছেলেমেয়ে পড়িতে আাসে।’ (পৃঃ ৩৪)

মূল থেকে পরিবর্তনের উদ্দেশ্য মহান হলেও খটকা লেগেই থাকে। কারণ, তখন গ্রামের পাঠশালায় মেয়েদের লেখাপড়ার চল ছিল না। ৩২ পাতায় দেবব্রত ঘোষের অলংকরণে ছাত্র থাকলেও ছাত্রী নেই। উদ্দেশ্য সফল হল না। টেক্সটে উল্লিখিত আট-দশ জনের পরিবর্তে অপুকে নিয়ে ছয় জন ছাত্র শীতে গায়ের চাদর জড়িয়ে আছে। আর প্রসন্ন গুরুমশাই একটা ফতুয়া চাপিয়ে প্রায় খালি গায়ে ছাত্রদের নির্দেশদানের ভঙ্গিতে আছেন। পাঠদানকালে শ্রেণিকক্ষে দেখি সব ছাত্রছাত্রী বোকা নয়। তারা কেউ কেউ বাস্তব আর কল্পনা মেলাতে পারে না।

২২তম পরিচ্ছেদে দুর্গা মারা যাবে। সর্বজয়ার কাছে দুর্গার অবস্থার কথা শুনে প্রতিবেশী নীলমণি মুখুজ্জ্যেরা দেখতে এসেছে। চিত্রে দেখানো হয়েছে জ্বরের ঘোরে দুর্গা তখন পালং বা খাটে শুয়ে আছে। হরিহর গরিব, এমন খাট কোথায় পেল? চিত্রে দুর্গাকে মেঝেয় শোয়ালে নৈসর্গিক সৌন্দর্যের ব্যাঘাত ঘটত না। আশা করব আগামী প্রকাশে বিশেষজ্ঞ কমিটি এবং প্রকাশক অধ্যাপক নবনীতা চট্টোপাধ্যায় (সচিব, পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ) বিষয়টির দিকে নজর দেবেন।

রমজান আলি

বর্ধমান

বেহাল গ্রামস্বাস্থ্য

গ্রামের নার্সিংহোমগুলির অধিকাংশেই সব সময়ের জন্য কোনও আরএমও নেই। এগুলো চলে অনেকটা পলিক্লিনিকের ধাঁচে। চেম্বারে চিকিৎসকরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য বসেন, রোগী দেখেন, তাঁর অধীনে কোনও রোগী ভর্তি থাকলে তাঁকে দেখেন, তার পরে আর কোনও চিকিৎসক থাকেন না।

এ সব নার্সিংহোমগুলোতে বেশির ভাগ সাধারণ চিকিৎসকরাই বিভিন্ন বিশেষজ্ঞ হিসেবে (সার্জারি, স্ত্রীরোগ ইত্যাদি) কাজ করে থাকেন। ‘ইমার্জেন্সি রোগী দেখা হয় না’ বলে বোর্ড থাকে। নার্সিংহোমের বিভিন্ন চার্জের জন্য প্রকাশ্যে কোনও বোর্ড থাকে না, যেটা থাকা বাধ্যতামূলক।

বেশির ভাগ প্যাথলজিতেই কোনও প্যাথলজিস্ট থাকেন না। এক্স-রে কেন্দ্রগুলোতে কোনও রেডিয়োলজিস্ট থাকেন না। প্যাথলজিস্ট ও রেডিয়োলজিস্টরা ওই সংস্থার ছাপা প্যাডে চুক্তি ভিত্তিতে সই করে দেন। কোনও টেকনিশিয়ান পরীক্ষা করে আগে স্বাক্ষর করা প্যাডে রিপোর্ট লিখে দেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্যাথলজিতে রয়েছেন রক্তের নমুনা সংগ্রাহক, তাঁরা রোগীর বাড়িতে গিয়ে রক্ত সংগ্রহ করেন। ঠিক তাপমাত্রায় নমুনা রাখা হয় কি না, বাইরের রৌদ্রতাপে এক্সপোজড হয়ে কতটা ঠিক রেজাল্ট পাওয়া যায়— যথেষ্ট সন্দেহ আছে।

রাসমোহন দত্ত

মসলন্দপুর, উত্তর ২৪ পরগনা

বাঁকুড়ার বঞ্চনা

হাওড়া-বাঁকুড়া স্টেশনের দূরত্ব ২৩৫ কিমি হলেও ট্রেনের সংখ্যা খুবই কম| সকালে কলকাতা থেকে বাঁকুড়া আসতে তিনটি এক্সপ্রেস ট্রেন (রূপসী বাংলা, রাজ্যরানী ও আরণ্যক), কিন্তু হাওড়া স্টেশনে একটি ট্রেনেরও জায়গা দিতে পারেন না রেল আধিকারিকরা| ভোরে উঠে আসতে হবে শালিমার বা সাঁতরাগাছি| বিকেলে বাঁকুড়া থেকে কলকাতা ফেরার গল্পও একই, সাঁতরাগাছি বা শালিমারে নেমে আবার বাস ধরার ঝামেলা| তার ওপর ট্রেনগুলির সময়জ্ঞান বলে কিছুই নেই, সময়ে গন্তব্যে পৌঁছনোরও কোনও দায় আছে বলে মনে হয় না| শুধু বিকেলে হাওড়া থেকে বাঁকুড়ামুখী হাওড়া-পুরুলিয়া এক্সপ্রেস ট্রেনটি কিছুটা মন্দের ভাল|

অন্য দিকে প্রায় দশ বছর ধরে কাজ চলার পর শতাব্দী প্রাচীন বাঁকুড়া-দামোদর রেলওয়েজকে পুনরুজ্জীবিত করে হাওড়া-বর্ধমান কর্ড লাইনের সঙ্গে মশাগ্রাম স্টেশনে মেশানো হয়েছে। বাঁকুড়া-মশাগ্রাম এক জোড়া ট্রেন রোজ যাতায়াতও করে| কিন্তু ওই লাইন দিয়ে বাঁকুড়া-শিয়ালদহ ট্রেন শুরু করার কোনও প্রচেষ্টা দেখি না| তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর লাইনের কাজের অবস্থা তো তথৈবচ|

লাইনগুলি চালু হলে বাঁকুড়া-পুরুলিয়ার মতো জেলাগুলি উপকৃত হয়| কারণ, এখন বাঁকুড়া থেকে ট্রেনে শিয়ালদহ যাবার কোনও উপায় নেই| লাইনগুলি চালু হলে কলকাতার সঙ্গে প্রায় ৭০ কিমি দূরত্ব কমবে বাঁকুড়া শহরের। হুগলি, বর্ধমান ইত্যাদি পার্শ্ববর্তী জেলাগুলির সঙ্গে রেল যোগাযোগ গড়ে উঠবে| জয়রামবাটি-কামারপুকুরও রেল মানচিত্রে উঠে আসবে| এক সময় বাঁকুড়া-মুকুটমণিপুর রেল যোগাযোগের যে উদ্যোগ শুরু হয়েছিল, মানুষ তাও ভুলতে বসেছেন| এটি সম্পূর্ণ হলে বাঁকুড়ার পর্যটন মানচিত্র বদলে যাবে|

এই দাবিগুলো সংসদে তুলে ধরার কাজ যাঁর, সেই মাননীয়া সাংসদ না আসেন নির্বাচনী এলাকায়, না তাঁকে সংসদে কোনও কথা বলতে দেখা যায়| সমাজের বিভিন্ন স্তরে বাঁকুড়ার কৃতী সন্তানরা যাঁরা আছেন এবং যাঁরা বাঁকুড়াকে ভালবাসেন, তাঁরা বাঁকুড়ার উপর এই বিমাতৃসুলভ আচরণের প্রতিবাদে এগিয়ে আসুন|

সৈকত রায়

বাঁকুড়া শহর

তবে নদী ফিরবে

গত তিন বছর আমি নিম্ন দামোদর অববাহিকার সেচ বিভাগে কর্মরত। গ্রামীণ এলাকায় ঘোরার সময় এখনও দেখা যায় জীবনানন্দের কবিতায় বর্ণিত গ্রামবাংলার সৌন্দর্য। পুকুরের টলটলে জল, নিষ্পাপ শিশুদের দাপাদাপি, বধূর ঘোমটা দেওয়া সলজ্জ পদচারণা, চাষিদের খেতে লাঙল দেওয়া, সূর্যাস্তের পর শাঁখের আওয়াজ, তুলসীতলার প্রদীপ, হৃদয়কে দূষণমুক্ত করে।

শান্তি চক্রবর্তী (‘দাও ফিরে নদী’, সম্পাদক সমীপেষু, ১৯-৪) কানানদীর সঙ্গিন অবস্থার যে বর্ণনা দিয়েছেন, তা সত্য। রাজ্য সরকারের অর্থাভাবে হুগলির বহু নদী ও খালের বহুকাল সংস্কার সম্ভব হয়নি। তবে, বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতায় রাজ্য সরকারের সেচ ও জলপথ দফতর কানানদী ও এই অঞ্চলের অন্যান্য নদী ও খালগুলির আমূল সংস্কারের পরিকল্পনা নিয়েছে, প্রাথমিক কাজকর্ম শুরু হয়েছে। পরিকল্পনা রূপায়িত হলে, আশা করি, শান্তিবাবুর শৈশবের কানানদীদের আবার ফিরে পাবেন।

সোমনাথ দেব

নির্বাহী বাস্তুকার, নিম্ন দামোদর সেচ বিভাগ, পশ্চিমবঙ্গ সরকার

লোগো বন্ধ হোক

গ্রামের ব্যাংকগুলিতে প্রচণ্ড ভিড়। পাসবই আপ-টু-ডেট করতে লাইনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়াতে হয়। এটিএম কাউন্টারে মিনি স্টেটমেন্ট অপশনের সাহায্যে শেষ ৮-৯টা ট্রানজ্যাকশনের রেকর্ড মেলে। কিন্তু স্লিপের মাঝখানে ব্যাংকের লোগো গাঢ় রঙে গভীর ভাবে ছাপা। এর উপর মিনি স্টেটমেন্টের প্রিন্ট প্রায় দেখা যায় না। প্রায়ই প্রিন্টারে পর্যাপ্ত কালি থাকে না। তখন লেখা বোঝা যায় না। স্লিপের মাঝখানে ব্যাংকের লোগো ছাপা বন্ধ হোক।

প্রভুদান হালদার

বাসন্তী, দক্ষিণ ২৪ পরগনা

চিঠিপত্র পাঠানোর ঠিকানা

সম্পাদক সমীপেষু,

৬ প্রফুল্ল সরকার স্ট্রিট,
কলকাতা-৭০০০০১।

ই-মেল: letters@abp.in

ভ্রম সংশোধন

‘অমর’-এর শেষযাত্রায় শামিল বলিউড (আনন্দ প্লাস ২৮-০৩) শীর্ষক খবরে বিনোদ খন্নার মেয়ে সাক্ষী বাবার মুখাগ্নি করেন লেখা হয়। সাক্ষী বিনোদের ছেলে। অনিচ্ছাকৃত এই ভুলের জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Pather Panchali
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE